বাঙালির অস্তিত্বের উৎসব, প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। এ বৈশাখকে ঘিরে বাঙালির মধ্যে জাগ্রত হয় বৈচিত্রময় চিন্তাচেতনা। জাত-পাত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ থাকে শুধুই আমারা বাঙালি। আর বাঙালি মানেই তো, মাছে-ভাতে বাঙালি। পহেলা বৈশাখ আর পান্তা ইঁলিশ না হলে কি আর চলে? সেই পান্তার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে মাইকিং এর মাধ্যমে। .
এমনি চিত্র দেখা মিলেছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার পৌর মাছ বাজারে। ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজিদরে। এদিকে দাম কম হওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকজনের ভিড় জমছে ইলিশের দোকানে। .
সরেজমিনে গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১১ টার দিকে পৌরশহরের মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ইলিশ মাছের আমদানি বেশি হলেও ক্রেতার অভাবে পড়ে থাকছে মাছ। এতে পচন ধরাসহ আর্থিক লোকসানের হাত থেকে রেহাই পেতে পৌর বাজারের মাছ ব্যবসায়িরা দাম কমিয়ে মাইকিং করে বিক্রি করছেন ছোট আকারের ইলিশ মাছ। তবে এক কেজি ওজনের ওপরের ইলিশ মাছ প্রতিকেজি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।.
মাইকিং শুনে পৌর বাজারে ইলিশ কিনতে আসা গৃহবধূ শিরিন আক্তার বলেন, এমনিতেই ইলিশের দাম অনেক বেশি থাকে। এজন্য ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ইলিশ মাছ কিনে খাওয়া যায় না। তবে মাইকিং শুনে ৩০০ টাকা কেজিদরে ইলিশ কিনতে বাজারে এসেছেন। এক কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের চারটি ইলিশ মাছ কিনে বাড়ী ফিরছেন। .
মাছ কিনতে আসা রিকশা ভ্যান চালক আফজাল হোসেন বলেন, মাইকিং শুনে যাত্রী পরিবহন করেই যা আয় হয়েছে তাই দিয়ে ইলিশ মাছ কিনতে চলে এসেছেন মাছ বাজারে। এক কেজি ১৫০ গ্রাম ওজনের চারটি মাছ নিয়েছেন। মাছ ক্রেতা রেজাউল আলম বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশের দাম একটু বেশি। তবে কম দামে বিক্রি করায় সকল শ্রেণির ক্রেতার পক্ষে ইলিশ কেনা সহজ হয়েছে। .
ইলিশ মাছ ব্যবসায়ি আমিনুল ইসলাম ও আব্দুল জব্বার বলেন, বর্তমানে ইলিশের আমদানি বেশি হওয়ায় এবং ক্রেতা না পাওয়ায় কারণে দাম কমিয়ে মাইকিং করে ইলিশ বিক্রি করতে হচ্ছে। যে মাছ ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে, অন্য সময়ে একই মাছ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তবে বড় ইলিশ যেগুলোর ওজন এক কেজির ওপরে সেগুলো দাম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। বড় মাছের স্বাদ বেশি হওয়ায় দামও বেশি।.
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. রাশেদা আক্তার বলেন, পহেলা এপ্রিল থেকে ৭ এপ্রিল জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ। মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী প্রতি বছর ১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৮ মাস জাটকা ইলিশ ধরা. পরিবহন, মজুদ, বেচাকেনা ও বিনিময় সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকে। মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য এবং বঙ্গোপসাগরে মৎস্য সম্পদ আহরণ নিশেধাজ্ঞার জন্য ইলিশের উৎপাদন অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে বলেই দেশের প্রতিটি হাটবাজারে ইলিশের আমদানি বেড়েছে। . .
ডে-নাইট-নিউজ / প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
আপনার মতামত লিখুন: