লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করতে খুন করা হয় চালক মো. ইস্রাফিলকে (১৮)। ২৫ দিন পর খুনের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী রুবেলকে। একইসঙ্গে অটোরিকশার ক্রেতা বেলাল হোসেনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।.
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।.
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রথমে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশার ক্রেতা বেলালকে গ্রেফতারের পর ঘটনার মূল হোতা মোঃ রুবেল ও মোঃ ইউসুফকে শনাক্ত করা হয়। এরমধ্যে ইউসুফ পলাতক রয়েছে।.
আসামি রুবেল কমলনগরের চরলরেন্স ইউনিয়নের লরেন্স গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডের আব্দুর রব সর্দ্দার বাড়ির হোসেন আহম্মদের ছেলে ও বেলাল সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়নের কালিচর গ্রামের তোফায়েল আহমেদের ছেলে।.
পুলিশ জানায়, ইউছুফ গত ১৮ জানুয়ারি রাত ৭টার দিকে কমলনগরের চরলরেন্স বাজার থেকে চৌধুরীর বাজার যাওয়ার জন্য ইস্রফিলের অটোরিকশায় উঠে। পথে গনি মিয়া ব্রিকস ফিল্ড এলাকা থেকে রুবেলকে রিকশায় উঠানো হয়। এরপর ঘটনাস্থল চৌধুরীবাজার এলাকার পাকা রাস্তার মাথায় পৌঁছলে ইউসুফ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেবে বলে রিকশা থেকে নামেন। রুবেলও রিকশা থেকে নেমে যায়। এরপর পেছন থেকে রিকশায় বসে থাকা ইস্রাফিলের মুখ চেপে ধরে ঘাড় মটকিয়ে দেয় ইউসুফ। এসময় রুবেল তার দুহাত চেপে ধরে রাখে। পরে রাস্তায় নিয়ে গলা টিপে মৃত্যু নিশ্চিত করে অটোরিকশা, ইস্রাফিলের মোবাইলফোন ও পকেটে থাকা ৬০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। পরদিন ১৯ জানুয়ারি সকালে রাস্তার পাশে নিহতের মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। ওই দিনই নিহতের বাবা আবুল বাশার বাদী হয়ে অজ্ঞাতের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।.
এদিকে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে সদরের টুমচর এলাকা থেকে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশার ক্রেতা বেলালকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার জবানবন্দি অনুযায়ী রাতেই কমলনগরের চরলরেন্স এলাকা থেকে রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়ছে। পরে রুবেল হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। অটোরিকশা ছিনতাই করতেই রুবেল ও ইউসুফ হত্যার পর ইস্রাফিলের মরদেহ রাস্তায় ফেলে রেখে যায়।.
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মংনেথোয়াই মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানা, সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আলম চৌধুরী, ডিআইওয়ান একেএম আজিজুর রহমান মিয়া, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহাদাত হোসেন টিটু, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন, কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান ও রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমদাদুল হক প্রমুখ।.
লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, রহস্য উদঘাটনে শূন্য থেকে শুরু করে মামলার শতভাগ সফল হয়েছি। একজন আসামি পলাতক রয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকেও গ্রেফতার করা হবে। গ্রেফতার রুবেল ও বেলালকে আদালতে পাঠানো হবে। জেনে শুনে ছিনতাই হওয়া রিকশা কেনার দায়ে বেলালের বিরুদ্ধেও চার্জশীট দাখিল করা হবে।. .
ডে-নাইট-নিউজ / নাসির মাহমুদ লক্ষ্মীপুর (জেলা প্রতিনিধি):
আপনার মতামত লিখুন: