বিশ্বনাথে আলু চাষের হিড়িক
ডে-নাইট-নিউজ ;
প্রকাশিত: সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০৭:০৬ পিএম; বিশ্বনাথে আলু চাষের হিড়িক
বরাবরের চেয়ে আলু চাষের মাত্রা এবার বেড়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় বিশ্বনাথ উপজেলায় এবার আলু উৎপাদনে মনযোগী কেষকেরা। আলু আবাদের প্রতি কৃষেকেরা ঝুকার কারণ জানতে চাইলে খাজাঞ্চী ইউনিয়নের কৃষক সিরাজ উদ্দিন জানান, আগে আলু চাষ করে মানুষ লোকসান গুনতো, দাম কম থাকতো পুরো বছর জুড়ে। আর এখন সারা বছরই আলুর দাম বেশি থাকে। এখন লোকসান হওয়ার চিন্তা নাই। বিশ্বনাথ উপজেলায় ইতিমধ্যে আলু আবাদের পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী উপজেলায় আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১৭৮ হেক্টর নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ১৮০ হেক্টর জমি। স্থানীয় বাজারে আলুর বীজ সংকট থাকায় এখনো কৃষকদের চাষকৃত জমি বিঘার পর বিঘা খালি পড়ে আছে।আলু বীজ পাওয়া গেলে আবাদের পরিমাণ ২০০ হেক্টরের উপরে উঠতো এমনটি বলছে মাঠের সরজমিন তথ্য। আলু বীজ না পাওয়ার অভিযোগটি করেন উপজেলার সবচাইতে বেশি সবজি আবাদকৃত খাজাঞ্চী ইউনিয়ন ও অলংকারী ইউনিয়নের কৃষকরা।
আলু বীজ না পেয়ে কৃষকরা সার মিশ্রিত খালী জমিতে এখন অন্য প্রকার সবজি উৎপাদন করার চিন্তা করছেন।খাজাঞ্চী ইউনিয়নের কৃষক ইসমত আলী, মদরিছ আলী, শাহাব উদ্দিন ও অলংকারী ইউনিয়নের মোবারক আলী জানান, স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি সিলেট শহরেও বীজ পাওয়া যাচ্ছে না।আমরা সার ফেলেছি জমিতে। এখন জমি অনাবাদী রাখতে হবে।বিশ্বনাথ কৃষি অফিস বীজ সংকটের কারণ হিসেবে বলছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদের কারণে এবং সিলেট জেলা ভিত্তিক আলু বীজ সংরক্ষনের ব্যবস্থা না থাকায় এই সংকটটি মোকাবেলা করতে হচ্ছে কৃষকদের।
পরিসংখ্যানের চিত্র বলছে, শীত মৌসুম শুরুর সাথে-সাথে শাক সবজির আবাদে ঝাপিয়ে পড়েছেন বিশ্বনাথের কৃষককূল। এমন চিত্র অন্যান্য বছর কমই থাকে। আলুর পাশাপাশি অন্যান্য শাক সবজির আবাদে ও লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হবে এমনটি আশা করছে কৃষি অফিস।বিশ্বনাথ উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে বর্তমান ২০২৪-২৫ অর্থ বছবের শাক-সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২৫০ হেক্টর, যার মধ্যে এ পর্যন্ত ১৩৫২ হেক্টর জমি আবাদ হয়েছে।পরিবেশ অনুকূলে থাকলে আগাম, মাঝারী ও দীর্ঘ মেয়াদী সকল প্রকার শাক-সবজি উৎপাদন কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সম্ভব হবে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা।গত বারের চেয়ে এবার আধুনিক ও উচ্ছ ফলনশীল জাতের বিভিন্ন শাক-সবজি আবাদের প্রশিক্ষণ প্রদান, কৃষকদের মাঝে কৃষি প্রণোদনা প্রদান করেছে কৃষি-দপ্তর। হাইব্রীড জাতের উচ্চ ফলনশীল ক্যাপসিকাম (নাগা-মরিচ) আবাদের মাত্রা বেড়েছে উপজেলা জুড়ে এমন চিত্র দেখা গেছে মাঠ ঘুরে।
এছাড়া গম, ভূট্টা, আলু, সরিষা, বাদাম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৬৭৬ হেক্টর। ইতিমধ্যে ৩৫৯ হেক্টর আবাদ হয়েছে।সীম, মিষ্টি লাউ, বাধাকপি, বেগুন, ফুলকপি, কাচা-মরিচ, মূলা, আবাদের পরিামাণ বাড়লেও পাশাপাশি টমেটোর আবাদের পরিমাণ কম দেখা যাচ্ছে।
বিশ্বনাথ উপেজলা কৃষি কর্মকর্তা কণক চন্দ্র রায় জানান, গত বছরে তুলনায় এবার শীতকালীন সবজি আবাদের পরিমাণ বেড়েছে। বিশেষ করে আলু উৎপাদনের মাত্রা ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে।বাড়তি আবাদের কারণে আলু বীজের সংকট তৈরি হয়েছে।সংকট মোকাবেলায় স্থানীয় ভাবে বীজ সংরক্ষণাঘার নির্মাণ জুরুরী তাই বিষয়টি প্রশাসনিক ভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দেখা উচিত। তিনি আলু বীজের জন্য প্রস্তুত করা জমি খালি না রেখে অন্য ফসল উৎপাদন করার আহবান জানান কৃষকদের প্রতি।
.
ডে-নাইট-নিউজ / মো. সায়েস্তা মিয়া, বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :
কৃষি বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ
আপনার মতামত লিখুন: