.
জাল দলিল সৃজন করে প্রতিপক্ষের জমি গ্রাস করার হীন উদ্দেশ্যে লক্ষীপুর ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে ২৬২/১৬ নম্বর মামলা দায়ের করে বিপাকে পড়েছেন লক্ষীপুর পৌর এলাকার সাহাপুর গ্রামের সাহেব বাড়ির মৃত জর্জ ফিনির সন্তান উইলিয়াম ফিনি, মেলবিন ফিনি, জেরনিল ফিনি, জেরেল ফিনি ও সেরেল ফিনি। একই বাড়ির সিরেল ফিনিকে বিবাদী শ্রেণীভুক্ত করে উক্ত মামলা দায়ের করা হয়। .
.
.
জাল দলিল সৃজন করে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়েরের বিষয়টি আদালতে প্রমাণিত হলে আদালত মামলাটি খারিজের আদেশসহ বিবাদীপক্ষের অনুকূলে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণমূলক জরিমানাসহ মামলাটি খারিজের রায় দেন এবং বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের আদেশ প্রদান করেন লক্ষীপুর ল্যান্ডসার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক (যুগ্ম জেলা জজ) মুহাম্মদ মুনির হোসাঈন। গত ৩০ এপ্রিল জনাকীর্ণ আদালতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। বিজ্ঞ বিচারক স্বয়ং বাদী হয়ে উইলিয়াম ফিনি, মেলবিন ফিনি, জেরনিল ফিনি, জেরেল ফিনি ও সেরেল ফিনির বিরুদ্ধে লক্ষীপুর বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, সদর আমলী আদালতে দঃ বিঃ ১৯৩/ ৪৬৬/ ৪৭১ ধারায় মামলা দায়ের করেন।.
.
.
আদালত সূত্রে জানা যায়, সাহাপুর গ্রামের সাহেব বাড়ির উইলিয়াম ফিনি গং বাদী হয়ে সিরেল ফিনি গংকে বিবাদী করে ২০১৬ সালে লক্ষীপুর ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে ২৬২নং এলএসটি মামলা দায়ের করেন। সাহাপুর মৌজার আর এস ১৯৭নং খতিয়ানের ৩৫ শতাংশ জমির রেকর্ড সংশোধনের দাবিতে উক্ত মামলাদায়ের করা হয়। .
.
.
দাবিকৃত জমির মালিকানার প্রমাণ স্বরূপ লক্ষীপুর এসআর অফিসে ১৯৬২ইং সনের ৯ জুন তারিখে রেজিঃকৃত ৮৪৫২ নম্বর দলিলের (জার্মান প্রযুক্তির দ্বারা প্রমাণিত দুই টাকা মূল্যের তিনটি জাল রাজস্ব স্ট্যাম্পে লিখা) সহিমোহর নকল দাখিল করা হয়। মামলার বিচার চলাকালীন ২০২৩ সালের ২ মার্চ তারিখে অভিযুক্ত জেরেল ফিনি বিজ্ঞ বিচারকের সম্মুখে সকল বাদীগণের পক্ষে মিথ্যা স্বাক্ষ্য ও মালিকানার স্বপক্ষ্যে হলফনামা দাখিল করেন।.
.
এদিকে বিবাদী পক্ষ বাদীপক্ষের দাবিকৃত ৮৪৫২ নম্বর দলিলের প্রকৃত গ্রহীতা জর্জ ফিনি নয় মর্মে আদালতে প্রমাণ উত্থাপন করেন। ল²ীপুর এসআর অফিসে ১৯৬২ইং সনের ৯ জুন তারিখে রেজিঃকৃত ৮৪৫২ নম্বর দলিলের প্রকৃত গ্রহীতা সুলতান আহাম্মদ গংয়ের নামের স্থলে বাদীগণ নিজেদেরকে ওয়ারিশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে তাদের মৃত পিতা জর্জ ফিনির নামে ৮৪৫২ নম্বর দলিলের সহিমোহর নকল সৃজন করেন।.
.
.
বাদীপক্ষের এহেন জাল-জালিয়াতির ঘটনাটি বিবাদী পক্ষ আদালতে পমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারক ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণমুলক খরচাসহ মামলাটি খারিজ করেন। ক্ষতিপূরণমূলক খরচার ২০ হাজার টাকা ৯০ দিনের মধ্যে বিবাদীগণের বরাবরে পরিশোধ করে ট্রাইব্যুনালকে লিখিতভাবে অবগত করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়াও জমির প্রকৃত মালিক টেলি ফিনি এবং তার ওয়ারিশদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করার হীন উদ্দেশ্যে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে লক্ষীপুর এসআর অফিসে ১৯৬২ইং সনের ৯ জুন তারিখে রেজিঃকৃত ৮৪৫২ নম্বর দলিলের প্রকৃত গ্রহীতা সুলতান আহাম্মদ গংয়ের নামের স্থলে নিজেদের মৃত পিতা জর্জ ফিনির নামে সহিমোহর নকল সৃজন এবং উক্ত দলিল সঠিক মর্মে জ্ঞাতসারে আদালতে স্বাক্ষ্য ও হলফনামা দাখিল করায় মামলার বাদী উইলিয়াম ফিনি গংয়ের বিরুদ্ধে দঃ বিঃ ১৯৩/ ৪৬৬/ ৪৭১ ধারায় বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট লক্ষীপুর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেয়া হয়। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত সহিমোহর নকলটি জব্দ করা হয়। মামলার চুড়ান্ত বিচার নিস্পত্তির পর সৃজিত সহিমোহর নকলটি ধ্বংস করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট প্রহলাদ চন্দ্র সাহা রবি এবং বিবাদী পক্ষে ছিলেন এডভোকেট মোঃ সাহাদাত হোসেন।.
.
ডে-নাইট-নিউজ / লক্ষীপুর প্রতিনিধি
আপনার মতামত লিখুন: