• ঢাকা
  • রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • Govt. SL. No:-352

Advertise your products here

সাম্প্রতিক উত্থাল বিশ্বনাথ


ডে-নাইট-নিউজ ; প্রকাশিত: বুধবার, ৩০ আগষ্ট, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৫:২০ পিএম;
সাম্প্রতিক উত্থাল বিশ্বনাথ
সাম্প্রতিক উত্থাল বিশ্বনাথ

মোঃ সায়েস্তা মিয়া, বিশ্বনাথ : প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথ উপজেলা ধনে-জনে, ইতিহাস-ঐতিয্যে, রাজনৈতিক ইতিহাসে সমৃদ্ধ একটি উপজেলা বললে বেশি বলা হবে না। সিংহভাগ কৃষিজীবী মানুষের বসবাস ছিল একসময় এ জনপদে। কৃষিজীবী খেতাবটাকে হারিয়ে এখন প্রবাসী অধ্যূষিত খেতাবটা রেমিটেন্স যোদ্ধাদের দখলে।পুরো বিশ্বনাথ উপজেলার কত হাজার বা কত লাখ মানুষ প্রবাসে বসবাস করছেন তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান দাপ্তরিক ভাবে জানা যায়নি। বৃটেন, যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ সহ কয়েক লাখের বেশি বিশ্বনাথী প্রবাসে রয়েছেন। যারা প্রতিনিয়ত দেশে রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে বছরের পর বছর পরিবার-পরিজন ছেড়ে কিংবা পরিবার নিয়ে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করছেন, আছেন প্রবাসে। তাদের অবধান অস্বীকার করার যুক্তি নেই। সামামজিক অবকাঠামো থেকে রাজনৈতিক পরিমন্ডলে প্রবাসীরা লেপ্টে আছেন যেন ঘাম, শ্রম এই মা- মাটির জন্য উৎসর্গ করার স্বার্থে তারা জন্মেছেন। দেশ থেকে কেউ স্বীকার করুক বা নাই করুক তারা তাদের দায়িত্ব মনে করছেন দেশের জন্য কিছু করা। কিন্তু প্রবাসে তাঁরা কতটুকু সুখে আছেন অনেকেই জানার আগ্রহ বোধ করেন না, কেউ জানতেও চান না।প্রবাসে তাঁরা বিপদে পড়লে কার কাছে যাবেন, কিংবা কেউ মারা গেলে তারা কি করবেন এ হিসেবটা অনেকেই জানেন না।প্রবাসে অস্বচ্ছল কেউ মারা গেলে তাদের লাশটা দেশে আনার উপায়টা বড্ড ঝামেলার। প্রবাসে মারা যাওয়া মৃতদের লাশ বিনামুল্যে দেশে আনার দাবী দীর্ঘদিন থেকে করা হলেও এর বাস্তবায়ন কবে হবে এদেশের অভাগা রেমিটেন্সযোদ্ধারা তা আদৌ জানেন না। দেশের এয়ারপোর্ট গুলোতে প্রবাসীদের হয়রানির কথা নতুন কিছু নয়, তবে লজ্জাজনক এই কর্মকান্ড কবে, কখন বন্ধ হবে তাও হয়তো অজানা থাকবে আরো বহু কাল। কিন্তু সময়ের দাবী হচ্ছে বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। দুইএকজন দুঃস্কৃতিকারীরদের জন্য প্রবাসী হয়রানির বদনামটি পুরো জাতী বহন করবে কেন? তা প্রতিহত করার উদ্যোগ ও বাস্তুবায়ন সরকারকেই দ্রুত নিতে হবে।.

সাম্প্রতিক বিশ্বনাথ নিয়ে কথা বলার চেষ্টা থেকে অন্যত্র সরে গিয়েছিলাম কিন্তু এ কথাগুলো বলা আমাদের জন্যই মঙ্গল।বিশ্বনাথ নিয়ে ভাবনা যারা ভাবেন তাদের কে নিয়ে কথা বলব না কিন্তু বিশ্বনাথ বাসীর ভালমন্দ নিয়ে কথা বলা অবশ্যই দায়িত্ব মনে করছি। বিশ্বনাথ কে একটি শান্তিপ্রিয় জনপদ বললে ভুল হবে না।ধর্ম বর্ণ মিলিয়ে এখানে বিভিন্ন পেশার মানুষের বসবাস। আজ একটু রাজনৈতিক ও জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টিকোন নিয়ে বলি। বিশ্বনাথের রাজনৈতিক ইতিহাস সচেতন মহলের জানার বাহিরে নয়। অনেক রাজনৈতিক নেতার ক্ষমতা উপজেলা থেকে জেলা, জেলা থেকে বিভাগ, বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ কেন্দ্র পর‌্যন্ত বিস্তৃত ছিল এবং আজও আছে। রাজনৈতিক নেতাদের অবদান এ জনপদের মানুষের মুখস্ত বিষয়। রাজনীতি করে যারা জনতার সেবক ও জনপ্রতিনিধি হয়েছেন তাদের কাছে প্রাপ্য অধিকার জনসাধারণ কতটুকু পেয়েছে বা পাচ্ছে তা নিয়ে বিস্তর পূঁতি রচনা মূখ্য নয়। তবে রাজনৈতিক ‍উত্থাপে বিশ্বনাথের রাজপথ অনেকবার উত্তপ্ত হয়েছে তা বলা আবশ্যক। রাজনৈতিক উত্তাপ বিভিন্ন কায়দায় ছড়িয়ে দিতে অনেকেই কাজ করছেন নিখুঁত ভাবে এবং তাঁরা থেকে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাহিরে। গেল কয়েকদিন ধরে বিশ্বনাথে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া ও বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুবর রহমানের মুখোমুখি ভিডিও আলাপ এক কথায় আলোচনার কেন্দ্রে অবস্থান করছে।বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলে উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া সাধারন নাগরিকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মর্মে নুনুমিয়াকে প্রধান অভিযুক্ত করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের জামাল আহমদ নামের এক যুবলীগ নেতা। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশের হাতে রয়েছে। কে অপরাধী আর কে অপরাধী নয় তা সময়ই বলে দেবে। উপজেলা চেয়ারম্যান কে ঘিরে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের কাছে একাধিক ভুক্তভোগি অভিযাগ করেছেন তা দিব্যি স্যোসাল মিডিয়াতে দেখা যাচ্ছে। এই অভিযোগের ভিডিও চিত্র পৌরমেয়র কর্তৃক প্রতিনিয়ত স্যোসাল মিডিয়ায় প্রকাশ হচ্ছে।এসব ভিডিওতে সয়লাব সামাজিক মাধ্যম। বিভিন্ন সময়ে এমন ভিডিও পোস্ট করায় উপজেলা চেয়ারম্যান এবার ক্ষ্যাপেছেন। পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের এমন ভিডিও পোস্টের প্রতিবাদে নুনু মিয়ার পক্ষ অবলম্বন করে পৌর আওয়ামীলীগ বিবৃতি ও কারণ দর্শানোর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কয়েকজন কাউন্সিলর এর বিরুদ্ধে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক শিষ্ট্রাচার লঙ্ঘন করেছেন ঐ কাউন্সিলরগণ।জবাবদিহির জন্য বলা হলেও তাঁরা জবাব দিয়েছেন কি না তা জানা যায়িনি।.

এরপর সর্বশেষ উপজেলা চেয়ারম্যান তিন/চারদিন আগে পৌরমেয়র মুহিবুর রহমান কে উদ্দেশ্য করে মায়ের কসম খেয়ে একটি সতর্কতামূলক ভিডিও বার্তা ইউটিউবে প্রকাশ কেরেন।যে ভিডিওতে শোনা যায় পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের পদস্থ-অপদস্থ, সুনাম-দুর্নামের অনেক কথা রয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রকাশিত ভিডিও বার্তা মহুর্তে সেটি সাধারণ নাগরিকদের মধ্য প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।জনসাধারণের মধ্যে জল্পনা-কল্পনা, গুঞ্জন তৈরি হ্য়।গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হয় ‘‘বিশ্বনাথে মুখোমুখি অবস্থানে উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়া ও পৌরমেয়র মুহিব” শিরোনামে। সংবাদের বিস্তারিততে বলা হয় এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় তাদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সংবাদের সাথে মিলে যায় এমন নেতা বা কর্মী রাজনৈতিক এবং সামাজিক ভাবে কেউ মাঠে নেই দেখা যাচ্ছে না আপাতত। কর্মী সমর্থকদের মাঠে দেখা যাচ্ছে না আর তা-ই আশার আলো। দুইজনে আড়ালে আবড়ালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একে অন্যকে ঘায়েলের চেষ্টা করছেন। পৌরমেয়রের বিরুদ্ধে মামলা হবে শোনা যাচ্ছে কিন্তু আদৌ হবে কি না তা আগাম বলা যাচ্ছে না। গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে অনেকেই নিজের ফায়দা হাসিলের ধান্দায় ব্যস্থ না হলে নিরব জনতা ও রাজনৈতিক কর্মীদের লেলিয়ে, উস্কানি দিয়ে কি কেউ এমন নিউজ করে বোধগম্য নয়। স্থানীয় ভাবে রাজনৈতিক কর্মীরা শান্ত ও শালীন আছেন যেটা প্রমান করছে এখনো কোনো প্রকার সংঘাত, সংঘর্ষ, রক্তপাত, মিছিল সমাবেশ হয়নি বা হওয়ার পরিবেশ নেই দেখে। প্রকাশিত সংবাদগুলো বিশ্লেষন করলে এমনটাই মনে হয় যেন তারা রাজনৈতিক কর্মীদের দিয়ে সংঘাত বাধিয়ে দিতে চান। আমার মনে হয় এধরণের সংবাদ প্রকাশ এক ধরনের উস্কানী ছাড়া আর কিছু নয়। গেল কয়কদিনে দুই নেতার কামড়াকামড়ি নিয়ে এখনও কোনো অঘটন ঘটেনি বরংচ না ঘটাই ভাল। সহনশীল রাজনীতি এবং ন্যায় অন্যায় দেখে পক্ষ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। এ দুই জনপ্রতিনিধি নিয়ে সচেতন মহল উপজেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় বাহাস বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে আশিন হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। এমনটাই হওয়া উচিৎ না হলে একটি জনপদের গায়ে কলঙ্ক লেপ্টে যাবে সময়ের ব্যবধানে।.

বিগত ১১ই আগস্ট বিশ্বনাথ থানায় নবাগত (ওসি)অফিসার ইনচার্জ এর যোগদান হয়েছে। উপজেলার আইনশৃঙ্খলা ভাল আছে, সুস্থ আছে তবে বিগত ২০ আগস্ট উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নে শিম গাছে ময়লা ফেলাকে কেন্দ্র করে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটে।এতে মধ্যস্ততাকারী সহ উভয় পক্ষের অনন্ত ১৫ জন আহত হন।মারামারির ঘটনা কে কেন্দ্র করে থানায় একটি ধর্ষন মামলা রুজু হয়। কোথায়া কি! তাতে হিসেব মেলানো বড়ই কঠিন। বিষয়টি হলো মারামারি, মামলা হলো ধর্ষণের।এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। থানা প্রশাসনের কি করা উচিৎ তা তদন্ত সাপেক্ষ পরে দেখবেন বলে পুলিশের পক্ষে বলা হলেও সচেতন মহলের অনেকেই মনে করেন বিষয়টি প্রথমেই নির্দিষ্ট একটি অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রহন করা উচিৎ ছিল। পুলিশের ভুমিকায় হাস্যপাদান থাকা কাম্য নয়। যার-তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কেউ যাতে কাউকে অপদস্থ করতে না পারে সে দিকে পুলিশের খেয়াল রাখা সচেতন মহলের অনেকেই ইত্যবসরে দাবী জানিয়েছেন।.

 .

উপজেলার মাসিক সভায় গুরুত্ব সহকারে জনপ্রতিনিধি ও বিশিষ্টজনেরা দাবী উত্থাপন করে বক্তব্য রাখেন যাতে অযথা কেউ মামলায় হয়রানির শিকার না হন।মামলায় আসামী হওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে চার্জশিট থেকে বাদ গেলে কিংবা আদালতের রায়ে মামলা থেকে অব্যাহতি পেলে বিষয়টি কেন অকারণে কয়েক বছর পুলিশের রেকর্ডের তালিকায় রয়ে যায়! পরবর্তীতে ওই ব্যাক্তি পাসপোর্ট করতে গেলে তিনি হয়রাণীর শিকার হচ্ছেন। অভিযুক্তের নাম চার্জশিট বা অব্যাহতির তালিকায় বাদ পড়লে তা দ্রুত পুলিশের রেকর্ড থেকে সরিয়ে সাধারণ জনগনকে রেহাই দিয়ে সহায়তা করার জোর দাবী করা হয়। আসলেই এমন হওয়াই উচিৎ। মামলায় না থেকে কেউ কেন ঝামেলায় পড়বে এদিকে নজর দেওয়া দরকার। এর সুদোত্তর কবে পাবে এ জাতি না আরো গড়াবে সময়? (পর্ব ০১). .

ডে-নাইট-নিউজ /

সাহিত্য-সংস্কৃতি বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ