ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ উৎসব শুভ বড়দিন পালন করা হয়েছে। বড়দিনকে কেন্দ্র করে অপরুপ সাজে সেজেছে উপজেলার প্রত্যেকটি খ্রিষ্টান পল্লী। .
এদিকে উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের পুখুরী কামারপাড়া ক্যাথলিক চার্জে প্রার্থনা পরিচালনা করেন পালক ফান্সিস মুর্মু। প্রার্থনা শেষে নারী-পুরুষ সমন্বয়ে বড়দিন উপলক্ষে নিজস্ব সংস্কৃতিতে বাদ্যবাজনা নিয়ে মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করেন যোতিন মার্ডী, রবেন হেমব্রম, মেরিনা হেমব্রম, বিটিয়া কিস্কু, বাসন্তি কিস্কু, বিবিয়ানা মার্ডী, ডলি কিস্কু, কাজলী মার্ডী, মনিকা হেমব্রম প্রমুখ। একইভাবে পুখুরী এসডিএ চার্চে খ্রিষ্ট ধর্মালম্বী নারী ও পুরুষ প্রার্থনায় অংশ নেন। .
জানা যায়, ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৫৮টি গির্জা ও চার্চে বড়দিনের প্রার্থনা ও আলোচনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বড়দিন উদযাপন করা হয়েছে। বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান পল্লীগুলোকে নানা রঙে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বাসাবাড়ী সাজানো হয়েছে নিজস্ব রংতুলির আচড়ে। সাধ্যমতো নতুন জামা কাপড় পড়েছেন পরিবারের সকলে। গ্রামে গ্রামে চলেছে উৎসবের আমেজ। এটি চলবে অন্তত সপ্তাহ জুড়ে এমনটি বলছেন খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা।.
ফুলবাড়ী উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের কুদবীর মিশনপাড়া গ্রামের গৃহবধূ রোজিনা টুডু (২৯), বাসুদেবপুর সূর্য্যপাড়ার (নৃ-গোষ্ঠীপাড়া) ফুলমনি হেম্ব্রম ও পুষ্প মার্ডী বলেন, বড়দিন উপলক্ষে আমাদের প্রত্যেকের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। সে কারণে সাধ্যমতো প্রত্যেক বাড়ীতে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা করা হয়েছে। আলপনা আঁকা হয়েছে বাড়ীর আঙিনা, দেয়ালসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রভু যিশু খ্রিস্ট বেথেলহামের যে গোশালায় জন্মেছিলেন, তার আদলে প্রায় প্রত্যেক বাড়ীতে গোশালা স্থাপন ও সেটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বড়দিনের আনন্দ ভাগ করে নিতে বিভিন্ন স্থান থেকে আত্মীয়-স্বজনরা বাড়ীতে এসেছেন। অতিথিদের জন্য পিঠাপুলি, পায়েশসহ বিভিন্ন খাবার তৈরি করা হয়েছে।.
কুদবীর চার্চ মিশনের সিস্টার প্রীতি গমেজ বলেন, ২৫ ডিসেম্বর যিশুখ্রিষ্ট জন্মলাভ করেন। এজন্য দিনটিকে শুভ বড়দিন হিসেবে খ্রিষ্টধর্মালবম্বীরা পালন করে থাকেন। বছরঘুরে বড়দিন আবহে পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখ সমৃদ্ধিতে জীবনযাপন করার স্বপ্নটাই ধরা দেয় সবার প্রার্থনায়। চার্চে প্রার্থনা এবং ধর্মসভা অনুষ্ঠিত হয়।.
ফুলবাড়ী উপজেলার ৩নং কাজিহাল ইউনিয়নের পারইল কুদবী ক্যাথলিক চার্চ মিশনের ইনচার্জ ফাদার জসিম ফিলিপ মুর্মু বলেন, সকাল সাড়ে ৯টায় গির্জায় বড়দিনের প্রার্থনা পরিচালনা করেছেন। শুভ বড়দিনের একটি প্রার্থনা করেন। আমাদের পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য এবং অন্তরের অন্ধকার দূর করে আলোর পথ দেখানোর বানী নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন প্রভু যিশু খ্রিষ্ট। জগতে শান্তি-ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং সবার মাঝে ভ্রাতৃত্ব মিলন বজায় রাখার আহবানে পালিত হচ্ছে শুভ বড়দিন। সকলকে শুভ বুদ্ধি দানের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে মানব প্রেমে উদ্বুদ্ধ করেন। বড়দিনের প্রার্থনায় দেশ ও জাতির সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধিসহ সকল মানবের কল্যাণ কামনা করা হয়েছে।.
অপরদিকে উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের রাঙামাটি ট্রিনিটি লুথারেন চার্চ ট্রাস্টের উদ্যোগে দিনব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালন করা হয়েছে শুভ বড় দিন।.
রাঙামাটি ট্রিনিটি লুথারেন চার্চ ট্রাস্টের পরিচালক বাবুলাল হাঁসদা মাস্টার বলেন, দেশ ও জাতির সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধিসহ পৃথিবীর সকল মানবের কল্যাণ কামনা করে সকালে প্রার্থনায় করা হয়েছে।. .
ডে-নাইট-নিউজ / প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
আপনার মতামত লিখুন: