প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে খরা অনাবৃষ্টিসহ উচ্চ তাপমাত্রা থেকে বোরো ফসল রক্ষা এবং রোগ বালাই ও ইঁদুর দমনে উপজেলা কৃষি বিভাগের উদ্যোগে বুধবার (১২ এপ্রিল) কৃষকদের নিয়ে আগাম সতর্কীকরণ উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বর্তমান চলমান খরা, অনাবৃষ্টি, তাপদাহ, উচ্চ তাপমাত্রা, হিট ইঞ্জুরি ও লু হাওয়াসহ রোগ বালাই ও ইঁদুরের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় গত এক সপ্তাহ থেকে উপজেলা কৃষি বিভাগ উপজেলার পৌর এলাকাসহ ৭ ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কৃষকদের নিয়ে আগামী সতর্কীকরণ উঠান বৈঠক করছে। প্রতিটি উঠান বৈঠকে কৃষকদের অংশগ্রহণের পাশাপাশি কিষাণীদের অংশগ্রহণ থাকছে লক্ষ্যণীয়। .
আলাদিপুর গ্রামে কৃষকদের নিয়ে আয়োজিত আগামী সতর্কীকরণ উঠান বৈঠকে মূখ্য আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার। এতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শাহানুর রহমান ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোছা. শিবলী খন্দকার প্রমুখ। এ সময় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, এলাকার কৃষক ও কিষাণীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার সুধিজন উপস্থিত ছিলেন।
.
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, চলমান তাপদাহ এবং ধানের বিভিন্ন প্রকার রোগ বালাই ও ইঁদুর দমনে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এক সপ্তাহ থেকে আগাম সতর্কীকরণ শীর্ষক উঠান বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে। পৌর এলাকাসহ ৭ ইউনিয়নের ২৪ টি ওয়ার্ডে প্রত্যেক ওয়ার্ডের কৃষক ও কিষাণীদের নিয়ে আগাম সতর্কীকরণ শীর্ষক উঠান বৈঠক করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৭ টি ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক সম্পন্ন করা হয়েছে। অন্যগুলোতেও চলমান রয়েছে। উঠান বৈঠকের সঙ্গে সঙ্গে কিষাণ-কিষাণীর মাঝে সতর্কীকরণমূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। .
তিনি আরো বলেন, তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এর বেশি হলে হিটশক বা হিট ইঞ্জুরিতে ফুল আসা বোরো ধানে চিটা বা শীষ সাদা হয়ে যেতে পারে। এ সময় বোরো ধানের যে সকল জাত ফুল ফোটা পর্যায়ে রয়েছে কিংবা এখন ফুল ফুটছে ওই সব জমিতে পানি ধরে রেখে ধানের ফুল ফোটা পর্যায়ে হিট ইঞ্জুরি থেকে রক্ষার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দিনের তাপমাত্রা হলো ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অথবা তার বেশি হলে ধান গাছের ফুল ফোটার সময় (সকাল ৭.০০ টা থেকে ১১.৩০ টা পর্যন্ত) যদি ১-২ ঘণ্টা ওই তাপমাত্রা বিরাজ করে তাহলে ধান চিটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রচ- ঝড়ো বাতাস কিংবা গরম বাতাসের কারণে গাছ থেকে পানি প্রস্বে^দন প্রক্রিয়ায় বেরিয়ে যায়। এতে ফুলের অঙ্গগুলোর গঠন বাধাগ্রস্ত হয়। আবার ঝড়ো বাতাস পরাগায়ন, গর্ভধারণ ও ধানের মধ্যে চালের বৃদ্ধি ব্যাহত করে। এতে ধানের সবুজ খোসা খয়েরি বা কালো রঙ ধারণ করে এতে ধান চিটা হয়ে যেতে পারে। খরার কারণে শীষের শাখা বৃদ্ধি বাঁধাগ্রস্ত হয় এবং বিকৃত ও বন্ধ্যা ধানের জন্ম দেওয়ায় চিটা হয়ে যায়। এ সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য নি¤œলিখিত কাজগুলো করলে এসব দুর্যোগ থেকে ফসলকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। প্রচ- গরম ও ঝড়ো বাতাসের কারণে কোথাও ধান চিটা হতে দেখা গেলে (১) হিটশক থেকে বোরো ধান রক্ষা করতে জমিতে ৫-৭ সেন্টিমিটার বা ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পানি কাইচ থোড় থেকে ফুল ফোঁটা পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে। (২) এমওপি রাসায়নিক সার ১০ লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম মিশিয়ে ৫ শতাংশ হিসেবে স্প্রে করতে হবে। (৩) প্রতি বিঘায় ৫ কেজি করে দানাদার এমওপি রাসায়নিক সার উপরিভাগে প্রয়োগ করতে হবে।
.
.
ডে-নাইট-নিউজ /
আপনার মতামত লিখুন: