• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

এক নিভৃতচারী সমাজ সেবক,সংগঠক জনাব আব্দুল হান্নান 


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: বুধবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, ০১:০২ পিএম;
এক নিভৃতচারী সমাজ সেবক,সংগঠক জনাব আব্দুল হান্নান 
এক নিভৃতচারী সমাজ সেবক,সংগঠক জনাব আব্দুল হান্নান 

এ পৃথিবীর বুকে আমাদের তথা মানব সমাজের আগমনের সহিত মৃত্যুর আলিঙ্গন রয়েছে মিতালী সমতায়। অর্থ্যাৎ জন্মিলে মৃত্যু অবধারিত।একই মুদ্রার এপিট ওপিট।মহান রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তিনির গুণ গান , তিনির প্রদত্ত নেয়ামতের শুকরিয়া আদায়, ভাল কাজের প্রতি মনোযোগি হওয়া, মন্দ বা নিষিদ্ধ কাজকর্ম পরিহার করে সুন্দর ও ভাল কাজে নিজকে উৎসর্গীত করা।আমরা পথ ভুলা হয়ে গেলে আলো ছড়াতে, সঠিক পথে চলতে, দিকনির্দেশনার নিমিত্তে পাঠিয়েছেন নবী ও রাসুল যুগে যুগে।ক্ষণস্থায়ী এ জীবনে আমরা যতটুকু সম্ভব ভাল কাজ করা উচিত বলে মনে করি।কারন পৃথিবীতে অমরত্ব লাভ কেহই করতে পারেননি, পারবেনও না। তবে অমরত্ব লাভের সুযোগ রয়েছে ভাল কাজ করে যেতে পারলে। কাজের মধ্যেই রয়েছে অমরত্বের সুযোগ।“মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য” এ বাক্যের অন্তর্নিহিত মর্মবাণীতে।মানুষের কল্যাণ করতে পারলে মানুষ চিরদিন কর্মকে মুল্যায়ন করে। অমরত্বের সুযোগ সৃষ্টি হয়। মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেয়া সম্ভব হয়।অপরদিকে কিছু কিছু কাজ রয়েছে তা করতে হলে চিত্তের সহিত বিত্তের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যম্ভাবী।কারন হিসাবে এখানে উল্লেখ করতে চাই, কোন কোন সময় দেখা যায় অনেকের টাকা আছে। কিন্তু ভাল কাজ করার মন মানসিকতার অভাব। কারো মন মানসিকতা ভাল কাজ করার ইচ্ছা থাকলেও অর্থের অভাবে সম্ভব হয়ে উঠে না।তাই শুধু চিত্ত বা বিত্ত হলেই সম্ভব নয় অনেক ক্ষেত্রে।সেক্ষেত্রে চিত্ত-বিত্তের সমন্বয় অপরিহার্য। .

    একটি আদর্শ, সুন্দর ও সুষ্ঠু সমাজ গঠন করতে হলে সহানুভুতি, সহমর্মিতা একে অন্যের প্রতি ভালবাসার সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের বিকল্প নেই। পরস্পর সহানুভুতি ও সহমর্মিতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সকল সৃষ্টি কুলের অধিকার সংরক্ষণ অবশ্যম্ভাবী।“মহান রাব্বুল আলামীন ন্যায়পরায়নতা, স্বদাচরণ এবং আত্মীয়-স্বজনকে দান করার আদেশ দিয়েছেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসঙ্গত কাজ এবং অবাধ্যতা করতে বারণ করেছেন”।হিংসা-বিদ্বেষ সমাজের সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মারাত্মক অন্তরায়।সমাজে জ্বলে উঠে অশান্তির আগুন।পানির অপর নাম জীবন। পানির দ্বারা শুধু মানুষ পিপাসা নিভৃত করে না, জীবন-ধারন করে অন্যান্য জীব-জন্তু, পশু পাখিও।ফসল ফলাতেও পানির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আবার অধিক পরিমাণে পানি হলে বন্যা হয়ে যায়। তাতে সকল দিকে ক্ষতির সমুহ কারন হয়ে দাড়ায়।ভাসিয়ে যেমন নেয়, পচাতেও সাহায্য করে। সুতরাং সমতা, সুষ্ঠু,সুষম ও পরিমিত পরিমাণ ব্যবহার একান্ত প্রয়োজন। প্রত্যেক মানুষের উপার্জিত বৈধ অর্থ বৈধ খাতে ব্যয় করার মধ্যে রয়েছে আলাদা তৃপ্তি,মনের প্রশান্তি।পরিবার পরিজনের ব্যয় নির্বাহিত করে উদ্ধৃতাংশ থেকে সমাজের অসহায় বঞ্চিত মানুষের কল্যাণে ব্যয় করা ও সমাজের কল্যাণার্থে ব্যয় করার তাগিদ রয়েছে ইসলামিক দিক থেকে যেমন, তেমনি সামাজিক ও সামাজিকতার দিক থেকেও।অপব্যয় করা, কৃপণতা করা নিষিদ্ধের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।সর্বক্ষেত্রে মধ্যম পন্থা অবলম্বন বাঞ্জনীয়।একজন মানুষ এ সকল চিন্তায় সামান্যতম প্রভাবিত হলেই তিনি হয়ে উঠেন অনায়াসে হৃদয়জ মানুষ হিসাবে।যে মানুষের হৃদয়ে মানুষের নির্মল ভালবাসায় কিঞ্চিৎ পরিমাণ হলেও মানুষের কল্যাণ কামনা করেন বা জাগ্রত হয়, সে মানুষ অল্প বিস্তর হলেও মানুষ,সমাজ ও সামাজিকতা অনুধাবন করে থাকেন যদিও তার পরিমাণ কম বেশী হয়।আমার আজকের লিখার শেষের দিকে এ কথাগুলি বলার কারন অবশ্যই আমি ব্যাখ্যা করব সবিস্তারে। .

    সকল প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামিনের যিনি আমি/আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং মানুষকে শ্রেষ্ঠ বলে ঘোষণা দিয়েছেন এ পৃথিবীর বুকে। আল্লাহর অপার দয়ামায়া, করুনার মাধ্যমে আমাদেরকে হেদায়েতের ও আলো দেখিয়েছেন সর্বশেষ, সর্বশ্রেষ্ট নবী হযরত মোহাম্মদ (স:)এর মাধ্যমে। পথহারা মানুষ পেয়েছে পথের দিশা,হয়েছেন আলোর দিশারী।গড়ে উঠেছে আদর্শ পরিবার, সুষ্ঠু সমাজ, সুষম অর্থনীতি।আমাদের মধ্যে ভুলের পরিমাণ থাকা স্বাভাবিক। তারপর ও আমাদের আন্তরিকতা যদি থাকে তবে শুধু টাকা পয়সা দিয়ে মানুষ বা সমাজের উন্নয়ন সাধন হয় না বা করা যায় না। মানুষ এবং সমাজের উন্নয়ন বা কল্যাণার্থে কাজ করার রয়েছে বহুবিধ পন্থা।অনেক সময় কথা দিয়ে, আচার আচরন ইত্যাদি দিয়েও কল্যাণ করা সম্ভব।প্রয়োজন আন্তরিকতা,ভালবাসা, মন মানসিকতার।আমি সম্পূর্ণ নির্ভরশীল মহান আল্লাহ তওফিক দিলে এ লেখাটি সম্পূর্ণ করার। আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। .

   ধনে-জনে আলোকিত (সিলেটের) বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন একটি ঐতিহ্যবাহী কৌড়িয়া পরগণার অন্তর্ভুক্ত ইউনিয়ন।যেখানে জন্ম নিয়েছেন অনেক কীর্তিমান মানুষ।যাঁদের মধ্যে কয়েকজনের নাম না নিলে কৃপণতার সামিল হয়ে যাবে।অথবা একটা দায়বদ্ধ ঋদ্ধতার অনুশোচনায় পড়ে যাচ্ছি বলে মনে হচ্ছে।সুতরাং আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমার একেকটি লেখায় সকল গুণীজনের নাম স্মরণ করতে।এখানে উল্লেখ করতেই হয়, অবসর প্রাপ্ত কর্ণেল মরহুম তৈয়বুর রহমান পাখিচিরী,মরহুম মাওলানা আব্দুল বারী ইসলামাবাদ, মরহুম মাওলানা ওলিউর রহমান (র:)তেলিকুনা, সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুল মজিদ ইসলামাবাদ (যিনি খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন স্থানেই  পোষ্ট অফিসের ভুমি দাতা এবং পোষ্ট অফিসের নামকরণ করেন ইসলামাবাদ, (এ বিষয়ে অন্য লেখায় আলোচনা করার প্রত্যয়ী প্রত্যাশা রাখি), অবসর প্রাপ্ত সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা শফিকুর রহমান পাখিচিরী, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সুপরিচিত মরহুম ডা: আবুল লেইছ ইসলামাবাদ,সালিশ জগতের ব্যক্তিত্বময় ব্যক্তি মরহুম সাবেক চেয়ারম্যান পীর লিয়াকত হোসেন হোসেন পুর,শিক্ষাবিদ ও সাউথ-ইস্ট ব্যাংকের ডিজি মরহুম আলতাফুর রহমান ঘাসিগাঁও প্রমুখ খাজাঞ্চীবাসীর আলোকবর্তিকা।এবার মুল বক্তব্যে যাবার চেষ্টায় হচ্ছি নিমজ্জিত। .

   খাজাঞ্চী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত হোসেন পুর একটি গ্রাম। যে গ্রামে ১৯৪০ সালের সাত ডিসেম্বর পিতামৃত আবরু মিয়া ও মাতামৃত পাখি বিবি দম্পতির কোল আলোকিত করে মোল্লাবাড়ি খ্যাত বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন পিতামাতার তৃতীয় সন্তান আলহাজ আব্দুল হান্নান।অত্যন্ত আদর যত্নে শিশুকাল অতিবাহিত করেন নিজ বাড়িতে পারিবারিক সুদৃঢ বন্ধনের মধ্য দিয়ে।কিন্তু ১৯৪৭ সালের পূর্বে অত্রাঞ্চলের মানুষ লন্ডন, আমেরিকার মত চাকুরী, অর্থনৈতিক উন্নয়নের নিমিত্তে চলে যেতেন কলিকাতা।তখন গ্রামের মানুষের মুখে মুখে ছিল কলিকাতার অপর নাম কালিমাটি। কালিমাটি থেকে কেহ ফিরে আসলে তিনিকে দেখার জন্য মানুষের ভীড় লেগে যেত।চাকুরী সুত্রে জনাব আব্দুল হান্নানের চাচা হাজী আছলম আলী ছিলেন কলিকাতার বাসিন্দা।তাই আদরের ভাতিজা আব্দুল হান্নানকে কলিকাতা নিয়ে যান চাচা আছলম আলী লেখাপড়া করানোর জন্য।সেখানে কলিকাতার জামসেদ পুর জেলার গুলমুরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন।প্রায় দু’বৎসর আব্দুল হান্নান সেখানে থেকে চলে আসেন নিজ বাড়িতে। অত:পর তিনি ভর্তি হন স্থানীয় ফুলচন্ডি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।পাঠশালার লেখাপড়া সমাপন করে তিনি কৃষি কাজে আত্মনিয়োগ করেন।এক সময়ে তিনি ব্যবসাকে ভালবেসে মুফতির বাজারে রাইছ মিল স্থাপন করেন।কিছুদিন তা পরিচালনা করে ১৯৭০ সালে সিলেট শহরের হাছন মার্কেটে ব্যবসা শুরু করেন।সে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তিনির ভাই কর্তৃক দীর্ঘদিন হয়েছে পরিচালিত।বর্তমানে ভাই অসুস্থতাজনিত কারনে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। .

    ১৯৫৪ সালে রাজনীতির সহিত সম্পৃক্ত হন যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনকালীন সময়ে।১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আসেন সিলেটের রেজিস্টারী মাঠে এক জনসভায়।শেখ মুজিবের ঐদিনের ভাষণ শুনে হান্নান সাহেব অভিভুত হয়ে যোগ দেন আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে।হয়ে উঠেন আওয়ামীলীগের একজন দক্ষ সংগঠক, কর্মী ও সমর্থক হিসাবে।আসে ১৯৭০ সালের নির্বাচন।বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নৌকা প্রতিক নিয়ে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানের ইয়াহিয়া-ভুট্রো শেখ মুজিবের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বিভিন্ন কুট-কৌশলের আশ্রয় নেয়। বাঙ্গালীর ন্যায্য দাবীকে দমিয়ে রাখার আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালায়। তাই ২৫ শে মার্চ রাতে সশ্রস্ত্র ও সুসজ্জিত একটি বাহিনীকে অতর্কিতে নিরস্ত্র বাঙ্গালীর উপর লেলিয়ে দেয়। ওরা নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। কি বিভিষিকাময় পরিবেশ।সারা দেশ জুড়ে আতংক, হতাশা ও শংকায় শংকিত পুরো জাতি।যে যেভাবে পারে শুরু হয় প্রতিরোধ।পাকবাহিনী শুরু করে ধরপাকড়, অত্যাচার,নির্মম নির্যাতন।এপ্রিলের প্রথমার্ধে পাকবাহিনী কর্তৃক খাজাঞ্চি রেলওয়ে ব্রীজের পূর্ব তীরে আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হান্নান,মরহুম লিলু মিয়া, মরহুম ডা: আব্দুল করিম, মরহুম তোয়াহিদ মিয়া গং আরো লোকজনের মাধ্যমে খনন করাতে থাকে ব্যাংকার।পশ্চিম তীরেও অনুরুপ ব্যাংকার, বাঁশ আনয়ন ও ব্রীজকে সুরক্ষিত রাখতে বাঁশের বেড়া দিতে অর্ডার করে প্রত্যেক গ্রামের প্রতিটি পরিবার আস্ত বাঁশ প্রদান করতে।দেয়া হয় নির্দেশ মত।না দিলে মেরে ফেলার ভয়।তাছাড়া চতুর্পাশ্বস্থ গ্রামের মানুষ দিয়ে পালাক্রমে ব্রীজ পাহারা দেয়ানো হত।একদিন রাতের বেলা দুই ঘটিকার সময় হানা দেয় পাকবাহিনী কিছু সংখ্যক রাজাকার সঙ্গে নিয়ে হোসেন পুর গ্রামে।খুজতে থাকে আব্দুল হান্নান, পীর লিয়াকত হোসেন গং আওয়ামীলীগ নেতা, কর্মী ব্যক্তিবর্গকে।ঐদিন ঘর থেকে লুকিয়ে বের হয়ে একত্রিত হন আব্দুল হান্নান, পীর লিয়াকত হোসেন ও বরই কান্দির রইছ আলী হোসেন পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিকটে।স্বল্প সময়ের ব্যবধানে প্রাণ বাঁচাতে যে যেদিকে পারেন বিচ্ছিন্ন হয়ে দৌড়াতে থাকেন। আব্দুল হান্নান ও রহিম পুর নিবাসী জহুর আলী কাটাখালি গোরস্তানে আশ্রয় নিয়ে রাত কাটান।গোরস্তানে থেকে ফজরের নামাজের পর পরই শুনতে পান দু’টি গুলির শব্দ।পাকসেনারা চলে গেলে এসে দেখেন হোসেন পুর গ্রামের খলিল উল্লাকে (পিতা রসিদ আলী) মসজিদের প্রশ্রাব খানায় বসা অবস্তায় এবং ছোরাব আলীকে (পিতা কটু মিয়া) ধরে নিয়ে খাজাঞ্চী রেলস্টেশন সংলগ্ন স্থানে স্থাপিত টিউবওয়েলের নিকটে বুকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে।ছোরাব আলী ছিলেন হাজী মকরম আলীর গৃহে চাকুরীতে।অন্য একদিন রমজান মাসে দুপুর বেলা আব্দুল হান্নানের ৬নং ভাই আব্দুল ছমদকে রেলস্টেশনে ধরে মারপিট করে। তখন সাবেক চেয়ারম্যান (খাজাঞ্চী ইউ/পি)আছকির মিয়া, কারী ইছাক আলী, তাদের বড় ভাই আব্দুল মন্নান অনেক কাকুতি মিনতি করে ছাড়িয়ে আনেন।অপর একদিন পীর লিয়াকত হোসেনসহ আরো দুই ভাইকে ধরে নিয়ে যায় সিলেট ক্যাডেট কলেজে।পীর লিয়াকত হোসেনের বড় ভাই ছিদ্দেক আলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছিলেন।অনেক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ যাত্রায় ও রক্ষা পান।ঐদিন পাকসেনারা জনাব আব্দুল মন্নানকে বলে যায়, আব্দুল হান্নান সাহেব সিলেট সার্কিট হাউজে যাবার জন্য। নতুবা তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হবে।তাদের কথামত পরদিন সিলেট সার্কিট হাউজে যান, সারেন্ডার করেন ও রাজাকারদের সহযোগিতা করার কথা বলে দেয়া হয়।এক্ষেত্রে তারা মিয়া নামক একজন ব্যক্তির সহযোগিতায় মুক্তি পান।এ ঘটনার কয়েকদিন পর লিলু মিয়া, আলহাজ ছমরু মিয়া, মজমিল আলী,ডা: আব্দুল করিম ও রন দাসকে ধরে নিয়ে যায়।এখানে উল্লেখ করা আবশ্যক যে ঐদিন অনেক মানুষকে ধরেছিল।এখানে ঘাসি গাঁও এর ছাদ মিয়াও (আলতাফুর রহমান) ধৃত ছিলেন। কিন্তু ছাদ মিয়ার স্কুল, কলেজের সকল কাগজ পত্রে আলতাফুর রহমান নাম থাকায় তিনিকে ছেড়ে দেয়।এরুপ বিভিন্ন উপলক্ষ্য দেখিয়ে পাঁচজন ব্যতীত সবাই ছাড়া পান।বিজয় দিবসের কয়েকদিন পূর্বে লামাকাজী থেকে পাকসেনা এবং ভুলাগঞ্জ গ্রাম থেকে মুক্তিবাহিনী উভয় দলের গুলি ছুড়াছুড়ি সন্ধ্যার সাথে সাথে আরম্ভ হলে ভুলাগঞ্জ গ্রামের সাবেক মেম্বার মন্তাজ আলীর স্ত্রী উরুতে গুলিবিদ্ধ হন।৩/৪ মাস পর তিনি মারা যান।অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার পর ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের কাংখিত বিজয় অর্জন হয়। .

     হান্নান সাহেবের প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া কম হলেও তিনি স্বশিক্ষিত।হোসেন পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালে এ পরিবার থেকে ১৮ শতক ভুমি প্রদান করা হয় এবং বাকি ১২ শতক ভুমি দান করেন মরহুম আলহাজ মখরম আলী।তাছাড়া আধুনিক শিক্ষার সাথে সমন্বয় রেখে.

 সৎ  দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষে এবং উদ্দেশ্য নিয়ে ২০০৪ সালের  লা জানুয়ারি বর্তমান ভূমি দাতা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম.

 সংগঠক আলহাজ্ব আব্দুল হান্নানের নিজ বাড়িতে খাজাঞ্চি একাডেমীর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।পরবর্তীতে উক্ত প্রতিষ্টান ২০০৫ সালে.

 তার নিজস্ব ভুমিতে এসে শিক্ষাকার্য পরিচালনা করে আজ অবধি সফলতার সাথে শিক্ষা বিস্তারে কাজ করে যাচ্ছেন২০০৯ খ্রীষ্টাব্দে খাজাঞ্চী একাডেমী জুনিয়র স্কুলের মর্যাদা লাভে সক্ষম হয় লেখাপড়ার মানোন্নয়ন ও প্রতি বৎসর কৃতিত্ব পূর্ণ ফলাফলের কারনে।২০১২ সালে প্রথম এসএসসি পরিক্ষায় শতভাগ সফলতা অর্জিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা ও ভুমিদাতা জনাব আব্দুল হান্নানের একক উদ্যোগ ও উদ্যমে অর্থ্যাৎ অর্থায়নে ৫০জন গরিব, অসহায় ছাত্র-ছাত্রী সম্পূর্ণ বিনা বেতনে পড়ার ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। .

 ২০১২ সালে প্রথম এসএসসি পরিক্ষায় শতভাগ সফলতা অর্জিত হয়। শুরু থেকে  পর্যন্ত সবক’টি পরিক্ষায় শতভাগ সফলতা অর্জন.

 করে দেশ বিদেশে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে খাজাঞ্চি একাডেমি এন্ড উচ্চ বিদ্যালয়স্কুলটি কলেজে উন্নীত হলে এলাকার শিক্ষা বিস্তারে অবদান রাখতে পারবে বলে বিজ্ঞজনদের ভাবনা।সুতরাং কলেজে উন্নীত করতে জনাব আব্দুল হান্নান ও তিনির বড় ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল শহিদ আপ্রাণ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।তাছাড়া এ পরিবার থেকে বিভিন্ন সময় গরীব ও অসহায় মানুষ বিভিন্ন প্রকার সাহায্য, সহযোগিতা পেয়ে থাকেন।তিনির প্রবাসী ছেলেরা শিক্ষানুরাগী হয়ে গড়ে উঠেছেন পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে।যার প্রত্যক্ষ প্রমাণ আমরা পেয়েছি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভুমিকা পালন করার মধ্য দিয়ে।অপরদিকে তিনির প্রতিষ্ঠিত খাজাঞ্চী একাডেমী এন্ড উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন নামকরণের ক্ষেত্রে জনাব আব্দুল হান্নান মহৎ ও উদার হৃদয়ের আরেকটি পরিচয় তিনির নামে বা কারো নামে নামকরণ না করে তিনি খাজাঞ্চী ইউনিয়নের নামে নামকরণ করে তা প্রতিষ্ঠিত করতে।তিনি পারতেন ব্যক্তি বা অন্য কোন নামকরণ করতে।অত্যন্ত সহজ, সরল, মহৎ, সৎ, উদার,নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন একজন মানুষ।আমি তিনির সম্পর্কে একটু অধিক সময় ও সান্নিধ্য পেয়েছি বিভিন্ন রুপে পরিচিত থাকার ফলে।।কারন আমি যখন উত্তর বিশ্বনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলাম। তখন তিনির বড় ছেলে জনাব আব্দুস শহিদ ছিলেন সে স্কুলের ছাত্র।যে কারনে তিনি স্কুলে যেতেন বিভিন্ন সময়ে।অপরদিকে আমি মদন মোহন কলেজে লেখাপড়া করতে ট্রেন যোগে যেতাম প্রতিদিন খাজাঞ্চী স্টেশন থেকে যাত্রী হয়ে। সিলেট যেতে এক মাত্র রাস্তা ছিল সিলেট-ছাতক রেললাইনের ট্রেন।প্রায়ই তিনিকে পেতাম ট্রেন যাত্রী রুপে।তিনির সান্নিধ্য এবং দুর থেকে দেখার সুমিষ্ট ফলাফল অত্যন্ত হৃদয়জ অনুভুতি পূর্ণ ছিল এবং রয়েছে।আমি বরাবরই তিনির আচার আচরণে পেয়েছি হৃদ্যতা,প্রীতি,স্নেহ, আদর ও ভালবাসার অতুলনীয়তা। .

      আমি মহান আল্লাহর দরবারে তিনির সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি বিনয়াবনত চিত্তে।সেই সাথে তিনির পরিবার পরিজনকেও আল্লাহ সুখ, শান্তিতে রাখুন এবং শিক্ষা বিস্তারে অবদান রেখে খাজাঞ্চীবাসীর আলোকবর্তিকা রুপে চির জাগরুক থাকুক প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলি। .

 .

লেখক মিজানুর রহমান মিজান প্রতিষ্ঠাতা চাঁন মিয়া স্মৃতি পাঠাগার, রাজাগঞ্জ বাজার, বিশ্বনাথ, সিলেট। . .

ডে-নাইট-নিউজ / মিজানুর রহমান মিজান 

সম্পাদকীয় বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ