রেজিষ্ট্রেশন বেশি টিকার সরবরাহ কম এমন পরিস্থিতি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা জুড়ে শনিবার গনটিকা কার্যক্রমে গনহয়রানীর কমতি ছিল না। প্রথম দিনেই মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ে নাজেহাল হয়। টিকা রেজিষ্ট্রেশন করার সময় ভুল ইনফরমেশনে গ্রাম থেকে মানুষ শহরে উঠে এসে ভোগান্তিতে পড়েন। তারা এদিক ওদিক ছুটাছুটি করে টিকা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। এমনই একজন সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা লোকমান হোসেন। তিনি টিকা রেজিষ্ট্রেশনের সময় ভুল করে টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা অফিস উল্লেখ করা হয়। সকালে তিনি টিকা গ্রহনের জন্য হলিধানী ইউনিয়ন টিকাদান কেন্দ্র ছেড়ে চলে আসেন শহরে। কিন্তু কোথাও তিনি টিকা পাননি। ইউনিয়নে গেলেও কেন্দ্র দেখে তাকে আবার ঝিনাইদহে আসতে বলা হয়। এভাবে লোকমান হোসেন হয়রানীর শিকার হন। ঝিনাইদহ পৌর এলাকার মুরারীদহ গ্রামের আবুল হাসেম জানান তার রেজিষ্ট্রেশন কার্ডে টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অফিস উল্লেখ করা হয়। সদর পঃপঃ কর্মকর্তার দপ্তর থেকে তাকে পাঠানো হয় সদর হাসপাতালে। সেখান থেকে আবারো তাকে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দপ্তরে পাঠানো হয়। এভাবে তিনি রিক্সাভাড়া দিয়ে কয়েকবার যাতায়াত করে হয়রানীর শিকার হয়ে জানতে পারেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অফিসে কোন টিকা দান কেন্দ্র নেই। এভাবে শত শত নারী পুরুষকে রেজিষ্ট্রেশনে কেন্দ্র সঠিক ভাবে উল্লেখ না থাকায় হয়রানী হতে হয়। ইউনিয়ন ও শহরের সবখানে এমন হয়রানীতে মানুষদের নাকাল হতে দেখা যায়। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গ্রাম শহরের হাজার হাজার মানুষ রেজিষ্ট্রেশন করেছেন। কিন্তু প্রথম দিনে প্রতিটি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয় ৬০০ জনের। ফলে বিপুল সংখ্যাক মানুষ রেজিষ্ট্রেশন করেও টিকা নিতে পারেনি। হরিণাকুন্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের মান্দিয়া গ্রামের ষাটোর্ধ শমসের মন্ডল ও কালাপাড়িয়া গ্রামের শেফালী বেগম শুধুমাত্র ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে কেন্দ্রে আসেন টিকা নিতে। কিন্তু তারা গনটিকার আওতায় না পড়ায় (রেজিষ্ট্রেশন বিহীন) টিকা দেওয়া হয়নি। শৈলকূপার মির্জাপুর ইউনিয়নেও অনেক মানুষকে ফিরে যেতে দেখা গেছে। সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিয়নে টিকা নিয়ে তর্কবিতর্ক হতে দেখা গেছে। প্রায় সব কেন্দ্রেই একই অবস্থা বিরাজমান। সদর উপজেলার সাধুহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন জানান, তার ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষ নিবন্ধন করেছিল। কিন্তু টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে মাত্র ৭০০ জনের। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ডাঃ শামীম কবীর বলেন, রেজিষ্ট্রেশ বেশি কিন্তু টিকার সরবরাহ কম হওয়ায় প্রথম দিনে একটু ভীড় হয়েছে। তিনি বলেন আমার অফিসে কোন টিকাদান কেন্দ্র নেই অথচ রেজিষ্ট্রেশনে কেন্দ্র উল্লেখ করা হয়েছে। এতো মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের দপ্তর থেকে বলা হয়েছে শনিবার জেলার ৬৭টি ইউনিয়ন ও ৬টি পৌরসভায় ৭৩টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এসব কেন্দ্রে ৬০০ জন করে সর্বমোট ৪৩ হাজার ৮০০ জনকে টিকা দেওয়ার কথা। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সময় থাকলেও বেশির ভাগ কেন্দ্রে দুপুরের আগেই টিকা শেষ হয়ে যায়।.
ডে-নাইট-নিউজ / ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
আপনার মতামত লিখুন: