লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরে স্কুল শিক্ষার্থী আদিবা হাসান চৌধুরী (১৫) ও তার ছোট-বোন আফিয়া হাসান চৌধুরী (১১) তাদের মা তাহমিনা আক্তার লিপির অবরুদ্ধ অবস্থা তাদের নিজ ঘরে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দুই-বোন ও মা অবরুদ্ধ ছিলেন। বৃহস্প্রতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. হাসান মোস্তফা স্বপন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।.
এর-আগে, বুধবার রাতে লক্ষ্মীপুর টু রায়পুর সড়কের পাশে অবস্থিত চর বগা গ্রামের হায়দার চৌধুরী বাড়ীতে স্কুল ছাত্রী আদিবা তার বোন আফিয়া ও তাদের মা লিপি ঘরের পিছনের দরজার তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। এতে বাড়ীর কয়েকজন ব্যক্তি ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ঘরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। বিচ্ছিন্ন করা হয় ঘরের পানির লাইন ও বিদ্যুৎ সংযোগ। যার ফলে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে ঘরের ভেতরে।
খবর নিয়ে যান গেছে, স্কুলছাত্রী আদিবার বাবা হাসান তারেক ১১ বছর পূর্ব একটি দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করে। তার মা লিপি তাদের দুই বোনকে নিয়ে এ ঘরে বসবাস করে আসছে। তখন বাড়ির কেউ তাদের কোন খোঁজখবর রাখেনি। হঠাৎ ২০১৮ সালে তাদের মা এক প্রবাসীকে গোপনে বিয়ে করে। দুই বোন জানলেও বাড়ীর কেউ বিষয়টি জানতো না। সম্প্রতি তার মার বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ হলে, শুরু হয় তাদের ওপর অবহেলা ও মানুষিক যন্ত্রণা। একপর্যায়ে তারা এসব অতিষ্ঠ হয়ে নানার বাড়িতে চলে যায়। চলতি মাসের ৭ সেপ্টেম্বর দুই-বোন তার মার সঙ্গে তাদের নানার বাড়িতে বেড়াতে যান। একদিন পর খবর পান তার চাচা হোসেন তারেক চৌধুরী পাবেল তাদের ঘরের দরজায় তালা দিয়েছে। এ নিয়ে রায়পুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আদিবার মা।
ভুক্তভোগী লিপি জানান, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে দুঃখ-কষ্টে দুই মেয়ে নিয়ে বসবাস করে আসছি। স্বামীর রেখে যাওয়া ঘরে। কখনও শ্বশুর বাড়ির কেউ বিন্দুমাত্র সহয়তা করেনি। শুধু অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করছে আমার বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে আমি বিয়ে করি। তবু্ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার বন্ধ হয়নি শ্বশুর বাড়ির লোকজনের। তারা সর্বশেষ আমার দেবরকে উস্কানি দিয়ে আমার ঘরে দুই দরজায় দুইটি তালা মেরে দেয়। গতরাতে মেয়েদের নিয়ে পিছনের দরজার তালা ভেঙে ঘরে ঢুকতে হয়। ঘরে প্রবেশ করার সঙ্গে-সঙ্গেই তারা বাহির থেকে পানির লাইন ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়। সারারাত আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে রাত টা পার করলাম দুই মেয়ে নিয়ে। আমি আমার অধিকার চেয়ে দুই মেয়ে অধিকার ও তাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এ বাড়িতে থাকতে চায়।
একই বাড়ীর বাসিন্দা কাওসার উজ্জামান চৌধুরীসহ একাধিক ব্যক্তি সাংবাদিকদের উত্তেজিত হয়ে জানান, হাসান তারেকের স্ত্রী লিপি তার মৃত্যুর পর থেকে দুই মেয়ে নিয়ে বসবাস করে আসছে এ বাড়ীতে। যেতু সেই এখন বিয়ে করছে। তার এখন থাকার সুযোগ নেই। তার ঘরে তার আপন দেবর পাবেল তারা মেরেছে। তার ও দাবি লিপি এ বাড়ীতে থাকতে পারবে না। কারণ লিপির স্বভাব চরিত্র ভালো না বলে দাবি তাদের।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া জানান, অবরুদ্ধ নয় মা-মেয়ে। তারা তাদের ঘরে রাতে তালা ভেঙে ঢুকছে। বর্তমানে মা ও দুই মেয়ে তাদের ঘরে আছে। যদি কেউ পরবর্তীতে সমস্যা করে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।.
.
ডে-নাইট-নিউজ /
আপনার মতামত লিখুন: