ঝিনাইদহে নুরুন্নাহার নামে এক গৃহবধুকে অমানুষিক নির্যাতনের দায়ে স্বামী ও সতিনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে চার মাস করে সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। সোমবার দুপুরে ঝিনাইদহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ মিজানুর রহমান এ রায় প্রদান করেন। .
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার মহিতুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত নবিরুদ্দীন প্রামানিকের ছেলে শহিদুল ইসলাম ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রতনপুর সোনারদাইড় গ্রামের জহুরুল ইসলামের কন্যা পলাতক রহিমা খাতুন পান্না। .
মামলা সুত্রে জানা গেছে, চট্টগামের সাতকানিয়া উপজেলার বকরা আলী বিল গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে গৃহবধূ নুরুন্নাহারের সাথে ২০০২ সালে শহিদুলের বিয়ে হয়। প্রথম স্ত্রীকে বিয়ের ৭ বছর পর শহিদুল আবার দ্বিতীয় বিয়ে করে রহিমা খাতুন পান্নাকে। ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রæয়ারি বেড়ানোর নাম করে ঝিনাইদহ শহরের নিয়ে আসে শহিদুল। .
শহরের পাগলাকানাই এলাকার উপ-শহরপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় প্রথম স্ত্রী নুরুন্নাহারকে আটকে রেখে স্বামী শহিদুল ইসলাম ও দ্বিতীয় স্ত্রী রহিমা খাতুন পান্না প্রথম স্ত্রী নুরুন্নাহারকে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারপিট ও গরম লোহার রড নুরুন্নাহারের যৌনাঙ্গে ঢুকিয়ে নির্যাতন করে। এতে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। সাত দিন ধরে চলে এই নির্যাতন। মাকে নির্যাতনের বিভৎস দৃশ্য দেখে নুরুন্নাহারের দুই শিশু সন্তান রিয়াদ হোসেন ও হৃদয় হোসেন।.
প্রতিবেশিরা পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ মানবাধিকার সংস্থার সহায়তা সদর থানায় দুই জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে নির্যাতিতা নুরুন্নাহার। আদালত সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে সোমবার (২৪ অক্টোবার) স্বামী শহিদুল ইসলাম ও সতীন রহিমা খাতুনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেন। .
রায় ঘোষণার সময় আদালতে শহিদুল ইসলাম উপস্থিত থাকলেও রহিমা খাতুন পলাতক রয়েছে। সরকার পক্ষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি এ্যাডভোকেট বজলুর রহমান ও আসামী পক্ষে এ্যাডভোকেট আশরাফুল ইসলাম জোয়ারদার মামলাটি পরিচালনা করেন। পিপি এ্যাডভোকেট বজলুর রহমান জানান, বিজ্ঞ আদালতের এই রায়ে আমরা খুশি। দ্রæত পলাতক আসামী রহিমা বেগমকে গ্রেফতারের তিনি দাবী জানান।. .
ডে-নাইট-নিউজ / আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
আপনার মতামত লিখুন: