মিজানুর রহমান মিজান : বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ।কৃষি নির্ভর এ দেশের অর্থনীতি।ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য।ধান উৎপাদিত না হলে মারাত্মক অসুবিধার মধ্যে পতিত হতে হবে আমাদেরকে।কৃষি কাজে অনেক প্রকার কাজ রয়েছে।যেগুলি সমাধান করতে হলে শ্রমিকের প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী।কিন্তু শ্রমিক সংকট বর্তমানে প্রকট আকার ধারণ করেছে।কৃষিকাজের জন্য অত্যাধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি,বিভিন্ন প্রকার আধুনিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কৃত হলেও কোন কোন কাজের ব্যাপারে শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার উপায় নেই মোটেই।শ্রমিক সংকটের কারনে কৃষিক্ষেত্র হুমকির সম্মুখিন।.
একজন কৃষক জমি তৈরী থেকে বীজ বপন, রোপন,পরিচর্যা,ধান কাটা, মাড়াই দেয়া, সংরক্ষণ পর্যন্ত অনেক প্রকার কাজের সমাধান করে ঘরে ধান তোলতে হয়। ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করতে পারলেও অনেক অসুবিধা, সমষ্যার সম্মুখিন হন প্রত্যেক কৃষক।আবার ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষের ব্যাপারেও অনেক কাঠখড় পোহাতে হয়।আমরা মুখে যতই বলি না কেন ট্রাক্টর আবিষ্কৃত হওয়াতে অনেক লাভ হয়েছে।লাভও হয়েছে অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু সীমাহীন অসুবিধা ভোগ করেন প্রত্যেক কৃষক।যেমন প্রত্যেক কৃষকের নিজস্ব ট্রাক্টর নেই।অন্যের ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে থাকেন।.
ট্রাক্টর মালিক তার সু্বিধা, সাশ্রয় করার নিমিত্তে যে পরিমাণ মাটি চাষের প্রয়োজন, সে পরিমাণ লাঙ্গলের ফলা দিয়ে চাষ করে না।তাই জমির মালিক ও ট্রাক্টর মালিকের ঝগড়া প্রায়ই চোখে পড়ে।কারন আমরা সর্বক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হতে হতে অধিক সাশ্রয়ী হয়ে পড়েছি।টাকার বিনিময়ে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করালে মাটি দুই ইঞ্চি পরিমাণও কর্ষন হয় না, করা হয় না, করে না।প্রতিনিয়ত তাই ঝগড়া শুনা যায় কৃষক ও ট্রাক্টর মালিকের মধ্যে।নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।যাক এ বিষয়ে আর কথা বাড়চ্ছি না।জমি ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করলেই শেষ হয়ে যায় না।জমির চারপাশের আইল কাটা,দেয়াতে শ্রমিকের প্রয়োজন।চারাতলা থেকে চারা উপড়ানো, কাঙ্খিত জমিতে চারা নেয়াতে বা পরিবহন কাজে, ধান কাটা, পরিবহণ ইত্যাদি কাজে শ্রমিক ছাড়া চলে না।.
শ্রমিক পাওয়া গেলেও তার মজুরী অধিক চাওয়া এবং মজুরী পরিমাণ কাজ করতে অনিহা।আগেকার দিনে শ্রমিকরা ভাবতো আমি দৈনিক কি পরিমাণ কাজ করলাম মালিকের সে বিষয়টি।কাজের পরিমাণ মত মজুরী প্রাপ্তি ছিল লক্ষ্য।আর এখন শ্রমিকের কথা হল মালিকের কাজ হোক বা না হোক সেটা দেখার বিষয় নয়।বিনা কাজে সময় ব্যয়িত করতে পারলেই হল।চারা রোপন কাজে নিয়োগ করলে, যে জমিতে যে পরিমাণ চারা লাগানোর কথা তার চেয়ে অল্প লাগিয়েই সমাপ্ত করা ইত্যাদি।বেশ কয়েকজন কৃষক এ বিষয়গুলি সম্পর্কে এ সমস্ত অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বের সহিত প্রকাশ করেন।অনেকে জানালেন আগামীতে খেত করা ছেড়ে দেবেন।তাদের মনে বড় জ্বালা ও আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলি বলছিলেন।এক সময় সিলেটের বিশ্বনাথে অন্যান্য জেলার লোক আসতেন কাজ করার উদ্দেশ্য নিয়ে।এখন আর তাদের আসা হয় না।কিছুদিন পূর্বে সুনামগঞ্জের লোক আসতেন। ওরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।বিশ্বনাথে শ্রমিক সংকট চরমে বিরাজ করছে। লেখক-মিজানুর রহমান মিজান সম্পাদকদীপ্তি, বিশ্বনাথ, সিলেট।. .
ডে-নাইট-নিউজ / মিজানুর রহমান মিজান
আপনার মতামত লিখুন: