হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় হাওর অঞ্চলে নির্মাণাধীন পাকা রাস্তার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন না করায় এবং সম্প্রতি বয়ে যাওয়া বন্যার পানিতে ভেঙ্গে যাওয়া রাস্তা ও কালভার্ট গুলো পুনঃসংস্কার না করায় চরম ভোগান্তির শিকার হাজারো প্রান্তিক কৃষক ও মৎস্যজীবীগণ।.
শত বছরের হাওর বাংলার কালের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে প্রতি বছরে উক্ত এলাকাটির কোন না কোন হাওরের কৃষকগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েই আসছেন। তবুও প্রকৃতির সাথে সংগ্রাম করে টিকে আছেন এ সকল কৃষক ও মৎস্যজীবীগণ। .
অসময়ে বন্যা, অতিখরা, শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত, কালবৈশাখী ঝড় আর ৬ মাস অথৈ পানির বিনাশী আফালের (ঢেউ) তাণ্ডবলীলার সাথে হাওরবাসীর যুদ্ধ যেন নিয়তির লিখন। হাওর অঞ্চলে বছরে ৬ মাস পানিতে ভাসমান আর ৬ মাস শুকনা থাকায়, প্রাকৃতিক নিয়মের ছকে বাঁধা হাওরবাসীর জীবনচক্র। .
প্রকৃতির বৈরিতায় একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ গ্রাস করে নিয়ে যায় হাওরের সোনার ফসল। জানা যায় ভাটিঅঞ্চলের রাজধানী খ্যাত আজমিরীগঞ্জ উপজেলার প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদ হচ্ছে মৎস্য এবং কৃষি।.
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- উপজেলাধীন সকল এলাকার হাওর থেকে প্রধান রাস্তা পর্যন্ত যোগাযোগ করার জন্য সকল হাওরে পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হলেও বেশ কয়েকটি হাওরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম জলসুখা- থেকে শিবপাশা ভায়া পশ্চিমবাগ পর্যন্ত রাস্তাটির নির্মান কাজ মাঝ হাওর পর্যন্ত এসে বন্ধ হয়ে আছে।.
মাঝ হাওর থেকে শিবপাশা গ্রাম পর্যন্ত রাস্তার ২ পাশে ইট গেঁথে রাখায় এবং রাস্থার মাঝ থেকে মাটি সরিয়ে ফেলার কারণে হাওরে যাতায়াত করতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় সকল কৃষকগনকে।.
উক্ত রাস্তাটি দিয়ে প্রতি বছরে জলসুখা, শিবপাশা, পশ্চিমভাগ এবং বিরাট গ্রামের কয়েক হাজার কৃষকের ফলানো ধান বাড়িতে আনতে হয় বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন কৃষক। এছাড়াও শিবপাশা থেকে কাকাইলছে ও পর্যন্ত হাওরের বুক ছিড়ে নির্মাণ করা পাকা রাস্তাটিতে বেশ কয়েকটি কাল ভার্ট ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে মাছ নিয়ে যাতায়াত করতে চরম ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে বেশ কয়েকটি হাওরের মৎস্যজীবীদেরকে। .
হাওর বাসির জীবন মান উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্মাণাধীন অসম্পন্ন পাকা রাস্থার কাজ চলতি মৌসুমের ফসল ঘরে তোলার সময় আসার আগে, হেমন্ত কালের মধ্যেই সম্পন্ন করে এবং ভাঙ্গা কালভার্ট গুলো সংস্কার করে চলাচল উপযোগী করে দেয়ার দাবী জানিয়েছেন এলাকার প্রান্তিক কৃষকগন। .
এ বিষয়ে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আহমেদ তানভীর উল্লাহ সিদ্দিকীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- মুজাহের এন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জলাসুখা থেকে শিবপাশা পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ কাজটি নিয়েছিলো কিন্তু উক্ত প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারের অকাল মৃত্যূর কারণে কাজটি বন্ধ রয়েছে, অসমাপ্ত কাজটুকু সম্পন্ন করার জন্য নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়ার চেষ্ঠা চলছে এবং শিবপাশা থেকে কাকাইলছেও রাস্তার কাজটি পুনঃসংস্কার করার প্রস্তুতি চলছে।.
ডে-নাইট-নিউজ / রিতেষ কুমার বৈষ্ণব-(আজমিরীগঞ্জ থেকে ফিরে)
আপনার মতামত লিখুন: