বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল হত্যার জেরে সিলেটে ছাত্রদলের মিছিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুরের ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গত সোমবার (০৭ নভেম্বর) রাতে কতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের আটকের পর মঙ্গলবার ৫৪ ধারা গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো;- ইশতিয়াক আহমদ রাজু, বদরুল ইসলাম নজরুল,মিলাদ আহমদ ও রাজীব আহমদ। এরা ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন,বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুরের ঘটনায় ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে এঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। তাই ৫৪ ধারায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
গত রোববার (০৬ নভেম্বর) রাত ৯ টার দিকে সিলেট নগরের আম্বরখানা বড়বাজার এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক নেতা আ ফ ম কামাল। এ হত্যার প্রতিবাদে রাত ১১ টার দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে লাঠিসোটা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা এবং তাদের সাথে যোগ দেয় আরও অনেকে।
মিছিল থেকে সিলেট ও জেলা ও আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভা উপলক্ষ্যে মহানগরের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত তোরণ ও ব্যানার-ফেস্টুন ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া সিলেট জেলা ও আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভাস্থল রিকাবীবাজার এলাকার কবি নজরুল অডিটরিয়ামে নির্মিত বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসম্বলিত বিলবোর্ড ভাঙচুর করা হয়।রিকাবীবাজারের কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে রোববার সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার (০৭ নভেম্বর) ছিলো জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভা। সেজন্য রিকাবিবাজার পয়েন্টসহ আশপাশে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবিসম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন ও বিলবোর্ড টানিয়েছিলেন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এসব ব্যানার-ফেস্টুন ও বিলবোর্ড সেদিন রাতে ভাঙচুর করা হয়।
এদিকে,বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুরের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রদলকে ধাওয়া দেন। দুপক্ষের মাঝে বেশ কয়েকবার ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে এসময়। এছাড়াও এসময় কয়েকটি দোকানের শাটার ও একটি প্রাইভেট কার ভাঙচুর করা হয়। একটি মোটরসাইকলেও আগুন দিয়ে পুড়ানো হয় এসময়।
খবর পেয়ে দ্রুত কোতোয়ালি থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল সিলেট বিমানবন্দর এলাকা থেকে আম্বরখানা বড়বাজার হয়ে গোয়াইটুলার দিকে যাচ্ছিলেন। তার গাড়িকে অনুসরণ করছিল দুটি মোটরসাইকেল। বড়বাজার ১১৮ নং বাসার সামনে কামালের গাড়ির গতিরোধ করে বাইক আরোহীরা। পরে তাকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা কামালকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই কামাল মারা যান জানিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান শামছুল ইসলাম বেলন,কামালের দেহে ২৫টি ছুরিকাঘাত করা হয়। তার বাঁ হাতে ১৬টি, বাম বগলের নিচে ২টি, বুকের বামপাশে ১টি ও বাম পায়ে ৬টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন,বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুরের ঘটনায় ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে এঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। তাই ৫৪ ধারায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।.
ডে-নাইট-নিউজ / বিশেষ প্রতিনিধি:
আপনার মতামত লিখুন: