সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী নামে একটি ঐতিহ্যবাহী ইউনিয়ন।ইউনিয়নের একটি বাড়ি নিয়েই প্রথমত ইসলামাবাদ নামক গ্রামের গোড়া পত্তন করা হয়।এ বিষয়টি অবগত হতে হলে আমরা একটু পিছনের দিকে তাকাতেই হয়। নতুবা বিষয়টি পাঠকের সম্মুখে অস্পষ্ট থেকে যাবে বিধায় এখানে কিঞ্চিৎ আলোচনার দাবী রাখে।খাজাঞ্চী ইউনিয়নের সবুজ,শ্যামলিমাপূর্ণ একটি গ্রাম পাহাড় পুর নামে অবস্থান করছে।এ ইউনিয়টি যে সকল কীর্তিমান পুরুষের জন্মস্থান হবার কারনে হয়েছে গৌরবের উচ্চাসনে আসীন,যাঁদের বুকে ধারণ করে হয়েছে সুখ্যাতির স্পর্শমন্ডিত, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তি হচ্ছেন হযরত মৌলানা সাইয়্যিদ আব্বাস আলী (র:)ইসলামাবাদী। দীর্ঘতম নদী সুরমার শাখা খাজাঞ্চী নদীর পূর্ব পাড়ে এবং সিলেট-ছাতক রেললাইনের পাশে অবস্থিত গ্রামটি।১২৫৭ বাংলার ফাল্গুন মাসে জন্ম গ্রহণ করেন সাইয়্যিদ আব্বাস আলী(র:)ইসলামাবাদী।নানাবিধ কারনে মাওলানা আব্বাস আলী (র:)ইসলামাবাদী পরিণত বয়সে তিনি পাহাড় পুর থেকে কান্দিগ্রামে, কান্দিগ্রাম থেকে গমরাগোল হয়ে বর্তমান ইসলামাবাদ নামক স্থানে প্রায় ১৫ বিঘা জমির উপর বাড়ি নির্মাণ করেন।পর্যায়ক্রমে এখানেই মসজিদ, কৌড়িয়া মাদ্রাসা স্থাপিত হয়।তিনি যে স্থানে বাড়িটি নির্মাণ করেন সেই বাড়িটির নামকরণ তখন থেকেই ইসলামাবাদ নামে সুখ্যাতি লাভ করে।তবে জনসাধারণের অনেকের মুখে ইসলাম পুর নামক গ্রামের জনশ্রুতি অদ্যাবধি রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে বা লৈখিক ভাবে কোথাও আশেপাশে ইসলাম পুর নামক খাজাঞ্চী ইউনিয়নে কোন গ্রামের অস্তিত্ব নেই বা পাওয়া যায়নি। এখানে উল্লেখ করা আবশ্যক, মাওলানা আব্বাস আলী (র:)কে নিয়ে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে মাওলানা সাইদুর রহমান চৌধুরী “হায়াতে আব্বাসী” নামক একখানা জীবনী গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করেন।সে গ্রন্থ পাঠে জানা যায় বা দৃষ্ট হয় মাওলানা আব্বাস আলী (র:)’র নামের শেষে ইসলামাবাদী শব্দের ব্যবহার। তাছাড়া তিনির প্রতিষ্ঠিত বাড়িটি নিয়ে ইসলামাবাদ নামক গ্রামের নামকরণসহ ১৯৫৪ সালের এস এ রেকর্ডে ইসলামাবাদ মৌজারও নামকরণ রয়েছে।তিনির প্রতিষ্ঠিত বাড়িটি নিয়েই একটি গ্রাম, মৌজা রয়েছে।সুতরাং সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত সত্য ও সঠিক পূর্ণাঙ্গ তথ্য হল একটি বাড়ি নিয়েই একটি গ্রাম।আজ অবধি মাওলানা আব্বাস আলী (র:)ইসলামাবাদীর অধ:স্তন উত্তরাধিকারীগণ ঐ বাড়িতেই বসবাস করছেন।অত:পর ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে তিনির পঞ্চম পুত্র মৌলভী আব্দুল মজিদ সাহেব খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোনীত হলে নিজ অর্থায়নে ভুমি ক্রয় করে খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদ’র অনতিদুরে ইসলামাবাদ পোস্ট অফিস স্থাপন করেন।আরো উল্লেখ করা আবশ্যক যে, মাওলানা আব্বাস আলী (র:)ইসলামাবাদীর তৃতীয় পুত্র শায়খ হাফিজ, কারী মাওলানা আব্দুল করিম (র:)নামের শেষে কৌডিয়া সংযুক্ত।অন্যভাবে বললে,শায়খে কৌডিয়া বললেই হাফিজ, কারী মাওলানা আব্দুল করিম (র:)আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সুপরিচিত এবং মাওলানা ইসলামাবাদীর সন্তান বা উত্তরাধিকারীর নামই বুঝায়।তাছাড়া এলাকাটি কৌডিয়া পরগণার অন্তর্গত বলে তিনির নামের সাথে কৌডিযা পরগণার নামও সমুজ্জল।অতএব আমরা উপরের আলোচনার আালোকে সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত সত্য বলে একমত হবার ক্ষেত্রে উপনীত হতে পারলাম যে, মরহুম মাওলানা আব্বাস আলী (র:)ইসলামাবাদী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি বাড়ি, একটি গ্রাম(একটি বাড়িই একটি গ্রাম)১৫ বিঘায় স্থাপিত গ্রামটি ও একটি মৌজার নামকরণ ইসলামাবাদ প্রতিষ্ঠা পায় এবং তদীয় পঞ্চম পুত্র খাজাঞ্চী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুল মজিদ কর্তৃক ডাকঘর ইসলামাবাদ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। (কৈফিয়ত:এছাড়া যদি অন্য কারো কাছে কোন তথ্য থেকে থাকে, জানালে সংযুক্ত করার আশা রাখি) লেখক-মিজানুর রহমান মিজান, প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক, চান মিয়া স্মৃতি পাঠাগার, ডাকঘর রাজাগঞ্জ বাজার, বিশ্বনাথ,সিলেট।.
ডে-নাইট-নিউজ / মিজানুর রহমান মিজান
আপনার মতামত লিখুন: