নারায়ণগঞ্জ ডিসির মানবিক কাজ থেমে নেই
ডে-নাইট-নিউজ ;
প্রকাশিত: শনিবার, ০৮ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৪:৫৬ পিএম;
নারায়ণগঞ্জ ডিসির মানবিক কাজ থেমে নেই
নারায়ণগঞ্জে মাসব্যাপী গাছ সুরক্ষা (গাছ থেকে পেরেক তোলা) কর্মসূচির উদ্বোধন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। ঠিক ঐ মুহূর্তে সামনে হাজির অপরিচ্ছন্ন পোশাকে এক যুবক জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলামের এর সামনে চলে আসেন । পুরো বাংলাদেশে মানবিক জেলা প্রশাসক হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ জেলার ডিসি জাহিদুল ইসলাম দূর থেকে খেয়াল করলেন যুবকের দুই হাত নেই। তাই তিনি নিজে এগিয়ে গিয়ে সালাম দিলেন এবং যুবক কে প্রশ্ন করলেন, কীভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি? ডিসি মহাদয় সংক্ষেপে ঐ যুবকের জীবন গল্প মনোযোগ দিয়ে শুনেন এবং তার সঙ্গে থাকা কর্মচারীকে যুবকের বিস্তারিত নাম ও পরিচয় লিখে নিতে বললেন। নির্দেশ দিলেন স্থানীয়ভাবে যুবকের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করতে। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে সত্যি টাই জানা যায়, তা হলো যুবকের নাম আব্দুর রহিম, বয়স ২২ বছর। জেলার ফতুল্লা থানার উত্তর নরসিংপুর এলাকার বাসিন্দা মরহুম আজিজুল বেপরীর ছেলে এই রহিম।
২০১৫ সালে মাত্র ১০ বছর বয়সেই তার বাবা তাকে স্থানীয় একটি হোশিয়ারি কারখানায় অস্থায়ী শ্রমিকের কাজ দেয় সংসারের অভাব-অনটন দূর করতে। কিন্তু ভাগ্য যখন পরিক্ষা নেয় তখন মানুষের জীবনে হঠাৎ ই ঘটে অনেক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। রহিমের জীবনে ঐ সময় তাই ঘটে চাকুরী তে যোগদানের মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যেই খবর আসে হাইভোল্টেজ বৈদ্যুতিক তারে হাত লেগে সারা শরীর অগ্নিদগ্ধ হয় শিশু রহিমের। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক অনেক চেষ্টার পরেও রহিমের জীবন বাচাঁতে তার দুই হাতই কেটে ফেলতে হয়। বয়স বাড়তে থাকায় ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার মা রহিমা বেগম এক দরিদ্র ঘরের মেয়ে পপি আক্তারের সঙ্গে বিয়ে দেন ছেলে রহিমকে। তাদের ঘরে রয়েছে তিন বছর বয়সী সন্তান মোতাকাব্বির।
রহিমের দুই হাত না থাকায় সমাজের মানুষের কাছে সাহায্য নিয়েই চলে রহিম-পপির অভাবের সংসার। রহিমের স্ত্রী পপি বলেন ডিসি স্যার সব শুনে একদিনের মধ্যেই তার অফিসে ডেকে নিয়ে আমাদের মঙ্গলবার (৪ মার্চ ) ১০ হাজার টাকার চেক দেন। সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবেও নগদ দুই হাজার টাকা দেন আমার শিশু সন্তানের ঈদের পোশাক কেনার জন্য। অন্য দিকে শারীরিক প্রতিবন্ধি রহিম ডিসি মহাদয়ের কাছে আকুল আবেদন করে যেন স্থায়ী ভাবে একটা কর্ম করে তার সংসার চালাতে পারে এবং সন্তান কে পড়াশুনা করতে পারে তার একটি ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারি তহবিলের সীমাবদ্ধতার কারণে আমি চাইলেও শারীরিক প্রতিবন্ধী রহিমকে খুব বেশি আর্থিক সাহায্য করতে পারিনি। তবে আমি পরিকল্পনা করছি কীভাবে তাকে আর্থিকভাবে পুনর্বাসন করা যায়। যাতে যুবকটি তার স্বপ্ন তার একমাত্র সন্তানকে পড়াশোনা করানোর ব্যবস্থা করতে পারে।
.
ডে-নাইট-নিউজ / সূর্য আহমেদ মিঠুন : স্টাফ রিপোর্টার
সারাদেশ বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ
আপনার মতামত লিখুন: