কক্সবাজারের রামু জোয়ারিয়ানালায় বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার নামে চলছে জমজমাট জুয়ার আসর। উপজেলার বিভিন্নস্থানে ৩দিন-২দিন ব্যাপী আসর বসিয়ে বলী খেলার নামে চলছে জুয়া সহ নানা অনৈতিক কর্মকান্ড। দীর্ঘদিন রামুতে এমন জুয়ার আসর দেখা মেলেনি। আকষ্মিকভাবে বলী খেলার নামের এসব জুয়ার জমজমাট আসর দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। তবে এসব আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত একাধিক ব্যক্তি জানান, তারা উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ম্যানেজ করে এসব আসর পরিচালনা করছেন।.
শনিবার, ৩ জুন বিকালে রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের নন্দাখালী মুরাপাড়া এলাকায় ৩দিন ব্যাপী বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার শেষ দিনে বলী খেলার কোন আয়োজন চোখে পড়েনি। দেখা মেলেনি কোন বলীরও। তবে সেখানে ৮/১০টি স্টলে চলছিলো জমজমাট জুয়ার আসর। এসব আসরে জুয়া খেলায় মেতেছে শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ সহ সব বয়সের মানুষ।.
জানা যায়- নন্দাখালী গ্রামের বাসিন্দা ইউপি সদস্য আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে গত ১ জুন থেকে নির্বিঘ্নে চলছে এ জুয়ার আসর। রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মুস্তফার নাম ভাঙিয়ে বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার নামে জুয়ার আসর চালিয়ে আসছেন ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল ও তার একাধিক সহযোগি।.
উল্লেখ্য ২১, ২২ ও ২৩ মে জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের মইশকুম পাড়ায় রেললাইন সংলগ্ন মাঠে বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার নামে জমজমাট জুয়ার আসর বসিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা কবির বলী। এনিয়ে অনলাইন মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করার জেরে এক সংবাদকর্মীকে হুমকী দিয়েছেন কবির বলী। কবির বলী ওই সংবাদ কর্মীকে বলেন- প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তিনি বলিখেলা পরিচালনা করেছিলেন।.
এদিকে আজ রবিবার, ৪ জুন রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড পুর্ব ধেছুয়াপালং এলাকায় নাগরিক কমিটির ব্যানারে একটি জুয়াডি চক্র বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার নামে জমজমাট জুয়ার আসর বসানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতিমধ্যে এলাকায় ব্যানার ছাপিয়ে প্রচারনাও শুরু হয়েছে।.
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল হোসাইন জানান- বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার অনুমতি দেয়ার এখতিয়ার ইউএনও এবং ওসির নেই। তিনি আরও জানান- রামু থানায় যোগদানের দুই বছরে কোথাও বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা কিংবা জুয়ার আসর দেখেননি। হঠাৎ কিভাবে এসব শুরু হলো বলতে পারছেননা।.
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মোস্তফা জানিয়েছেন- বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার নামে জুয়া খেলার আসর সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তবে এখন থেকে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড চললে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।.
এদিকে জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের মইশকুম পাড়া ও নন্দাখালী গ্রামের বাসিন্দারা জানান- প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রহস্যজনক নীরবতায় এখানে কয়েকদিন পর পর বলী খেলার নামে জমজমাট জুয়ার আসর চলছে। জুয়ার আসরকে ঘিরে এসব এলাকা এখন অপরাধিদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। জুয়ার টাকা জোগাড় করতে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও উঠতি যুব সমাজ চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই সহ নানা অসামাজিক ও অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংগঠিত করছে। অভিভাবক ও সচেতন মহল এ নিয়ে জোর প্রতিবাদ জানালেও জুয়ার আসর বন্ধে কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। ফলে জনমনে বাড়ছে ক্ষোভ ও উত্তেজনা. .
ডে-নাইট-নিউজ / আমানউল্লাহ আনোয়ার
আপনার মতামত লিখুন: