দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে গত আট মাসে ৩৮ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু এবং ৫২ জন আহত হয়েছেন। ৩৮টি দুর্ঘটনা ঘটলেও এ সংক্রান্ত মামলা হয়েছে মাত্র ১২টি। অন্যগুলো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আপসরফার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলেছেন। .
একই সময়ে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক, আঞ্চলিক মহাসড়কসহ গ্রামীণ সড়কে একাধিক ছোটবড় দুর্ঘটনায় বিষয়গুলো থানা পুলিশের অগোচরে হতাহত পরিবারগুলো স্থানীয়ভাবে আপসরফা করে নেওয়ার তথ্য থানার তথ্যের বাইরে রয়ে গেছে।.
ফুলবাড়ী থানা সূত্রে জানা যায়, চলতে বছরের জানুয়ারি থেকে গত ২৮ আগস্ট পর্যন্ত ফুলবাড়ী-দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, পার্বতীপুর, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন সড়কে ৩৮ টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে জানুয়ারিতে ৬টি, ফেব্রুয়ারিতে ২ টি, মার্চে ৪টি, এপ্রিলে ৫টি, মেতে ৬টি, জুনে ৮টি, জুলাইয়ে ৪টি এবং আগস্টে ৪টি রয়েছে। .
৩৮টি সড়ক দুর্ঘটনার মধ্যে রয়েছে যাত্রীবাসের সঙ্গে ট্রাক, যাত্রীবাসের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানের, পিআপ ভ্যানের সঙ্গে অটোরি রিকশা ও ট্রাক্টরের সঙ্গে কারের মুখোমুখি সংঘর্ষের ৬টি ঘটনা ঘটেছে। বাস ও ট্রাকের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যান খাদে পড়ে ৪টি, বাস, ট্রাক, ট্রক্টর, পিকআপ ভ্যানের নিচে মোটরসাইকেল চাপায় পড়েছে ১২টি, বাস ও ট্রাকের নিচে অটোরিকশা চাপার ঘটনা ঘটেছে ৮টি এবং ট্রাক্টর ও পিকআপের সাথে অটোরিকশা চাপার ঘটনা ঘটেছে ৩টিসহ পথচারীকে চাপার ঘটনা ঘটেছে ৫টি।.
উপজেলার চৌকিয়াপাড়া গ্রামের শিক্ষক আকরব আলী বলেন, গ্রামের আলমগীর নামের এক গার্মেন্টস কর্মী গত ঈদে ঢাকা থেকে বাড়ী ফেরার পথে উপজেলার জানিপুর মোড় নামক স্থানে ট্রাক্টরের নিচে পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি তার পরিবারের উপার্জনকারী একমাত্র ব্যক্তি থাকায় ওই পরিবারটি এখন ধ্বংসের মুখে পড়েছে।.
উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, সড়ক, মহাসড়কসহ আঞ্চলিক মহাসড়কে বেপরোয়া গতিতে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাস-ট্রাকসহ ছোটবড় যানবাহন চলাচল করার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সড়কগুলোতে বেপরোয়া গতিতে নছিমন-করিমন, অটোরিকশাসহ ব্যাটারি চালিত রিকশাভ্যান চলাচলের কারণেও অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটছে। সড়ক ও মহাসড়কই নয়, গ্রামীণ সড়কগুলোও এখন মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হয়েছে।.
স্থানীয় দৈনিক দেশ মা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক চন্দ্রনাথ গুপ্ত চাঁন্দা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনারোধে যানবাহন চলাচলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষের সড়ক পারাপারের বিষয়ে স্থান নির্ধারণ করা প্রয়োজন। অবৈধ যানবাহন যাতে সড়ক, মহাসড়ক চলাচল না করে সে ব্যাপারে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। .
ফুলবাড়ী থানার ওসি আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অধিকাংশই মামলা করতে আগ্রহী না হওয়াসহ সাক্ষীও পাওয়া যায় না। তবে সড়ক নিয়ন্ত্রণের জন্য হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে। .
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সড়ক ও মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচলরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে।.
ডে-নাইট-নিউজ / প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
আপনার মতামত লিখুন: