সম্মেলনের প্রায় এক বছর পরে ঘোষণা করা হয়েছে কমলনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি। জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে গোলাম ফারুক পিংকু ও অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন স্বাক্ষরিত গত ১২ এপ্রিল তারিখের অনুমোদিত কমিটি প্রকাশের পর উপজেলা ব্যাপী দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। দলীয় ত্যাগী নেতাকর্মীদের সঠিক মুল্যায়ন না করা, প্রবাসী, পরিবারতন্ত্র স্ত্রী, আত্মীয়দের প্রাধান্য দেয়া ও বিতর্কিত একাধিক ব্যক্তিকে দলে স্থান পাইয়ে দেয়া সহ নানা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় উপজেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। এতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। অন্যদিকে ত্যাগীদের অবমূল্যায়ণের জেরে আগামী সংসদ নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ের বিবদমান কোন্দল সক্রিয় হয়ে.
দলের জন্য বুমেরাং হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, গত বছরের ১৩ মে উপজেলার হাজিরহাট উপকূল সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল। কেন্দ্রিয় নেতাদের উপস্থিতিতে গোপন ব্যালটের ভোটে সভাপতি পদে মোঃ নিজাম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক পদে একেএম নুরুল আমিন রাজু সাধারণ সম্পাদক পদে সর্বাধিক ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। এছাড়া একইদিন অন্যান্য পদের মধ্যে সহসভাপতি পদে হাজী মনিরুল হক, তোফায়েল আহমেদ, গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ, আশরাফ উদ্দিন রাজন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মাহবুবুল ইসলাম দোলন, ফজলুল হক সবুজ, মির্জা আশরাফুল জামান রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লব, মোহাম্মদ উল্যাহ, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে আবুল বাছেত, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে মোঃ রায়হান, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বাবলু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে সাইফুল ইসলাম স্বাধীন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম রনি, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বেল্লাল হোসেন শাহীনকে নিয়ে কমিটি ঘোষণা করেন মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আৰুসাইদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি সহ কেন্দ্রিয় নেতারা। কিন্তু এক বছর পরের সদ্য ঘোষিত ৭১ সদস্য পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বাদ পড়েন এদের অনেকেই।.
ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়ায় বাদ পড়াদের মধ্যে মাহবুবুর রহমান বাবলু ও অ্যাডভোকেট বেল্লাল হোসেন শাহীন জানান, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃনিজাম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক একেএম নুরুল আমিন রাজু তাদের দলীয় আধিপত্য বিস্তারে দলের নবাগত মুনসুর মোল্লাকে শ্রম বিষয়ক ও নুর মোহাম্মদকে আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে মনোনয়ন দেয়।.
অপর পদবঞ্চিত মিরাজ হোসেন শান্ত তার ফেসবুক লাইভে গিয়ে অভিযোগ করেন, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক তার নাম প্লুইড দিয়ে মুছে সেখানে বিতর্কিত বিএনপির নেতা ও 'রাজাকারপুত্র' একাধিক মামলার আসামী একেএম রাশেদ বিল্লাহকে রিপ্লেস করেন। ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদে ফারুক হোসন ভু ইয়া। তার বাপ- দাদা ও নানার বিরুদ্ধে রয়েছে স্বাধীনতা বিরোধী ও রাজাকার আলবদর বাহিনীর সাথে যোগসূত্রিতা ছিল।.
কমিটির ৫১ নম্বর সদস্য পদে প্রবাসী মাইন উদ্দিন সবুজ, নেতাদের স্ত্রী, সন্তান, ভাই সহ পারিবারিক সদস্যদের অন্তর্ভূক্তিতে চরম আত্মীকরণের কমিটি এটি।.
এছাড়া পদবঞ্চিতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পী, আহসান উল্যাহ হিরন, ওমর ফারুক সাগর, ডা. হুমায়ুন কবির, শাহআলম (মোসলমান), কামাল হোসেন প্রমুখ।.
এদিকে নবগঠিত কমিটিকে ঘিরে উপজেলাব্যাপী পদবঞ্চিত দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এতে আগামী সংসদ নির্বাচনে এর বিরূপ প্রভাবে দলীয় প্রার্থীর জন্য বিপর্যয় নেমে আসার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।.
উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ নিজাম উদ্দিন বলেন, পদ বাণিজ্যের অভিযোগ সত্য নয়। দলের কর্মকান্ড মূল্যায়ণের ভিত্তিতে দলে ঠাঁই দেয়া হয়েছে। জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি তার স্বাক্ষরিত অনুমোদিত কমিটির পদবঞ্চনার শিকার একাধিক জনকে আশস্ত করে বলেন, স্থানীয় উপজেলা নেতাদের মাধ্যমে আসা কমিটিকে তিনি অনুমোদন দেন। তার স্বাক্ষরকালে কপিতে কোনো কাটাছেঁড়া বা ফ্লুইড ব্যবহার ছিলো না।. .
ডে-নাইট-নিউজ / নাসির মাহমুদ (লক্ষীপুর জেলা প্রতিনিধি) :
আপনার মতামত লিখুন: