• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলায় মাসুদকে বাঁচাতে রাজনৈতিক অপতৎপরতা


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১:৫৫ এএম;
যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলায় মাসুদকে বাঁচাতে রাজনৈতিক অপতৎপরতা
যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলায় মাসুদকে বাঁচাতে রাজনৈতিক অপতৎপরতা

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যা মামলায় মূল মাস্টারমাইন্ড আসবে কিনা এ নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি কুমিল্লার আ'লীগের দলীয় রাজনৈতিক বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী সমর্থকসহ আদালত পাড়া থেকে জনপদ পর্যন্ত নানা আলোচনার জন্ম দিয়ে চলছে এ মামলাটি। .

আলোচিত এ হত্যা মামলাটির মূল পরিকল্পনাকারীসহ সংশ্লিষ্ট আসামিদের বিচার ও শাস্তি প্রক্রিয়ায় কোনো অপতৎপরতা বাধা হয়ে দাঁড়ানোর আশঙ্কা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না বাদীপক্ষসহ তাদের স্বজনরা।.

হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হওয়ার পর মাস্টারমাইন্ড হিসেবে তিতাসের আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল সিকদারের নাম সামনে আসে। আর ঠিক তখন দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ভাই মো. মাসুদের নাম অন্তরালে চলে যায়। আর তার পরপরই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা ৩টি বিদেশি পিস্তলসহ গত ৯ মে রাতে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের নিমসার বাজার এলাকা থেকে মো. মাজহারুল ইসলাম সৈকত গ্রেপ্তার হন। মাজহারুল ইসলাম সৈকত দেবিদ্বারের বরকামতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যনের আবুল কালাম আজাদের আস্থভাজন। কথিত আছে ছাত্রলীগের এই পদটি চেয়ারম্যান আজাদের সমর্থনেই পেয়েছেন। এছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া মাজহারুল ইসলাম সৈকত চেয়ারম্যান আজাদের ভাই মাসুদের ঘনিষ্ঠ কর্মী বলে জানাগেছে। .

সম্প্রতি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশান আলী মাস্টারের ফোনালাপ ফাঁস হয়। ফোনালাপে আজাদকে বলতে শোনা গেছে, আসামি সোহেল সিকদারকে সামনে এগিয়ে আনতে হবে। অর্থাৎ সোহেল সিকদারকে প্রাধাণ্য দেওয়ার জন্য রোশান আলী মাস্টারকে অনুরোধ করেন চেয়ারম্যান আজাদ। .

এদিকে, সৈকত গ্রেপ্তার হওয়ার পর চেয়ারম্যান আজাদের ভাই মাসুদ গা ঢাকা দেন। গোপনে মালদ্বীপ পালানোর সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১১ মে ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মাসুদ। পরদিন দুপুরে মাসুদকে আদালতে পাঠানো হয়। শুরু হয় আদালতে বিচারিক কার্যক্রমের প্রথম ধাপ। আদালত মাসুদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন, আবার পরদিন একই আদালত সেই রিমান্ড বাতিলের আদেশ দেন। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত সেই স্থগিতাদেশ বাতিল করে দেন। এরপর উচ্চ আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. মাসুদের রিমান্ডের বিষয়ে রিভিশন আবেদন করলে তা বাতিল করে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।.

মাসুদের আপনজন সৈকত অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া, মাসুদের গোপনে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা, আবার গ্রেপ্তার হওয়ার পর গোপনীয়তা অবলম্বনে করে আদালতে পাঠানো, সংবাদ মাধ্যমকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি এড়িয়ে চলাসহ সব বিষয়গুলো এ হত্যাকাণ্ডে মাসুদের সম্পৃক্ততার গুরুত্ব বাড়িয়েছে বলে বাদী পক্ষের স্বজনরা দাবি করছেন।.

এতে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রের মালিক, হত্যা পূর্বের প্রশিক্ষণের স্থান ও আসামিদের গা ঢাকা দেওয়াসহ বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়গুলো আইনি প্রক্রিয়ায় বেড়িয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী মাসুদ সালাউদ্দিন। .

এছাড়া হত্যাকাণ্ডের পর আসামিরা ১-৩ মে পর্যন্ত নোয়াখালিতে অবস্থান করেন। এখন প্রশ্ন, নোয়াখালিতে তারা কোথায় ছিল? এ বিষয়টি র‌্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে না থাকলেও একাধিক সূত্র বলছে, নোয়াখালির সুবর্ণচরে দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আজাদের (মাসুদের বড় ভাই) মুরগীর খামার আছে। সেখানেই আসামিরা আত্মগোপনে ছিলেন। .

অনেকের মতে, এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড মাসুদকে বাঁচাতে বেশ তৎপর উপজেলা চেয়ারম্যান আজাদ। আজাদের ভাই মাসুদের পক্ষে আদালতে আইনজীবী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন কুমিল্লা-৫ সংসদীয় আসনের (বুড়িচং-বি পাড়া) সংসদ সদস্য এডভোকেট হাশেম খান। একজন খুনির পক্ষে একজন সংসদ সদস্যের আইনি লড়াইয়ের বিষয়টি বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।.

সূত্র আরও বলছে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার হওয়া অস্ত্রগুলো মাসুদের। চেয়ারম্যান আজাদ তার ভাই মাসুদকে রক্ষা করার জন্য ছাত্রলীগ নেতা সৈকতকে বলির পাঠা বানানোর চেষ্টা হিসেবে অস্ত্রগুলো দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করান। সূত্র মতে, আর এই অস্ত্রগুলো কুমিল্লার প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের লোকজন থেকে কিনে নেন আজাদের ভাই মাসুদ।.

সব মিলিয়ে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার মূল মাস্টারমাইন্ড শেষ পর্যন্ত বিচারের আওতায় পড়বে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।   .

উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল দাউদকান্দির গৌরীপুর বাজারে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনকে বোরকা পড়ে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনায় এখন পর্যন্ত আলাদা কয়েকটি অভিযানে একজন শ্যুটারসহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র‌্যাব।. .

ডে-নাইট-নিউজ /

রাজনীতি বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ