গত কয়েক বছর ধরে থার্টি ফার্স্ট নাইটে (ইংরেজি নববর্ষ) ফানুস ওড়ানো ও আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনা। ফানুস থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে দুই শতাধিক আগুন ও আতশবাজির শব্দে হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে। এবার কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফানুস ও আতশবাজি বিক্রি কিংবা ওড়ানো/ফোটানোর সময় হাতেনাতে ধরা পড়লেই ব্যবস্থা নেবে তারা।.
.
.
এবারও থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন নিরাপদ পরিবেশে সম্পন্ন করতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের ফানুস ওড়ানো, আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও মশাল মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ডিএমপি।.
ডিএমপি বলছে, ফানুস ওড়ানো অবস্থায় অথবা আতশবাজি ফোটানো অবস্থায় কেউ যদি হাতেনাতে ধরা পড়ে তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।.
২০২২ সালে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে ফানুস ওড়াতে গিয়ে রাজধানীর অন্তত ১০টি স্থানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মাতুয়াইল স্কুল রোডের একটি বাড়িতে ফানুস থেকে বড় ধরনের আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। একই রাতে ঢাকার বাইরে এ সংখ্যা ছিল প্রায় ১৯০টি। এসব ঘটনায় একদিকে যেমন মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়, অন্যদিকে আগুন আতঙ্কে ম্লান হয় নববর্ষ উদযাপন।.
এসব দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের কয়েক দিন আগে থেকেই কাজ শুরু করেছে বাহিনীটি। বিশেষ এ রাতে সব ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য, আতশবাজি, পটকা ফোটানো বা ফানুস ওড়ানো বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাও এরই মধ্যে নেওয়া হয়েছে।.
.
.
সম্প্রতি ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং- III/৭৬) এর ২৮ ও ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১২টা থেকে শুভ বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো, ফানুস ওড়ানো, মশাল মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ ঘোষণা করছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে।’.
ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন ধরে রাজধানীর যেসব এলাকায় ফানুস বিক্রি হয় সেসব জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেছে ডিএমপির বিভিন্ন থানা পুলিশ। স্থানীয় ফানুস বিক্রেতাদের গতবারের অগ্নিদুর্ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ফানুস বিক্রি না করতে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া ডিএমপির প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নির্দিষ্ট থানাধীন এলাকায় যেন কোনোভাবে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে ফানুস বিক্রি ও ওড়ানো না হয়। এছাড়া কেউ যদি ফানুস ওড়ায় বা আতশবাজি ফোটায় তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।.
.
.
নগরবাসীকে নিজ উদ্যোগে সচেতন হওয়ার পরামর্শ জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। কারও আনন্দের ফল যেন কারও কান্নার কারণ না হয়। কারণ ফানুস উড়ে গিয়ে কোনো বস্তি অথবা কারও বাসাবাড়িতে পড়লে অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। এছাড়া অভিভাকদের উচিত তাদের সন্তানকে এ ব্যাপারে সচেতন করা। ফানুস-আতশবাজির পরিবর্তে ঘরোয়া কোনো অনুষ্ঠান করা যেতে পারে।’. .
ডে-নাইট-নিউজ /
আপনার মতামত লিখুন: