লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে রায়পুর উপজেলার এলকেএইচ উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী পদে পরীক্ষা ছাড়াই নিজস্ব লোক নিয়োগের অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুর রশিদ মোল্লা তার ছেলে হুমায়ুনকে এই পদে নিয়োগের জন্য পায়তারা করছেন। এ বিষয়ে প্রতিকার ছেয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট লিখত অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য মোঃ মনির হোসেন মোল্লা। এ নিয়ে সংশ্লীষ্টদের মাঝে ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।.
জানা যায়, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারী দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তী প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ৯ জন প্রার্থী আবেদন করে। যাছাই বাছাই শেষে গত ২৭ মার্চ নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য্য করে। উপজেলা শিক্ষা অফিসে নির্ধারিত সময়ে নিয়োগ কমিটির সকল সদস্য ও প্রার্থীগণ উপস্তিত হয়। কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ বিদ্যালয়ের সভাপতি পরীক্ষা গ্রহণ করবে না বলে ঘোষণা দেন। এক পর্যায়ে ডিজির প্রতিনিধি উত্তম কুমার সাহার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে, পরবর্তীতে পরীক্ষার তারিখ জানিয়ে দিবেন বলে তিনি বেরিয়ে যান।.
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সভাপতির ছেলে হুমায়ুন উক্ত পদে একজন প্রার্থী ছিলেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসে পরীক্ষা গ্রহণ করলে তাঁর ছেলে উত্তীর্ণ হতে পারবে না বিধায় তিনি সেখানে পরীক্ষা গ্রহণ করেন নি। পরবর্তীতে উক্ত পরীক্ষা বিদ্যালয়ে গ্রহণের জন্য নিয়োগ কমিটিকে বার বার চাপ দিতে থাকে। অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি যোগসাজশে পরীক্ষা ছাড়াই পূর্বের তারিখ দেখিয়ে হুমায়ুন কে প্রথম স্থান দেখিয়ে একটি ফলাফল প্রকাশের অপচেষ্টা করছেন। এতে মোটা অংকের টাকা লেনদেনের কথাও শুনা যাচ্ছে।.
চাকরি প্রত্যাশী রিজভী, নাছির, সোলায়মান ও নজরুল জানান, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেখে অফিস সহকারী পদে চাকরির জন্য আবেদন করি। নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিতও হই। কিন্তু সভাপতি পরীক্ষা নিবেন না বলে জানিয়ে আমাদের চলে আসতে বলেন। এখন শুনছি পরীক্ষা না নিয়েই সভাপতির ছেলেকে নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা করছেন। আমরা চাই দ্রুত পরীক্ষা গ্রহণ করে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হোক।.
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান অবৈধ পন্থায় নিয়োগ ও টাকা লেনদেনের কথা অস্বীকার করে বলেন, নির্ধারিত তারিখে নিয়োগ কমিটির সদস্য ও প্রার্থীগণ উপস্তিত হয়। কিন্তু সভাপতির অন্য কাজ থাকায় পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়নি। পরবর্তীতে ৭ এপ্রিল পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারীর কারনে তা সম্ভব হয়নি।.
দাতা সদস্য মোঃ মনির হোসেন মোল্লা জানান, বিধি মোতাবেক পরীক্ষা প্রহণের জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট আবেদন করি। আমি দীর্ঘ দিন থেকে কমিটিতে আছি, কখনো প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম পাইনি। তবে শুনছি সভাপতি তার ছেলেকে নিয়োগ দিতে প্রধান শিক্ষককে চাপ দিচ্ছেন।.
বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুর রশিদ মোল্লা অবৈধ পন্থায় ছেলেকে নিয়েগের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জেলা আ’লীগ সম্পাদকের সাথে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং থাকায় ঐ দিন পরীক্ষা নিতে পারিনি। প্রধান শিক্ষকের উপর দায় চাপিয়ে তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি প্রধান শিক্ষক কোন পক্ষ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে এই নিয়োগ পরীক্ষা বানচাল করেছে।.
নিয়োগ কমিটির সদস্য (ডিজির প্রতিনিধি) উত্তম কুমার সাহা বলেন, নির্ধারিত তারিখে আমরা পরীক্ষা নিতে যাই, হঠাৎ কোন কারণ ছাড়াই সভাপতি পরীক্ষা নিবেন না বলে ঘোষণা দেন। এক পর্যায়ে আমার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বেরিয়ে যান। পরবর্তীতে জানতে পারি ওনার ছেলেও নিয়োগ প্রার্থী। বিধি মোতাবেক তিনি নিয়োগ কমিটির সদস্যই থাকতে পারেন না।. .
ডে-নাইট-নিউজ / লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :
আপনার মতামত লিখুন: