• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

বিশ্বনাথে আধা কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা মেরামত করেন শাহ রফিকুল ইসলাম রাসেল


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:৪৯ পিএম;
বিশ্বনাথে আধা কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা মেরামত করেন শাহ রফিকুল ইসলাম রাসেল
বিশ্বনাথে আধা কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা মেরামত করেন শাহ রফিকুল ইসলাম রাসেল

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী খাজাঞ্চী ইউনিয়নের ০৫ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম নোয়াগাঁও গ্রামের  বাসিন্দা শাহ রফিকুল ইসলাম রাসেল। তিনির পিতা- পশ্চিম নোয়াগাঁও নিবাসী পীর সামছুল ইসলাম তোতা মিয়া। শাহ রফিকুল ইসলাম রাসেল সিলেট এম.সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রেজুয়েশন করেছেন। কাঁদায় হাবুডুবু খাওয়া রাস্তার মেরামতের কাজ করছেন তিনি একাই। বর্ষা এলে রাস্তার বেহাল দশায় ঘর ফেরা হয় কাঁদা মাড়িয়ে। এলাকাবাসীর চলাচলে সমস্যা লাঘব করতে কোদাল হাতে গর্তে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করেও লাভ হয়না। বৃষ্টি এলে রাস্তা আবার ডুবে যায়। কিন্ত থেমে থাকার পাত্র নয় তিনি। আর কেউ না এলেও তিনি রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে এ পরিশ্রম করেই যাচ্ছেন। মানবতার কল্যানে নিবেদিত অদম্য সাহসী এক যুবক শাহ রফিকুল ইসলাম রাসেল। .

বহুল আলোচিত সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের পশ্চিম নোয়াগাঁও ও তেলিকুনা গ্রামের পাশ ঘেঁষা শ্রীমুখ গ্রামের উদ্দেশ্যে আমাদের যাত্রার মুল লক্ষ্য নিয়ে এগুলে রফিকুলের মেরামতের রাস্তা ধরেই যেতে হয়। উপজেলার খাজাঞ্চী- নয়াবন্দর বায়া বিশ্বনাথ পাকা রাস্তা থেকে শ্রীমুখের দূরত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার। পাকা সড়ক থেকে পশ্চিম দিকে নোয়াগাঁও মুখি প্রায় অর্ধ কিলোমিটার পাকা রাস্তার পর অর্ধ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে। এর পর প্রায় অর্ধ কিলোমিটার পথ বর্ষা কালে নৌকা যোগে পাড়ি দিয়ে শ্রীমুখ পৌছাতে হয়। শ্রীমুখের বাসিন্দাদের কোন রাস্তা নেই। বর্ষা এলে নৌকা আর শীত এলে মাঠ দিয়ে হাট বাজার শহর,বন্দরে তাদের প্রয়োজন সেরে নিয়ে জীবন যাপন করেন। একটি বাড়ি নিয়ে একটি গ্রাম গঠিত।  এ গ্রামের বাসিন্দা ও কম।.

সম্প্রতি আমার গন্তব্য ছিল এশিয়ার সবচেয়ে চোট্ট গ্রাম দাবীদার শ্রীমূখে। উদ্দেশ্য ছিল শ্রীমুখের কিছু তথ্য সংগ্রহ করা। এশিয়ার সবচেয়ে ছোট্ট গ্রাম বলে দাবী উত্থাপিত এই গ্রাম নিয়ে এ পর্যন্ত বহু ডকুমেন্টস প্রকাশ ও পত্র-পত্রিকায় লেখা-লেখি হয়েছে। .

প্রধান সড়ক থেকে নেমে আধা কিঃমিঃ রাস্তার কাঁদা মাটি, খানা খন্দ পেরিয়ে এরপর নৌকাযোগে গন্তব্য স্তলে আমি পৌছি। পতিমধ্যে দেখা হল ২নং খাজাঞ্চি ইউনিয়নের ৫নং ওয়াডের পশ্চিম নোয়াগাঁও গ্রামের শাহ রফিকুল ইসলাম রাসেলের সাথে। খানা খন্দে আটকে থাকা পানি নিস্কাষনের জন্য কোদাল দিয়ে খাল কেটে দিচ্ছেন তিনি। বৃষ্টিতে ভিজে একা-একা কেন মেরামত করছেন এই রাস্তা জানতে চাইলাম তাঁর নিকট। রাস্তার এমন অবস্তাই বা কেন? তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে যা বলেন তাতে রীতিমতো অবাক হওয়ার মত। তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে যখন উন্নয়নের জয় জয়কার চলছে, দেশ যখন ডিজিটাল বাংলাদেশে রুপান্তরিত হচ্ছে। গ্রাম হবে শহর। কিন্তু ঠিক সেই মুহুর্তে যেন বাংলাদেশের মধ্যে কোন ছিটমহলে বসবাস করছি আমরা। এই গ্রামের অধিকাংশ কোমলমতি শিশুরা রাস্তার জন্য স্কুলে যেতে পারেনা আজ। কেউ যদি অসুস্ত হয় তাহলে পলো দিয়ে বহন করে নিয়ে যেতে হয় চিকিৎসা কেন্দ্রে। আমার পিতা পীর শাহ শামছুল ইসলাম তোতা মিয়া চিশতী এ পর্যন্ত ৭ বার সরকারী ভাবে এই রাস্তাটি স্কিম করিয়ে রাস্তার মাটি ভরাট কাজ করিয়েছেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিশ্বনাথ ওসমানীনগর আসনের মাননীয় সাংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের স্মরনাপন্ন হয়ে নোয়াগাঁও পিচের মূখ হইতে পশ্চিম নোয়াগাও জামে মসজিদ পযন্ত এই আধা কিঃমিঃ রাস্তা পাকাকরণের জন্য গ্রান্ট করিয়েছেন। কিন্তু ৫ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও বাজেট এখনও আসেনাই।.

সিলেট এম.সি.বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রেজুয়েশন কম্পিলিট করা শাহ রফিকুল ইসলাম রাসেল বলেন- প্রতি দুই তিন দিন পর পর আমি এই ভাবে খানা খন্দ ভরাট করে রাখি যাতে পানি জমে কাঁদার সৃষ্টি না হয়। .

আমরা এভাবে আর কতদিন চলব?ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। অথচ সংশ্লিষ্ট কেউ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছেন না। এতে আমরা হতাশ। .

গণমাধ্যম কর্মীদের পেয়ে শাহ রফিকুল ইসলাম রাসেল দাবী জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব এই রাস্তাটি পাকা করণ করে এলাকাবাসী দীর্ঘদিনের দূদর্শা থেকে যেন মুক্তি দেওয়া হয়, তিনি রাস্তাটি পাকাকরণে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সিলেট ০২-(বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর)এর  মাননীয় সংসদ সদস্য মোকাব্বীর খানের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।. .

ডে-নাইট-নিউজ / মুহাম্মদ সায়েস্তা মিয়া, বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধিঃ

সারাদেশ বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ