• ঢাকা
  • শনিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

ভুল অপারেশনে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে খাদিজা


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৪:১৮ পিএম;
ভুল অপারেশনে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে খাদিজা
ভুল অপারেশনে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে খাদিজা

সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোঃ রশিদুল হক (রাশেদ) এর ভুল অপারেশনে ৭দিন যাবৎ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে খাদিজা (২১) নামে এক নারী। ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জ শহরের চাঁদের হাসি হাসপাতালে। খাদিজা হবিগঞ্জ শহরতলীর বড় বহুলা গ্রামের আবিদুর রহমানের স্ত্রী কন্যা সন্তানের জননী।.

রোগীর বড় ভাই উজ্জল মিয়া দৈনিক আমার হবিগঞ্জকে জানান, তার ছোট বোন খাদিজা আক্তার দীর্ঘদিন ধরে পিত্ততলীর পাথরের রোগে ভুগছিলেন। ডাক্তারী পরামর্শের জন্য গত ১৬ মার্চ হবিগঞ্জ শহরের চাঁদের হাসি হাসপাতালে গেলে তাকে অপারেশনের পরামর্শ দেন কর্তব্যরত সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোঃ রশিদুল হক (রাশেদ).

ডাক্তারের পরামর্শমত প্রাথমিক ভাবে ব্যবস্থাপত্র, ভর্তি, পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাদ প্রায় ১০ হাজার টাকা জমা নেয় চাঁদের হাসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এবং পিত্ততলীর পাথর অপসারণ করে অপারেশন সম্পন্ন হবার পর আরও সর্বমোট ২৭ হাজার টাকা প্রদানের চুক্তি করা হয়।.

পরে খাদিজা আক্তারকে অপারেশন করানোর জন্য ১৭ মার্চ দুপুরে ভর্তি করা হয় চাঁদের হাসি হাসপাতালে। ওই দিন ১২টা থেকে বিকেল টা পর্যন্ত প্রায় ১২টি অপারেশন করেন ডাক্তার মোঃ রশিদুল হক (রাশেদ) বেশী অপারেশন থাকায় সময় স্বল্পতার কারনে খুব সময় দিচ্ছিলেন রোগীদের তিনি।.

অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশের মাত্র ১৯ মিনিটের মধ্যে ওয়ার্ডে ফিরিয়ে নেন রোগীকে। অপারেশনের / ঘন্টা পর রোগীর অবস্থা ভাল নয়, দ্রুত গতিতে অতিরিক্ত রক্ত দিতে হবে বলে জানায় চাঁদের হাসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অপারেশন সম্পন্ন হবার পর ১২ ঘন্টার মধ্যে ব্যাগ রক্ত দিয়ে আরও ব্যাগ রক্ত লাগবে বিষয়টি শুনে হতবাক হয়ে যান রোগীর স্বজনরা। ব্যাগ রক্ত প্রদানের পর পরদিন সকালে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে কর্তব্যরত ডাক্তার শাহ রেজাউল করিম ওই রোগীকে আলট্রাসনোগ্রাফি করে তার পেটে জমাট বাধা রক্ত দেখতে পেয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত সিলেট জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করেন।.

ভুক্তভোগী হাসপাতালের বিশ্বস্ত সুত্রে জানায়, পিত্ততলীতে পাথর আক্রান্ত রোগী খাদিজা আক্তারকে ল্যাপারস্কোপিক সার্জারির পর রক্তনালীর মূখ বন্ধ না করেই অপারেশন সম্পন্ন করেন ডাক্তার মোঃ রশিদুল হক (রাশেদ) এতে করে আস্তে আস্তে ক্ষতস্থান দিয়ে পেটের ভেতর রক্ত বেরিয়ে জমাট হয়ে ব্যাথা শুরু হয়।.

সময় রক্ত শুন্যতা দেখা দিলে ১২ ঘন্টার ব্যবধানে রোগীকে মোট ব্যাগ রক্ত প্রদান করে তড়িগড়ি করে সিলেট জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান চাঁদের হাসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।.

সেখানে আরও ব্যাগ দিয়ে পুনরায় অপারেশন করে রক্তনালীর মূখ বন্ধ করেন জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত ডাক্তার ডাঃ সায়েক আজিজ চৌধুরী। সময় ভুল অপারেশনের বিষয়টি বুঝতে পেরে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন চাঁদের হাসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।.

ভুক্তভোগী রোগীর বড় ভাই উজ্জল মিয়া দৈনিক আমার হবিগঞ্জকে আরও জানান, চাঁদের হাসি হাসপাতালে অপারেশনের ২৭ হাজার টাকা চুক্তি থাকলেও ওই টাকা নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সিলেটে একই অপারেশন দুই বার করায় প্রায় লক্ষাধিক টাকা বেশী খরচ হয়েছে তাদের। এর উপর আবার আইসিইউতে রাখা হয়েছে রোগীকে। এরপরও শঙ্কামুক্ত নন খাদিজা। জীবন-মৃত্যুর-সন্ধিক্ষনে আছে সে।.

ব্যাপারে অভিযুক্ত সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোঃ রশিদুল হক (রাশেদ)’এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক আমার হবিগঞ্জকে জানান, এটা কোন দূর্ঘটনা না এটা আমারও দূর্ভাগ্য রোগীরও.

দূর্ভাগ্য। এটা হতেই পারে। অতীতে আমার কোন অপারেশনে রকম হয়নি।.

আমি রোগীকে ঢাকা নিয়ে আসতে চেয়েছিলাম কিন্তু চাঁদের হাসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিলেটে নিয়ে গেছেন। চাঁদের হাসি হাসপাতালের প্রজেক্ট ম্যানেজার কাউছার আহমেদ রুমেল জানান, যে কোন কারনে এটা হতেই পারে এটা মূলত সার্জারীর কোন ত্রুটি না। রক্ত লাগার বিষয়টি সত্য।.

এর আগে, অপারেশনের পর অন্য আরেক নারীর পেটের ভেতরে তোয়ালে রেখেই সেলাই করার অভিযোগ উঠে চাঁদের হাসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। পরে একইভাবে পুনরায় অপারেশন করে পেটের ভেতর থেকে তোয়ালে বের করা হয়।.

.

ডে-নাইট-নিউজ / উজ্জ্বল আহমেদ হবিগঞ্জ:-

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ