• ঢাকা
  • শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

গভীর রাতে নৌকার কার্যালয়ে হামলা, পাল্টা হামলায় আহত ১৯


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: বুধবার, ০৩ জানুয়ারী, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০:২১ এএম;
গভীর রাতে নৌকার কার্যালয়ে হামলা, পাল্টা হামলায় আহত ১৯
গভীর রাতে নৌকার কার্যালয়ে হামলা, পাল্টা হামলায় আহত ১৯

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে গভীর রাতে নৌকার কার্যালয়ে ঢুকে এক কর্মীকে মারধরের ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় ঈগল প্রতীকের সমন্বয়ক উপজেলা চেয়ারম্যানসহ উভয়পক্ষের ১৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসময় উভয়পক্ষের সাতটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত মাইক্রোবাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদিকে ঘটনার সময় তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণের কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে পুলিশ তা অস্বীকার করছেন। ঘটনাটি ঘটে সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার নোয়াহাট বাজারে। খবর পেয়ে সহকারি রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং থানার ওসি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা আহত উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পিসহ অন্যদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করেন।.

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নৌকার মিছিলে যাওয়াকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের সমর্থক মো. সুমন তার দোকানের কেতলির গরম পানি ঠেলে দেয় নৌকার সমর্থক বাবুর গায়ে। খবরটি আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে নৌকার সমর্থকরা এসে ঈগল সমর্থক সুমন ও বাবুকে মারধর করেন। একপর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুনের ঈগল প্রতীকের সমন্বয়ক উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পি, যুগ্ম-আহ্বায়ক আহসান উল্লাহ হিরনের নেতৃত্বে ১৫-১৬টি মোটরসাইকেলে করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নোয়াহাট এলাকার নৌকার নির্বাচনী কার্যালয়ে ঢুকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। এসময় আশপাশের নৌকার সমর্থকরাও শক্তিবৃদ্ধি করে আসলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে নৌকার সমর্থক বাবু ও সাগরসহ নয়জন এবং অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল প্রতীকের যুবলীগ নেতা মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পী (উপজেলা চেয়ারম্যান), আহসান উল্লাহ হিরন, মাকছুদুর রহমান বাবু, সুমন হোসেন, মাহফুজুর রহমান, আবুল কালাম, কামরুল ইসলাম, নুর আলম, ইব্রাহিম খলিল ও রুবেলসহ ১০ জন আহত হন।.

নৌকা প্রতীকের স্থানীয় প্রতিনিধি জেলা পরিষদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন মোল্লা জানান, সোমবার রাতে নৌকার নির্বাচনী কার্যালয়ে ঢুকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুনের ঈগলের সমর্থকরা নৌকার এক কর্মীকে মারধর করেন। এসময় কমলনগর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পি ও যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান উল্লাহ হিরনের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০টি মোটরসাইকেল নিয়ে ৩০-৩৫ জনের একটি বাহিনী এসে নৌকার কার্যালয়ে হামলা করে কর্মী-সমর্থকদের মারধর করে আহত করেন। এসময় তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করা হয়। এতে নৌকার পক্ষের নয়জন কর্মী-সমর্থক আহত হন।.

স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ও কমলনগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্যাহ হিরনের দাবি, সোমবার রাতে নোয়াহাট এলাকায় চা-দোকানে বসে ঈগল প্রতীকের সমর্থক সুমন হোসেনসহ অন্যরা ঈগল মার্কা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছিলেন। এসময় নৌকার পক্ষের সমর্থক জেলা পরিষদের সদস্য গিয়াস উদ্দিন মোল্লাসহ অন্যরা দোকানে গিয়ে সুমনকে মারধর করেন। এরপর তিনিসহ অন্যরা ঘটনাস্থলে যান। পরে সেখান থেকে আসার পথে সাড়ে ১১টার দিকে নোয়াহাট এলাকায় পৌঁছালে নৌকার সমর্থকেরা তাদের ওপর হামলা করেন। হামলায় তিনিসহ ১০ জন আহত হন এবং তাদের সাতটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। .

এদিকে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, নৌকার মিছিলে না যাওয়ায় জেলা পরিষদের সদস্য গিয়াস উদ্দিন মোল্লার নেতৃত্বে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা চালিয়ে তার বেশ কয়েকজন সমর্থককে আহত করেছেন। এ ব্যাপারে তারা লিখিত অভিযোগ করবেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট একেএম নুরুল আমিন রাজু অভিযোগ করে বলেন, একজন উপজেলা চেয়ারম্যান কী করে গভীর রাতে দলবল নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে নৌকা প্রতীকের কার্যালয়ে হামলা ও নেতাকর্মীদের মারধর করে আহত করে? এটা নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।.

তিনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা কমপ্লেক্সের সরকারি বাসভবনে থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। নির্বাচনের যাবতীয় কর্মকা- এখান থেকেই পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা কোনো হস্তক্ষেপ দেখছি না। কারণ এ ব্যাপারটি নির্বাচনী আচরণবিধি বহির্ভূত।.

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘটিত হামলা-সংঘর্ষের ঘটনাটিকে একটি বিচ্ছিন্ন উল্লেখ করে বলেন, আমাদের এখন লক্ষ্য একটাই, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করা। তবে নৌকা প্রতীকের প্রধান সমন্বয়ক ও রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, নোয়াহাট এলাকায় নৌকার নির্বাচনী কার্যালয়ে ঢুকে ঈগলের সমর্থকেরা তাদের কর্মীদের মারধর করেন। এসময় ফাঁকা গুলিও করা হয়। যুবলীগের নাম ব্যবহার করে কিছু লোক নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।.

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার সময় গুলিবর্ষণের বিষয়টির তারা সত্যতা পাননি বলে উল্লেখ করেন তিনি।. .

ডে-নাইট-নিউজ / নাসির মাহমুদ (লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি):

সারাদেশ বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ