দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সার, বীজ, ডিজেল, কৃষিশ্রমিকের মজুরিসহ কৃষি সামগ্রীর মূল্য যেনো লাগামহীন। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি বোরো আবাদে যা খরচ হচ্ছে, তাতে ফলনের দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত উপজেলার কৃষকরা।.
সার, বীজসহ কৃষি সামগ্রী কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে চড়ামূল্যে বিক্রি করছেন কিছু অসাধু ডিলাররা। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানসহ বাজার মনিটরিং চলছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। উপজেলার কৃষকরা জানান, আসন্ন বোরো মৌসুমে উপজেলাব্যাপী শীতকে উপেক্ষা করে চলেছে বোরো আবাদ। ইতোমধ্যে উঁচু এলাকার জমিতে ধান রোপণ হয়ে গেছে। উপজেলার খয়েরবাড়ী ও দৌলতপুরের কিছু জলাবদ্ধ জমি স্যালো মেশিন দিয়ে পানি নিষ্কাশন করে ধান রোপণ করার চেষ্টা চলছে।.
ওইসব ঘেরে আদ্যোই এ বছর ধান হবে কি-না তা নিয়ে হতাশ ওইসব জমির কৃষক। মৌসুমের শুরুতেই এবার চাষিদের পকেট থেকে গুণতে হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। ডিজেলের দাম বাড়ায় বেড়েছে চাষিদের সেচ ও চাষ খরচ। সরকার সেচে ভর্তুকি দিলেও বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প মালিকরা যোগসাজশে পানির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। অপরদিকে, সারের দাম না বাড়লেও বিসিআইসি ডিলাররা বোরো চাষের ভরা মৌসুমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করায় কৃষকদের বেশি দামে সার কিনে খেতে প্রয়োগ করতে হচ্ছে।.
বিশেষ করে টিএসপি ও পটাশ সার এখনও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। চড়া দামে কিনতে হয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির বোরো ধানের বীজ। শ্রমিকের পেছনেও হচ্ছে আগের তুলনায় অনেক বেশি খরচ। যেভাবে সবকিছুর দাম বেড়েছে তাতে বিঘাপ্রতি জমিতে আগের তুলনায় কয়েক হাজার টাকা বেশি খরচ হয়ে গেছে। অধিকাংশ কৃষকই ধার দেনা করে বোরোর আবাদ করছেন। আর এ খরচ পোষাতে হলে তাদের বেশি দামে ধান বিক্রি করতে হবে।.
উপজেলার আলাদীপুর গ্রামের কৃষক গোলজার হোসেন ঝন্টু জানায়, চলতি বছর তিনি ২.৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। তিনি প্রতিকেজি টিএসপি ৩০ টাকা, পটাশ- ২২ টাকা দরে কিনে খেতে প্রয়োগ করেছেন। দোকানে লাল সালুতে সারের সরকার নির্ধারিত মূল্য লেখা থাকলেও সে দরে তিনি সার কিনতে পারেন’নি। এছাড়া ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় গতবারের চেয়ে এ বছর বিঘাপ্রতি ১৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকা বেশি খরচ সেচ খরচ দিতে হচ্ছে। শুধু গোলজার হোসেন ঝন্টুই নয় এ দরেই এ উপজেলার হাজারও কৃষককে সার কিনতে হয়েছে।.
পৌরএলাকার কৃষক শফিক উদ্দিন বলেন, ডিলাররা গোপানে রাতের আঁধারে সার বিভিন্ন মাছের খামারে চড়ামূল্যে পাচার করছে। তাই কৃষককে বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে। ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, চলতি বছর ১৪ হাজার ১২০ হেক্টর জমি বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে মাত্র ১৩ হাজার ৯৭৮ হেক্টর জমি। সারের মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিংসহ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছি। ইতোমধ্যে কয়েক সার ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের এই মনিটরিং ও ভ্রাম্যমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।. .
ডে-নাইট-নিউজ / প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
আপনার মতামত লিখুন: