দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার ১২ থেকে ১৮ বছরের প্রায় ১২ হাজার শিশুকে করোনার টিকার আওতায় আনতে গতকাল বুধবার শুরু হয়েছে শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি। ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ সংলগ্ন জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে দুটি বুথ খুলে টিকাদান শুরু হলেও সেখানে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই।.
স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষার পাশাপাশি টিকাদানে ধীরগতির কারণে শত শত শিক্ষার্থী রয়েছে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকিতে। অথচ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। তারা দোষাচ্ছেন একে অপরকে। সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই শুধুমাত্র পৌরএলাকার শিক্ষার্থীরা টিকা নিতে জড়ো হয়। ফলে একই সময় বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী জড়ো হওয়ায় বড় ধরনের ভিড় জমে যায়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিলেন তাদের শিক্ষক ও অভিভাবকরাও। ডাকবাংলোর প্রবেশ দ্বার থেকে টিকা বুধ পর্যন্ত দুটো লাইনে দাঁড়িয়ে আছে মেয়ে শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে গেটের বাহিরে অপেক্ষা করছে হাজারো ছেলে শিক্ষার্থী।.
টিকাকেন্দ্রে গেটে বেঁধেছে জটলা। হুড়োহুড়ি আর গাদাগাদিতে প্রায় করোনার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। অপরদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের। পুলিশ নিয়োজিত থাকলেও ছিল না নারী পুলিশ। গাদাগাদি করে দুটি বুথে টিকা নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। অনেকের মুখে মাস্কও দেখা যায়নি। এতে করে টিকা নিতে এসে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে হয়েছে বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে।.
এমন অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিভাবকরা জানান, একই সঙ্গে এত বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে এক কেন্দ্রে নিয়ে টিকাদানের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। এ অব্যবস্থাপনার কারণে করোনামুক্ত হওয়ার বদলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ চাইলে আরও আগে থেকেই কেন্দ্র সংখ্যা বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদর টিকাদানের পরিসর বাড়ানো যেত। নূর ইসলাম নামে এক অভিভাবক জানান, তার মেয়েকে সকাল ১০ টাায় টিকাকেন্দ্রে এসেছে। আসার পর থেকে যেভাবে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছে তাতে ভয় বাড়ছে। যদি বিদ্যালয় বা এলাকাভিত্তিক টিকাদান কর্মসূচি হতো তবে এমন অব্যবস্থাপনায় পড়তে হতো না শিক্ষার্থীদের।.
অবশেষে হুড়োহুড়ির মধ্যেই আমার মেয়ে টিকা গ্রহণ করে অসুস্থ বোধ করছে। এ ছাড়া একাধিক অভিভাবকের অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে। ফাইজারের এ টিকা প্রয়োগে বেশ কিছু নিয়ম-নীতি মানতে হয়। কিন্তু এখানে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটছে। জিএম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হোসেন বলেন, করোনা থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীদের টিকার ব্যবস্থা করেছে সরকার। কিন্তু ফুলবাড়ীতে যেভাবে টিকাদান করা হচ্ছে, তাতে করোনা প্রতিরোধ নয় করোনার নিয়ে বাড়ি ফিরছে শিক্ষার্থীরা। এ অব্যবস্থাপনা আমরা আশা করিনি।.
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান বলেন, টিকা সংরক্ষণ এবং প্রয়োগ দুটোই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দিতে হয়। উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সাথে আলোচনা করেই ডাকবাংলোতে টিকাদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আনছার সদস্য চেয়েছিলাম কিন্তু তা পাইনি। আপনারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে এ বিষয়ে কথা বলেন।.
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ১০ টায় আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন সাবেক গণশিক্ষা মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি মহোদয়। তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। আমি এখনি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। . .
ডে-নাইট-নিউজ / প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
আপনার মতামত লিখুন: