সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহতা রোধ করতে ঝিনাইদহ ব্যাপী অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে দুই কোটি ৫৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ঝিনাইদহ ট্রাফিক পুলিশ ও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি। গত ১১ মাসে (জানুয়ারী থেকে নভেম্বর ২০২১) সারা জেলায় অভিযান চালিয়ে এই জরিমানার টাকা আদায় করা হয়। ঝিনাইদহ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) সালাহউদ্দীন এ তথ্য জানান। ঝিনাইদহ ট্রাফিক পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে গত ১১ মাসে মোট নিস্পত্তি মামলা ছিল পাঁচ হাজার আট’শ ১২টি। বই এবং পজ মেশিন দিয়ে এ সব মামলা করা হয়। .
এ সময় ঝিনাইদহ ট্রাফিক পুলিশ ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যক্স টোকেন, রেজিষ্ট্রেশন বিহীন, হেলমেট, ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য করা, উল্টো পথে গাড়ি চালানো ও মটরসাইকেলে দুই জনের অধিক আরোহী যাত্রী বহনের দায়ে এক কোটি ৭৭ লাখ ৩৬ হাজার ৮’শ টাকা জরিমানা আদায় করে। এ ছাড়া রেজিষ্ট্রেশন বিহীন মটরসাইকেল চালানোর দায়ে ঝিনাইদহ বিআরটিএ ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ২৯৮ টাকা জরিমানা আদায় করে। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ ট্রাফিকের সার্জেন্ট আসাদুজ্জামান বলেন, মটরসাইকেলে মামলা খেতে না চাইলে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। এ জন্য তিনটা পেপারের যে কোন একটি না থাকলে অবশ্যই মামলা হবে। তিনি বলেন, রেজিষ্ট্রেশন পেপার, ট্যাক্স টোকেন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স অবশ্যই থাকতে হবে। ট্যাক্স টোকেন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদ থাকতে হবে। না থাকলে মামলা ও জরিমানা হবে। সেকেন্ডহ্যান্ড বাইক কেনার পর নাম ট্রান্সফার বা পরিবর্তন না করলে মামলা হবে। শিক্ষানবিশ কাগজ আছে কিন্তু পরীক্ষা, ছবি তোলা এবং ফিংগার দেয়নি এমন গাড়ির মালিকরা রাস্তায় বের হলে মামলার বিধান রয়েছে। বাইক ড্রাইভ করার সময় হেলমেট পরেননি অথবা আপনি পরেছেন কিন্তু পেছনের আরোহী পরেননি এমন পাইলে মামলা হবে। ট্রাফিক বা রোড সিগনাল না মানলে মামলা হবে বলেও ট্রাফিক সার্জেন্ট আসাদুজ্জামান উল্লেখ করেন।.
এছাড়াও উল্টা পথে গাড়ি চালালে, ব্রেক লাইট না জ্বলা, ইন্ডিকেটর লাইট ভাংগা বা না থাকলে, রাতে হেড লাইট না জ্বালালে, ড্রাইভ করার সময় মোবাইলে কথা বললে অথবা নেশা করে ড্রাইভ করলে, অনুমতি ব্যতিত বাইক মোডিফাই করলে, রঙ পরিবর্তন করলে, ভিআপি হর্ন ব্যবহার, ফগ লাইট ব্যবহার, হ্যালোজেন লাইটের জায়গায় এলইডি হেডলাইট ব্যবহার, বাইকে ২ জননের অধিক যাত্রি থাকলে, অবৈধ ভাবে পার্কিং করলে, সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করলে, ফুটপথে মোটরসাইকেল চালালে ও লুকিং বা সেফটি গøাস না থাকলে সাধারণত মামলা করা হয়। ঝিনাইদহ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) সালাহউদ্দীন জানান, সড়কে দুর্ঘটনা রোধে পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। এতে অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা কমে এসেছে। তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হচ্ছে কিশোর ও উঠতি যুবকদের বাইক কিনে দেওয়া। ছেলের সখ মেটাতো বা বায়নার কারণে পিতা মাতা বাইক কিনে দিচ্ছেন। নইলে আত্মহত্যার হুমকী দেয়। অভিভাবক যদি সচেতন না হয় তবে মামলা দিয়ে সড়কে মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব নয় বলে তিনি মনে করেন। ঝিনাইদহ ট্রাফিক বিভাগ এ জন্য সচেতনতামুলক কাজ করে যাচ্ছে। পরিদর্শক (টিআই) সালাহউদ্দীন আরো জানান, কারো হয়রানী ও অর্থদন্ড করার মানসে ট্রাফিক পুলিশের অভিযান নয়। মৃত্যু হ্রাস ও দুর্ঘটনা রোধে সবাইকে আইনের আওতায় আসার অভ্যাস এবং নিয়ম মানার জন্যই মুলত ট্রাফিক পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।. .
ডে-নাইট-নিউজ / ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
আপনার মতামত লিখুন: