প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের আইডি চিহ্নিত করত ওরা। পরে ‘মেয়ে আইডি’ দিয়ে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাত। রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করলেই শুরু হতো মিষ্টি ভাষায় কথোপকথন। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ডাকা হতো কোনো আবাসিক হোটেল কিংবা বাসায়।.
আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে দেখা করতে গেলেই ঘটত মহা বিপত্তি। নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে দাবি করা হতো মোটা অঙ্কের টাকা। মান-সম্মানের ভয়ে বাধ্য হয়েই দাবি করা টাকা দিয়ে দিতেন ভুক্তভোগী। এভাবে গত দুই বছরে অর্ধশত ধনাঢ্য ও করপোরেট ব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।.
সম্প্রতি একটি অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল ভোরে ওই চক্রের দুই নারী সদস্যসহ সাতজনকে রাজধানীর ভাটারা ও দক্ষিণখান থেকে গ্রেফতার করে র্যাব-১। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- আল মাহমুদ ওরফে মামুন, আকরাম হোসেন ওরফে আকিব, মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া, তানিয়া আক্তার, মো. রুবেল, মো. মহসীন ও মো. ইমরান। তাদের কাছ থেকে অশ্লীল ছবি ও গোপন ভিডিও ধারণ কাজে ব্যবহৃত ১৪টি মোবাইল ফোন এবং দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন বলেন, গ্রেফতার মাস্তুরা আক্তার প্রিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল এক ভুক্তভোগীর।.
পরে তাকে একটি অভিজাত আবাসিক এলাকার বাসায় নিয়ে একই পদ্ধতিতে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে ৫ লাখ টাকা আদায় করে চক্রটি। পরে আরও ২ লাখ টাকা দাবি করলে ওই ভুক্তভোগী র্যাব-১-এ লিখিত অভিযোগ করেন। গ্রেফতার দুই নারী সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার আল মাহমুদ মামুনের স্ত্রী তানিয়া আক্তার। তারা দুজন পরিকল্পিতভাবে এ কাজে জড়িত। এ ছাড়া গ্রেফতার প্রিয়া একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।.
রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় প্রতারণার মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ ব্যয় করে বিলাসবহুল জীবন যাপন করে আসছিল চক্রটি। এ ধরনের প্রতারণা এড়াতে অপরিচিত কারও ডাকে নির্জন জায়গায় না যাওয়ার পরামর্শ দেন কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন.
ডে-নাইট-নিউজ / ক্রাইম রিপোর্টার, কবির হোসেন (শান্ত)
আপনার মতামত লিখুন: