প্রাণি সম্পদ বিভাগে চিকিৎসকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরশহরসহ অন্যান্য হাটবাজারগুলোতে অবাধে গবাদিপশু জবাই করে মাংস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
জবাই করা পশুর শরীরে কোনো রোগ-বালাই রয়েছে কিনা এমন কোনো ধারণাও রাখেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা। একদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরব ভ‚মিকা, অন্যদিকে জনসচেতনতার অভাবের মধ্যে দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও পৌর শহরে চলছে পশু জবাইসহ মাংস ক্রয়-বিক্রয়। আইন প্রয়োগের দায়িত্ব প্রাণি স¤পদ ও পৌরসভার হলেও তাদের কোনো তৎপরতা নেই বললেই চলে। এতে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌরসভা এলাকায় প্রতিদিন অন্তত ১০টি গরু এবং অন্তত ২৫টি ছাগল ও ভেড়া জবাই করা হয়। শুক্রবার ও সোমবার সাপ্তাহিক হাট বসে। হাটের দিনে বেশি গরু, ছাগল ও ভেড়া জবাই করা হয়। প্রতিটি গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্বে একজন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও এই নিয়ম মানা হচ্ছে না।
গতকাল সোমবার সকালে ফুলবাড়ী পৌর বাজারের মাংস সেডসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকটি বাজারে ব্যবসায়ীরা গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া জবাই করে মাংস বিক্রি করছেন। লোকচক্ষুর অন্তরালে নিজ খেয়ালখুশি মতো জবাই করা গবাদিপশু বাজারে উচ্চমূল্যে বিক্রি করেন তারা।
পৌর শহরের বাসিন্দা আলী আকবর, আসাদুল ইসলাম ও উত্তর রঘুনাথপুর গ্রামের মহিদুল ইসলাম মাজু বলেন, পশু অসুস্থ নাকি সুস্থ ছিল আমরা তা জানি না। নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাই করার আগে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছাড়পত্র এবং পশুর শরীরে সিল দেবেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের তদারকি না থাকায় লোকজন মারা যাওয়া গবাদিপশুর মাংস খাচ্ছে নাকি রোগাক্রান্ত গরু-মহিষ-ছাগল-ভেড়ার মাংস খাচ্ছে, তা বোঝার কোনো উপায় নেই।
গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোনো ছাড়পত্র আছে কি নেই-এমন প্রশ্নের জবাবে মাংস ব্যবসায়ী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বেশির ভাগ গরু ভালো থাকায় ছাড়পত্র নেওয়া হয় না। তবে গত মাসের মধ্যে কোনো পশু প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তার কাছ থেকে পরীক্ষা করিয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন কি না-এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেননি। তবে পৌরসভার কর্মচারীরা মাঝে মাঝে আসেন বলে জানান তিনি।
উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর জগদীশ চন্দ্র বলেন, মাঝেমধ্যে বাজার তদারকি করে থাকি। গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রাণিস¤পদ দপ্তরের কাজ। এ ব্যাপারে মাংস বিক্রেতাদের আমরা শুধু বোঝাতে পারি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আহসান হাবীব বলেন, প্রতিদিন পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার মতো জনবল আমাদের নেই। তবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া গবাদিপশুর মাংস খাওয়া ঠিক না। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা ও ছাড়পত্র দেওয়া পৌরসভার কাজ।
ফুলবাড়ী পৌর সচিব মাহবুবর রহমান বলেন, আমাদের গবাদিপশু পরীক্ষার জন্য নিজস্ব কোনো জনবল ও শেডঘর নেই। এ জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় না। তবে রোগাক্রান্ত কোন পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করা না হয় সেদিকে নজর রয়েছে পৌরসভার।
.
ডে-নাইট-নিউজ / প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
আপনার মতামত লিখুন: