লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা উপজেলার চরকালকিনি ও চরলরেন্স ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নবী গন্জ বাজার সংলগ্ন ইমরান হোসেন মিলন ভান্ডারী নামের এক বালু ব্যবসায়ী খোলা জায়গায় বালুর ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। বালুর স্তুপের সাথেই মেঘনা নদী। নদীর পাড়ে কোটি কোটি টাকার বালু এনে স্তুপ করায় ভোগান্তিতে পথচারী ও ওই এলাকার ২০ হাজার মানুষ। সাধারণ মানুষ বসতবাড়ীতে থাকাটা যেন এখন বড় দায় হয়ে পড়েছে। অন্যদিকেে জাহাজের ধাক্কা ও বালু উঠানামা করায় মেঘনার ভাংগন তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছে। এ অঞ্চলটি নদী ভাঙন কবলিত হওয়ায় বালু মহল ইজারা নিষিদ্ধ। এই আইনকে অমান্য করে বালু সন্ত্রাসীরা দেদারসে অবৈধ বালুর ব্যবসায় করেই যাচ্ছে। .
স্থানীয় ব্যবসায়ী নুরনবী,নবী মাঝি ও পথচারী হাজি কাশেম,আবু বকর ও সিরাজ অসন্তোষ প্রকাশ করে জানান, নদীপথে দূরদূরান্ত থেকে বালু এনে এখানে নামানো হয়। এ বালুকে ঘিরে আস্তে আস্তে এখানে গড়ে ওঠে ব্যবসা। সারা বছরই রমরমা থাকে এ ব্যবসা। প্রচুর পরিমানে ধুলাবালু ওড়ে। সামান্য বাতাস ছুটলেই বালুতে অন্ধকার হয়ে যায় চারপাশ। সামান্য বাতাস ছুটলেই ঘরের ভেতর বালু ঢুকে পড়ে। ঘরের আসবাবপত্রে বালু। খাবারে বালু। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে কাশি দিলে পেট থেকেও বের হয়ে আসে বালু। মনে হয় স্বপ্নেও বালু দেখেন এলাকাবাসী। সব মিলিয়ে ২০ হাজার মানুষের জীবন কাটছে বড় কষ্টে।এ এলাকায় যত্রতত্র উন্মুক্ত পরিবেশে বালু ব্যবসার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। খোলা জায়গায় বালু রাখা ও খোলা ট্রাকে বালু পরিবহনের কারণে দিনরাত এলাকাজুড়ে বালু উড়ছে। এতে মানুষজনের বাড়িঘরে থাকা কঠিন হয়ে গেছে। বালুর কারণে দোকানপাট খুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। .
বালু ব্যবসার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও মিলন ভান্ডারীর কোন ছাড়পত্র নেই। পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা অনুযায়ী, কোথাও বালু রাখলে বা পরিবহন করলে ঢেকে রাখতে হবে। বিধিমালা অমান্য করলে জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। উন্মুক্ত স্থানে যত্রতত্র বালু স্তূপ করে রাখার পাশাপাশি খোলা ট্রাকে পরিবহন করা হলেও উপজেলা প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।.
এবিষয়ে অভিযুক্ত বালু ব্যবসায়ী ইমরান হোসেন মিলন ভান্ডারী বলেন,এ অঞ্চলে প্রচুর নদী ভাঙছে।তাই বালু মহলের অনুমতি না থাকায় শুধু মাত্র ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে বালু বিক্রি করছি। এবিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে এই প্রতিবেদকে চায়ের দাওয়াত দেন তিনি।.
চর কালকিনি ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার সাইফুল্লাহ বলেন, বালু ব্যবসার নিয়মানুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিতে হয়। পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও ট্রেড লাইসেন্স নিতে হয়। এখন সে কি করছে, তা আমি বলতে পারবোনা।.
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশীদ পাঠান বলেন, সড়কের পাশে উন্মুক্ত পরিবেশে বালু ব্যবসা করা যাবে না। ইতিমধ্যে এই ধরনের ব্যবসায়ীদের বালু ব্যবসা বন্ধে সতর্ক করা হয়েছে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।.
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, সড়কের পাশে বালুর ব্যবসা করা ঝুঁকিপূর্ণসহ পরিবেশ ও সাধারণ লোকজনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আমরা এই অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। . .
ডে-নাইট-নিউজ / নাসির মাহমুদ, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি:
আপনার মতামত লিখুন: