লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ সরকারি বন্দবস্তের জমিতে ঠাঁই হচ্ছে না দিনমজুর সফিকের। জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পুরো পরিবার। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরভূতা গ্রামে ২০০৬সালে ভূমিহীন দিনমজুর সফিক কে ১একর জমি বন্দবস্ত দেয় সরকার। ১৯৯৩সাল থেকে সেই জমিতে বসতবাড়ি ও কৃষি কাজ করে ভোগদখল করছেন। নিয়মিত জমির খাজনাও পরিশোধ করছেন। বর্তমান হাল জরিপেও তার নামে রেকর্ড হয়। .
অন্যদিকে এই ১একর জমির কিছু অংশের মালিকানা দাবি করেন একই এলাকার জহির গং। সম্প্রতি জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে কয়েক দফা সফিকের উপর হামলা করে জহির গং। স্থানীয়রা জানান, জহির গং এলাকায় প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হওয়ায় স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যান এমনকি আইনকেও তোয়াক্কা করছেন না তারা। .
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৪ফেব্রুয়ারি বিকালে জহির গং ১০-১৫জন লোক নিয়ে সফিকের বাড়ি ঘরে অতর্কিত হামলা করে। এসময় সফিক, তার স্ত্রী জাহানারা বেগম, ছেলে সবুজ ও আরিফ, মেয়ে লাকি বেগম ও ছেলের বউ মুন্নী আক্তারকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। স্থানীয়া তাদের উদ্ধার করে আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে অভিযুক্ত মনির হোসেনর ছেলে লক্ষ্মীপুর ডিজিটাল এক্সরে ডায়াগনস্টিক এর মালিক বেল্লাল হোসেন তার লোক জন নিয়ে হাসপাতালে তাদের উপর আবারও হামলা করে। তাৎক্ষণিক পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে বেল্লাল কে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে বেল্লাল মোছলেকা দিয়ে থানা থেকে ছুটে আসে।.
এঘটনায় ভুক্তভোগী মোঃ সফিক বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে মোঃ জহির, ইউসুফ, হেলাল, তোফায়েল, কালা মিয়া, বেল্লাল, সিহাব, ফরহাদ, রুবেল, সাকিল,আমিন, নুরুল ইসলাম সহ আরও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করেন। .
ভুক্তভোগী সফিক বলেন, আমার নিজের কোন জায়গা-জমি না থাকায় পরিবার নিয়ে অনন্যের জমিতে বসবাস করতাম। ১৯৯৩সালে ভূমিহীন হিসেবে সরকারের কাছে জমির আবেদন করি। ২০০৬সালে সরকার আমাকে ভবানীগঞ্জ চরভূতা মৌজায় ১একর জমি বন্দবস্ত দেয়। বন্দবস্ত পাওয়ার পর থেকে জমি ভোগদখল ও নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছি। বর্তমান জরিপেও আমার নামে রেকর্ড হয়েছে। কিছু দিন আগে হঠাৎ করে জহির গংরা জমি পাবে বলে দাবি করে। তারা লোকজন নিয়ে কিছু জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয়। আমি প্রতিবাদ করলে তারা আমার ও আমার পরিবারের উপর হামলা করে। আমাদের এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। আমরা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গেলে সেখানে বেল্লাল লোকজন নিয়ে আমাদের উপর আবারও হামলা করে। আমি পরিবার নিয়ে বর্তমানে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। তাদের ভয়ে বাড়িতে যেতে পারছি না। বাড়িতে গেলে তারা আমাদের মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছে। আমি প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাই। .
এবিষয়ে অভিযুক্ত বেল্লালের পিতা মনির হোসেনের সাথে কথা বললে, তিনি বলেন, বাইশের খতিয়ানে আমরা ঐজমির মালিক সরকার পরবর্তীতে রেকর্ড করছে। আমাদের জমি আমরা দখল করছি। এতে কার কি?। হামলার বিষয়ে মনির বলেন, তারা অন্য এলাকা থেকে এসে আমাদের জমিতে বসবাস করবে আমরা কি তাদের সালাম দিবো নাকি। সফিক আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করছে তাই আমরাও তাদের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেছি।.
. .
ডে-নাইট-নিউজ /
আপনার মতামত লিখুন: