লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর শামসুদ্দিন জাহেরিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় চলছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। গোপনে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন, সেই কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া, ওই কমিটির নিয়োগকৃত শিক্ষক ও কর্মচারীদের এমপিও বাতিলসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে চলছে এ বিশৃঙ্খল অবস্থা।.
কয়েকজন অভিভাবকের অভিযোগ- শুধুমাত্র নিজের নিয়োগ নিশ্চিত করতেই ভোটার তালিকা বিহীন একটি গোপন নির্বাচনী প্রক্রিয়া দেখিয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সুপার সহকারী মৌলভী আহসান উল্যাহ। ওই কমিটির মাধ্যমে তিনি ইতোমধ্যে সহ-সুপার হয়েছেন। ওই কমিটি ইতোমধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তদন্তে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বোর্ড এ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।.
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা সুপার আবু সালেহ মোহাম্মদ নূর অবসর গ্রহণের পর থেকেই বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত। ভারপ্রাপ্ত সুপার ফরিদ উদ্দিনকে বিঘ্নতার সৃষ্টি করায় তিনি অন্য মাদ্রাসায় চলে যান। ভারপ্রাপ্ত সুপার হন সহকারী মৌলভী আহসান উল্যা। তিনি ভোটবিহীন গোপনে একটি কমিটি করে বোর্ডের অনুমোদন করিয়ে নেন। ওই কমিটি সুপার, সহ-সুপার, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে বিজ্ঞপ্তি দিলে কমিটি গঠনের বিষয়টি ফাঁস হয়।। এ নিয়ে অভিভাবকরা অভিযোগ করলে তদন্ত করেন কমলনগরের তৎসময়কার সহকারী কমিশনার (ভ‚মি)। ওই তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতিবেদনের আলোকে মাদ্রাসা বোর্ড গত ২৮ নভেম্বর এ কমিটি ভেঙ্গে দেন। কিন্তু তার আগেই ওই কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে সুপার পদে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সহ-সুপার পদে আহসান উল্যা, নিরাপত্তাকর্মী পদে বেলাল হোসেন ও আয়া পদে ফাতেমা আক্তার এমপিওভ‚ক্ত হয়ে যান।.
অভিভাবক মোঃ সিরাজ ও মোঃ মোস্তফা জানান, ‘অবৈধ কমিটির মাধ্যমে তড়িঘড়ি করে নিয়োগপ্রাপ্তদের এমপিও বাতিলের জন্য আমরা সম্প্রতি শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করেছি। প্রতিষ্ঠানটিতে শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে এনে হারানো ঐতিহ্য পুন:প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’.
সহ-সুপার মৌলভী আহসান উল্যাহ বলেন, ‘কমিটি গঠনে অনিয়মের তদন্ত প্রতিবেদনের কারণে বোর্ড ওই কমিটি ভেঙ্গে দিয়েছে। বোর্ডের নির্দেশনা মতো এডহক কমিটি গঠন করা হবে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমি নিয়োগ পেয়েছি।’.
বর্তমান সুপার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণের আগের কোনো বিষয় আমার জানা থাকার কথা নয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে আমি বিধি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছি। সহ-সুপার আগের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন।’.
ভেঙ্গে দেওয়া কমিটির সভাপতি ও বেগমগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আহমেদ উল্যাহ সবুজ বলেন, ‘কমিটি গঠনের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এটি মাদ্রাসার ওই সময়কার সুপার ও নির্বাচনের দায়িত্বশীলরা বলতে পারবেন। কমিটির দায়িত্ব পাওয়ার পর আমি আমার কাজ করেছি। এখন ভেঙ্গে দিয়েছে ওই চিঠিও পেয়েছি।’.
লক্ষ্মীপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (অ.দা) উত্তম কুমার সাহা, ‘আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। কমিটির বিষয়টি মাদ্রাসা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী চলবে।’. .
ডে-নাইট-নিউজ / নাসির মাহমুদ (লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি):
আপনার মতামত লিখুন: