কবি, তোমার অসম প্রেমের কথা.
লাইন করে সাজাবে।.
চন্দ্র যতোদিন উদয় হবে, অস্তে যাবে।.
মেঘহীন আকাশে হাঁ ক'রে তাকিয়ে দেখবে-.
তুমি আকাশ হয়ে আছো বলে।.
আজ আধুনিক এসএমএসের বালাইয়ে-.
দুই হাজার কিংবা এক কোটি শব্দে পুস্তক-.
রচনার স্পৃহা নিরামিষ হয়েছে।.
যখন কবির কবিতায় কেউ প্রেমে পড়ে না।.
পুরনো হাতের কাজ, কলম রেখে সেই-.
২০০৯ থেকে বিজ্ঞানযন্ত্র মুঠোফোনে-.
তোমার সাথে আমার হয়েছিল যোগ।.
দিন রাত ইনবক্স পূর্ণ থাকতো লেনদেনে।.
কিন্তু তোমাকে তখনও দেখা হয়নি-.
দুচোখে, দেখা হয়নি সামনে বসে।.
তোমার যাদুতে আমি দিশেহারা কণ্ঠ শুনে।.
তুমি ভূত না রাক্ষুসী সে বিচারে নয়।.
আমি তাতেই সন্তুষ্ট ছিলাম পবিত্রতা রক্ষায়।.
একদিন দেখা হবে, হাতে হাতটায় শক দেবে ট্টান্সফর্মায়।.
একটি চিরস্থায়ী স্মৃতি উপহার দেব ভেবেছিলাম।.
হয়তো কয়েক যুগ আগের রুমাল; ভুলনা আমায়।.
.
( পর্ব ০২).
দীর্ঘ প্রেমের সূত্রপাত আজ অন্য কবি নয়,.
আমি নিজেই সাদা জমিনে খোদাই এটবো।.
যাকে একালের নব্য প্রেমিক, মহাকবি বলে-.
হয়তো রাখবে ইতিহাস নয়তো নর্দমায় মিশিয়ে।.
তুমি আমার সাহস আর সামনে দাঁড়ানো নিয়ে-.
ছিলে সন্দিহান, বলতে কখনো পারব না।.
সে'টুকুই দিয়েছিল শক্তি, আমাকে গর্জে উঠতে।.
কুল যাক, প্রাণ যাক, আমি দেখবো চোখ জুড়িয়ে।.
মনে আছে কী সেই ঈদের রাতের কথা?.
মুঠোফোনে কথা, মুয়াজ্জিনের হাক উঠেছিলো।.
আম্মু দরজায় হাত দিয়ে বাধাহীন প্রবেশে ঘরে।.
মোবাইলটা ধরিয়ে দিয়েছিলাম আম্মুর হাতে।.
তুমি মায়ের সাথে কথা বলতে বিব্রত হয়ে পড়ো।.
তারপর তোমার মোবাইল বন্দ, আমার চটপটানী।.
কি হলো? ভুলের মাশুলটা শোধ নিয়েছে তোমার মামা।.
পাঠশালায় যেতে বারণ আর অকথ্য কথার শাসনে।.
তুমি পড়ন্ত বিকেলে গায়ের এক ফোন থেকে বলো-.
হয়তো আর কথা হবে না, দেখা হবে না কোনো দিন।.
উত্তর ছিল আমার, ' চাওয়া নিখুত হলে পাওয়া নিশ্চিত।.
কালোরাতের প্রহর অতিক্রম হলো সে যাত্রায়।।.
.
( পর্ব ০৩).
দু'মেরুতে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় একদিন বছর সম ছিলো।.
তারপর স্বাভাবিক, তুমি অষ্টম উত্তীর্ণ হলে।.
একদিন লুকিয়ে বলছিলাম দু-প্রান্তে প্রেমালাপ-.
তুমি ফোনটি তোমার মায়ের হাতে দিলে আমি যেমন করেছিলাম।.
তোমার ভাই ছিল না, বাবা ছিল না, ছিলে মামার বাড়ি।.
আর প্রগতির আঙিনায় বেড়ে উঠছো তোমার দুঃখ।.
প্রশ্ন ছিল, আমার হাতে গ্রহন হবে কী তুমি।.
উত্তর কি ছিল না 'মানুষ তো মানুষের জন্য'।.
আজ তোমার মামার বন্ধু সানুরের কথা বলতে হয়।.
দুজনের প্রথম সাক্ষাতের সূত্র বার্ষীক ক্রিড়ায়।.
কার্ড গলায় আর ক্যামেরা হাতে সংবাদ সংগ্রাহক আমি।.
সংবাদ কর্মীর পরিচয়ে কেউ বোঝেনি-.
প্রেমিকের মিলন মেলার জানান।.
হাজার জনতা, ছাত্র শিক্ষক আর অতিথির-.
কিঞ্চিত সন্দেহ হয়নি আমরা কতোবার চোখাচোখি হয়েছি।.
মঞ্চের মধ্যভাগে ক্যামেরার ক্লিক আর দিনভর তোমাকে দেখা।.
শ্যামলা মনে হয়নি, যেন অপরূপা খুব মনলোভা।.
সত্যিই তো আমি তোমার রূপের পাগল ছিলাম না।.
ছিলাম জীবনের অর্ধেক, দুজগতের সাথী।.
তোমার কান্নাতে চোখে জল ঝরাবো, হাসির ঝিলিকে-.
আকাশের চাঁদকে তুচ্চ মনে করার পণে প্রতিজ্ঞ।.
তোমার এই আগমন বার্তা ছিল সাত মহাদেশ কাঁপানো।.
তাজমহল ফাঁটানো এক নতুন আলাদীনের প্রদীপ।.
বাইশ বছরের পাহাড় কাটা মাউন্টটেন ম্যান নয়।.
এটা আমার সাত আকাশ জমিন সম বুকের মঞ্চে।.
.
( পর্ব ০৪).
প্রিন্ট, নেট, আর ফেইসওয়ালে সারীবদ্ধ কবিতা।.
কতো অনুভূতি আর স্বপ্ন জাগ্রত কথার প্রকাশ।.
আমাকে ঠাট্টা করে কতো লোক বলল পাগল কবি।.
বলেছে আউল বাউল, যা লাগেনি গা'য়ে।.
অনেকেই বলেছে ইহা কবিতা নয়, ছড়া নয়।.
এ যেনো এক প্রেয়সীকে ভালবাসার কথা।.
আমি এপারও নয় ওপারও নয়, মাঝ দরিয়ায় -.
ভাসমান এ ভেলার গন্তব্য কতদূর অজানা আছে আজও।.
আমি নেংটো উলঙ্গতায় পিছন হাতরাই।.
ভালো তো ছিলাম, নির্ভেজাল ছিলাম, কামনাহীন।.
আজ বড্ড ক্লান্ত তোমার কোমর দোলাতে।.
কেনো হাঁড়িতে নেই চাল উত্থাপ শুধু চুলাতে।.
কাগজের গায়ে কলম চালিয়ে কেনো কাটে নিশি?.
মশাগুলো সিরিঞ্জ সিরিঞ্জ রক্ত কেনো খায়?.
কুপিতে কেরোসিন শেষে খাটে গা হেলানো.
কেনো, কেনো, কেনো, তুমি কী বলতে পারো।.
.
( পর্ব ০৫).
" আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি".
একবার যদি গাই, মহুর্তে কেনো ভূলে যাই?.
বার বার উঠে সূর ও প্রিয়া তুমি কতো দূর।.
পলাশ নুরুল কেনো বলে প্রেমরোগে ধরেছে?.
এ আজ প্রেমরোগ নয় যেন যমদূত।.
তবে আমাকে নিমিষে মারবে না।.
মারবে তিলে-তিলে, বিষে হবো নীল-.
ছঙ্গল মেরে আকাশে উড়ছে যে চিল।.
পালাগানের আসর করেছি আজ তোমাকে নিয়ে।.
তুমি কী প্রশ্ন একটিও করবে না আমাকে।.
নিম পাতার বড়ি কতো হজম করবে?.
ডুন্ট লাইকের জবাব দেওয়া যাবে না অসহায় বলে।.
আকাশ থেকে বৃষ্টি নামবে, আকাশ কাঁদবে-.
অমানিশার পর পূর্ণিমা হবে, হয়তো জোনাক জ্বলবে!.
ভালো বাসবে, ভালো লাগবে, ঘর ছেড়ে কেউ পালাবে,.
খোলা বাতায়নে বলবে, না এমনতো কথা ছিল না।.
নাটোরের বনলতা তুমি, না তাজের স্তম্ভ?.
সে হবে কেনো? চাঁদ বলে ভেবেছিতো।.
একটু বাড়িয়ে বলা নয় আরো বেশি কিছু।.
গ্রহ নক্ষত্র মিলিয়ে যা হয়, তাই তুমি, তাই।.
.
( পর্ব ০৬).
হয়তো জীবনভর জলোচ্ছাসে লন্ড-ভন্ড-.
তুমি হাত ধরে পার হবে বিশ্বাস করছো না।.
" হতাশার চাঁদরে মোড়ানো জীবন্ত লাশ ".
তুমি নির্বাক মেনে নেওয়া জীবন নয়, তুমি জাগো।.
বিশ্বাস করো, গদ্যে-পদ্যে, গল্পে যে হারায়-.
আমি তাদেরই মতো তোমাকে নিয়ে হারাতে চাই।.
ভাদ্রের বারিষে, আশ্বিনের কাশফুলের দোলায়।.
একটুও বাড়িয়ে এ বলা নয়, বিশ্বাস করো।.
কার্তিক এলেই আমি আশ্বস্থ হই শান্তনায়।.
আকাশ ঘুড়ুম ঘুড়ুম ডাকবে না বজ্র পড়বে না।.
চোখ বেয়ে পড়বে না জল।কোয়াশার বিন্দুজল দূর্বায় পড়বে।.
লেপ্টে থাকা শিশির রোজ রোজ মেঘের ঘনত্ব কমাবে।.
বাতাসে হাক ছুড়ে দেই তুমি প্রতূষ্যে উঠো।.
দু-পা একটু শিশিরে ভেজাও, রক্তলাল সূর্য্যদয় দেখো।.
সকালে করো পণ সারাদিন আমি যেনো ভালো চলি।.
স্বপ্নগুলো মেঘহীন আকাশে ভাসিয়ে যাক।.
তুমি কী জানো চার দেয়াল টপকাতে হবে।.
সমস্ত কিছুর অর্ধেক দায়িত্ব কাঁদে অর্পিত।.
বুলেট বিহীন যুদ্ধে তোমাকে নিতে হবে দায়.
নিরুপায় বিপন্ন কিশোরী উদ্ধারের দায়িত্ব।।.
.
( পর্ব ০৭).
তুমি নত হও সত্যের শক্তির সম্মুখে।.
তুমি গর্জে উঠো জালিম জাহিলের বিপক্ষে।.
তোমাকে ভালবাসি বলেই আমার হাক-.
তোমার মাথায় ভর দিবে রাক্ষুস, তুমি হলে নির্বাক।.
আমি স্বপ্ন দেখেছি অনেক, কতো প্রয়োজনে-.
কতো সুখে, কতো দুঃখে, সংগ্রাম সমরে।.
কল্প ঝেড়ে আজ বাস্তবে হবে হাত ধরা।.
আসুক বসন্ত তোমার আমার জীবনে।.
তুমি আমার সাহস দেখনি, দেখনি ঝড়কে -.
উপেক্ষা আর বীরের মতো উত্থাপে ঝাপ দেওয়া।.
তবোও কেন ভয়, কেনো সংশয়, কেনো অযুহাত।.
তবো কী বিশ্বাস করো প্রেমে আছে রক্তপাত ?.
আমি আজ ঘুমাইনি প্রেমের মৃত্যু হবে-.
আমি রাতভর তোমাকে ছু্ঁয়ে খেদ মেটাই।.
কাল আত্মহত্যার বদনাম মাথায় নেব না বলে।.
তবে আমি কি খুব সুখে আছি তুমি ভাবো ?.
.
( পর্ব ০৮).
সুখে নেই, সুখ নেই, তবে অভিযোগ নেই-.
গান কবিতা দিয়ে নয়, মন দিয়ে চরণ চুমি।.
তুমি যদি নাই জানো, জানে অন্তযামী।.
তুমি ফিরে চাও, ফিরে চাও আমাকে বাঁচাতে।.
আজ বড় অসহায়, নিজেকে জুতো পেঠাতে ইচ্ছে হয়।.
মনে হয় জন্মানোটাই পাপ, মহাপাপ।.
কেনো একটু সহানুভূতি করেনা কেউ-.
সহযোগীতা নির্বাসনে গেছে বিধির বিচারে।.
আমার প্রেম নেই, আমার দরদী নেই-.
সকলী মুখ থুবড়ে থাকে ভীনগ্রহের প্রাণী ভেবে।.
জানিনা স্রষ্টার গজবে নাকি মানুষ সৃষ্ট-.
এমন হলে সত্য ভুলে আমি হবইতো পথভ্রষ্ট।.
বিমূর্ষ তেতো নয়, কাপনে মোড়ানো জীবন-.
হাত পাতে দুয়ারে, রাস্তায় কিংবা ফুটপাতে।.
যদি ঘুরি, ঘুরি জনম জনম, খাবো পেটে লাথ্।.
আমার কী আছে সন্মান লাথেই যাবে জাত্।.
মানুষের কান্নায় বাতাস ভারী দেখছি আজ-.
কাঁদে বৃক্ষলতা, কাঁদে বন-বাদাড় গজবে।.
মুশকিলে পড়ে অপরাধী, রাজার দোষে রাজ্য পুড়ে-.
যে নিস্পাপ, কেনো অন্যের অপরাধে যাবে রসাতলে ?.
.
( পর্ব ০৯).
হৃদয়হীন মানুষের দুয়ারে আর্তনাদ নিস্ফল।.
তুমি সবোর করো আর অপেক্ষায় প্রহর গুনো-.
যদি দেখতে চাও তোমার অবস্থানে এসেছে সে।.
নিরাশ হয়েছে তারই সঞ্চিত কর্মফলে।.
বনহুর আজ প্রেম চায়, জলদস্যু ছেড়েছে দস্যুতা-.
শুধু নিশাচর জেগে আছে বৃন্দাবনে একা।.
একটু মেঘের আড়াল থেকে চাঁদ উঁকি দিলে-.
তোমাকে জোৎস্না দেখাবে, দেখাবে আলোময় পৃথিবী।.
তুমি আমাকে নদী পারের কাব্যিক বলেছিলে।.
বল আছে বলে নির্ঘুম জ্বলছিলো জোনাকী-.
আমিও রাতভর কবিতা লিখি বাস্তবের মিশ্রণে।.
হয়তো তুমি নয়তো এলিখার শক্তি ঐশরিক।.
কত যে কবির মৃত্যু কবিতার ছন্দে হয়েছে।.
কতো লাইলী, শিরি রয়েছে অভুক্ত তৃঞ্চার্থ।.
কতো যুগলের প্রদীপ নিঃশেষ হয়েছে দু'ফোটা বিষে-.
তবো কী পরাজিত হয়েছে প্রেম হাত ধরাধরি ?.
.
( পর্ব ১০).
স্বপ্ন, বাস্তব আর কাহিনী নিয়ে তোমার বাহুতে-.
কিংবা কতটুকু এগিয়েছি তোমাকে নিয়ে।.
বলি আরেকটু, তুমি নাইন ডিঙিয়ে টেনের কিশোরী।.
ক্লাস এগুলেও আমরা তখন দুই মেরুতে বিচ্ছিন্ন।.
শুধু তোমাকে নিয়ে কলমের ঘুতো পেপারে।.
দেখে লোক, দুইমাস কিংবা তিনমাস পর।.
তোমার দু'চারটি কথা আমাকে সঞ্জিবনী করে।.
আমি ডাইরিতে লিখি যতনে এ ইতিহাস।.
আসে বর্ষা, আসে শরৎ আর শুধুই অপেক্ষা।.
তারপর হেমন্ত, শীত শেষে কোকিল ডাকা বসন্ত।.
এরপর গ্রীষ্মে হয়তো পাশের বালিশটা তোমার ছোঁয়া পাবে।.
আউলা চুলের পরশে শিরশির করে উঠবে আমার গা।.
তুমি এও জানাতে, কাউকে যেনো সাথী করি তুমিহীনা।.
সুখী হই, আর আমার না না শব্দের একই উত্তর।.
ছোট্ট করে বলতে আমি পাগল, যাতে আমারই সম্মতি ছিল।.
পাগল তুমিই করেছো না হয় স্রষ্টা করেছে।.
বলতে, ইন্টার অনার্স চুকিয়ে তুমি ঘরনী হবে।.
তোমার অনেক দায়িত্ব, নচেৎ বুড়ি হয়ে যাচ্ছো।.
আমার কী উত্তর ছিল না, বলিনি তোমায়-.
যৌবন পৌড়ত্বে আমার প্রেম বলিয়ান ক্ষয়হীন।.
.
( পর্ব ১১).
আমি থাকলে তুমি আছো-.
আমি করলে অপেক্ষা তুমি করবে না উপেক্ষা।.
সরল বাক্যের শ্রুতি তোমার প্রতি-.
বিশ্বাসী করেছে আমায়, করেছে ধৈর্যশীল।.
একদিন হাসপাতালেই মায়ের সম্মুখে তুমি দাঁড়ালে।.
ক্ষ্যাপা গলার শাসন দেখে তুমি বিস্ময় হলে।.
স্বাভাবিক ছিলে না ভয় পেয়ে গেলি বললেনা।.
মা আমাকে এভাবেই শাসন করে, পথ হারা যেনো না হই।.
দোহাই তোমার, মা'কে বদজাত ভেবো না।.
আমি অভিশাপ দেবো, দেবো ঘৃণা, দেখাবো মান।.
যদি জনমভর গাও আমার মুখ ফেরানোর গান।.
তুমি পরাজিতা, তুমি তিরস্কৃতা, তুমি অমানুষ।.
জননী আমার চাঁদ, আমার পৃথিবী, আমার প্রাণ।.
তাঁর শাসনে বাড়ে মোর মান, বাড়ে জ্ঞান-.
তারই পায়ে মোর নত সব দাম্ভিকতা।.
যে শিক্ষায় করেছেন মানুষ এই উচ্চ শিক্ষিতা।.
.
( পর্ব ১২).
এরপর তুমি আরেক ধাপ এগিয়ে ডিগ্রিতে পড়ো।.
হয়তো বিশ্ব শাসনের স্বপ্নে, বারাক ওবামা পতনের অপেক্ষায়।.
ঘন্টায় ঢং ঢং ঘন্টা বাজিয়ে জানাতে চাও তোমার উত্থান।.
তুমি মানব বলে এ জয়ে আমার সমর্থন অগ্রজ।.
খোদার গান তুমি গাও, যেমন আমি গাই দিবারাতে।.
আমি ধ্যান মগ্ন হই, মাথা অবনত করি-.
তাঁরই কুদরতের মহিমা চরণে, যার সমস্ত অবদান।.
স্রেষ্টত্বের প্রকাশ আমার থেকে সৃষ্টিতে বিরাজ করে।.
তোমাকে ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেবো, নব্য নাস্তিক তুমি হলে।.
তোমাকে বুক থেকে ফেলে দেবো যদি অবিশ্বাস করো।.
তোমাকে ডাকবো না, ছুঁবো না, রাখব না মনে-.
সত্য রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে মোকাবেলা করব রণে।.
তুমি কী দেখনি ভূমিকম্প, তুমি কী দেখনি সুনামী?.
তুমি কী দেখনি আবাবিলের কঙ্কর নিক্ষেপ ?.
তুমি দেখনি নমরুদের অগ্নিকুন্ডের উত্থাপ-.
যেখানে বিজয় হয় আজো যে থাকে নিষ্পাপ।.
তুমি পড়নি ইতিহাস? আইয়ুব ( আঃ) কে ১৯ বছর বনবাস।.
আশিতে ইউসুফ জুলেখার প্রেম টান।.
লোক কাহিনীর শিরি ফরহাদ কিংবা- .
আরবের বুকে নূরের আলোর আগমন।.
অন্ধকারে মহাসত্যের কলতান।.
.
( পর্ব ১৩).
তুমি বলো আজ পাখী ভোরে কেনো গান ধরে?.
তুমি বলো কে ফোটায় পাতাহীন বৃক্ষে পুস্প।.
তুমি বলো কে উড়ায় মেঘ, কে দেয় কিরণ ?.
সে তো এই, যার হাতে আছে তোমার আমার জীবন মরণ।.
আজ বালিকার অভিমান, বালকের দুষ্টমি-.
আজ দম্পত্তির বন্ধনে কেনো ঘুণ ধরা তিক্ততা ?.
কেনো অভিশপ্ত সংশয়, কেনো পিতা পুত্রের শত্রুতা?.
হয়তো বলো নগ্ন হয়েছো নয়তো বলো অসূর ছেপেছে গাঢ়ে।.
তুমি নির্বাক নও, অবাক হও, দেখো চোখ খোলে।.
চলো পথের খোজে, যে পথের সন্ধান দিয়েছেন মোহাম্মদ ( সাঃ) নবী।.
যিনি দিয়েছেন চিরসত্যের পথ খোলি-.
দ্বীনের মশালে, দুরুদ জিকিরে কাটে যেন দিনগুলি।.
তুমি শিক্ষিতা, তুমি মহাশক্তির বাণীবাহক, সেবক।.
তুমি দেখাও পথ, জ্বালো মশাল, ডাকো মহাজনের দলে।.
তুমি বীর, তুমি দিগন্তেরর পথিক দক্ষ কাণ্ডারী।.
তুমি জেগে থাকলে সাম্পান যাবে না রসাতল।.
আজ হাক ছেদ করে বাংলার আকাশ পাড়ি দেয়।.
তেহরান পেরিয়ে ওয়াশিংটনে পৌছে সীমার জাল ছিন্ন করে।.
উত্তর দক্ষিন মেরু নিমিষে পাড়ি দেয়।.
তুমি শুনতে কী পাও, জমিনে মাথা কি লাগাও?.
প্রাণহীন মানবতা যদি আলোকবর্ষ পাড়ি দেয়।.
তুমি দায়হীন নয়, তুমি মুক্ত নয় মামার কারাগার থেকে।.
আকাশ পাতালের অভিশাপ বেষ্টিত তুমি-.
তোমার মুক্তি নেই আমার বাহু থেকে।.
.
( পর্ব ১৪).
রাতের কোয়াশা ফুটায় টিন ভিজে আমার মুখে পড়ে।.
পড়ে কপালে, ও যেনো রহমত।.
আমি তেমনি লেপ্টে আছি অভুক্তের ক্ষিদায়।.
বড্ড বর্ষণে ভিজে ভিজিয়ে দেবো অগ্নিদ্বগ্ধের গা।.
আমার কী ছিল সম্মান? ছিলো না এক বিন্দু।.
আমার কী ছিল মান, যেন যাবে জল হয়ে?.
আমি তো নেংটো ছিলাম, অপমান গেছে গা স'য়ে।.
আছি বাধা আছি, সাত পাকের গিট্টে।.
হিমালয়ের বুকে আমি নগ্ন হাটি তোমার জন্যে।.
পঙ্কিরাজের পিঠে চাবুক কষি নিমিষে পৌছাতে।.
ওদের বলি তুমি লুটের সম্পদ নও।.
তোমার কপালে সিঁদুর দেবো যদি দুঃখ সও।.
তুমি কী ভয় করো আঁধার, তুমি কি দেখনি-.
মরুতে প্রাণ পেয়েছে খজ্জুর, তৃণলতা।.
উঠেছে সত্যের আহবান, ধরা হয়েছে জীবন্ত।.
নিভেছে গিরি, প্রেম এসেছে সবার ঘরে ঘরে।.
.
( পর্ব ১৫).
তোমার দেহ আছে বলে হৃদয়হীন বলব না।.
হয়তো ঘুমিয়ে আছে তোমার মন, করেছে অভিমান।.
তিল পরিমান করিনি চ্যুতি কেনো মুখ ফিরানোর ভান-.
তুমি শুনতে কী পাও আত্মার গোঙানী ?.
কান পেতে শুনো বুকের ভেতর আজ ধুক-ধুক।.
বালাই হাওরের কান্না, চোখ খোলে দেখো।.
দেখো মোর বিস্মৃত অবয়ব, ডাকছে বুক-.
তোমার বাহুতে মাথা রাখার উচ্ছ্বাসে।.
আমি জানি তুমি নষ্টা নও, তুমি ভ্রষ্টা নও।.
জানি তুমি নির্দয় নও, জানি দ্বগ্ধা নও।.
তুমি বিনেসুতোর মালা, তুমি শীতার্থের চাদর।.
তুমিই করো জগতে সবচেয়ে আদর।.
কেনো মনে মরিচিকার জং, হতাশা শুধু?.
একবার বলো, নইলে শতবার বলো।.
চিৎকার দাও আমি হবো অভাবীর বধু।.
তুমি মানবতার গান গাও বন্ধু বলে।.
.
( পর্ব ১৬).
ভয়ের কবর আর লজ্জার দাফন মুড়িয়ে বেরিয়ে এসো।.
আমার হাতের আঙ্গুলের মাথায় দেখো কিরণ।.
দেখো বুধ, বৃহঃস্পতি, শুক্র পেরিয়ে আলোকবর্ষ ছুঁয়েছে মোর ইশারা।.
তোমাকে স্বপ্নলোকে নিয়ে যাবো বলে।.
বিশ্বাস করো আমি তোমার ভার বইছি।.
দাড়িয়ে আছি উদ্ভট মাটিহীন শুন্যতায়।.
তোমার ডাকে মেঘ হবো, হবো হাওয়া।.
তুমি সাথী বলেই এ গান আমার গাওয়া।.
তুমি কী বলতে পারো আমার চালহীন হাঁড়িতে কেনো উত্থাপ?.
তুমি কী বলতে পারো আউলা চুলে কেনো হাটি?.
মনপুরার নির্জনে কেনো করি ধোয়াপান?.
তুমি আসবে বলে, তুমি হাত ধরবে বলে।.
তুমি দেখে যাও মা দিয়েছে আঁড়ি, ভাই দিয়েছে তাড়ি।.
তুমি দেখে যাও বেকারের গলায় জুতোর হার।.
পাড়া পড়শীর অগণিত মার, কেউ নেই পাশে।.
তোমার নাম নিয়েছি বলেই পাগল ভেবে হাসে।.
তবো খাই বিষ তোমার নামের ধরে নেশা।.
তবো সই বেত্রাঘাত, জনতার অপবাদ।.
সেই যাবো সয়ে, মরছি না ভয়ে।.
তুমি খুশি হলে এ কীর্তন লক্ষবছর যাবে রয়ে।.
.
( পর্ব ১৭).
আলাদীনের প্রদীপ হলে আমি বানাতাম মহল-.
দ্বি-প্রহরে সাইরেনের আওয়াজে ভাঙতো না ঘুম।.
বেরিয়ে যেতাম আবে হায়াতের খোজে-.
সুখের ফ্রেমে বাসরের গল্প হতো রচনা।.
ভিক্টোরিয়ার দেশে যাবার তাড়া বনবাসে দিতাম।.
কাঁচের আয়নায় সাজাইতাম বিশ্ব।.
দাওয়া দিতাম মহাব্যধির ভাণ্ডার করে নিঃস্ব।.
চলো বহুদূর তারকার সন্নিকটে।.
মলমহীন ক্ষত, নিরাময় হতো আমার থাকতো চাল্-.
অভাবী বলে কেউ দিতো না গাল্।.
কেমন দানব বসেছে মাথায়, নিঃশ্বাসে দিচ্ছে চাপ-.
আমিও ঐ দানবকে করব না কখনো মাপ।.
অভিশাপ আজ উড়িয়ে নিচ্ছে তালপাতার বেঁড়া।.
নিচ্ছে গায়ের বসন, করছে পালাগান।.
হে মালিক থামাও ঝড়, থামাও তুফান-.
আমাকে একটু সুখ দাও শুনো আহবান।.
.
( পর্ব ১৮).
মায়াজালে আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন তোমাকে নিয়ে।.
ছয়ত্রিশে আজ পা দেওয়া হল বন্ধু শুভকাম্য করেছে-.
আমার হৃদপিন্ডে পড়েছে আরেকটি দাগ।.
সোনার ফ্রেমে ধরে রাখতে পারিনি দিনগুলো কি অনুতাপ.
আজ বন্ধু নেই, আজ সপ্তাহ পেরুলে নেই ফোন।.
মাস কেটে যায়, যাবে কী বছর চিটিহীন?.
স্বার্থ ফুরালে কেটে পড়া এটাতো অভ্যাসে নেই আমার।.
তুমিও কী পাশ থেকে লাথি মেরে নর্দমায় ফেললে।.
যন্ত্রনায় আজ চিৎকার আসে না, স্রোত শুকিয়েছে চোখের।.
একের পর এক দিনগুলি হয়ে আসছে দূঃখের।.
তবে অভিযোগ নেই, নেই বিচার কারো কাছে-.
তোমাকে মুক্ত করে দিয়েছি বুকে পাথর বেঁধে।.
আমি রেললাইনে দাড়ালে হুইসেল শুনি না।.
আমি ঘর ফিরতে চিনি না রাস্তা, বুঝিনা দিনরাতের তফাৎ।.
পানি খুজলে যা দেয় তাই করি পান-.
হেলিয়ে দুলিয়ে ধরি তোমাকে খোজার গান।.
বলি দ্বীন দুঃখীনির বন্ধুরে কেনো দুইদিনের পিরিতি বাড়াইলে।.
বলি ' কোনবা দেশে রইলারে দয়াল চাঁন।.
তোমার উত্তর বলে বাতাস, বলে প্রতিধ্বনি-.
তুমি আছো বালাগঞ্জের ঘরপুর নয় আলাপুর।.
.
( পর্ব ১৯).
আজ ডাইরী বলে লিখার স্থান শেষ।.
আজ পত্রিকা বলে ছাপা যাবে না কলাম।.
আজ টিভি বলে দেখানো যাবে না ছায়াচিত্র।.
কেনো, কেনো, কেনো, তুমি হাত ধরনি বলে আমার।.
বসন্তের কোকিল সূর হারিয়েছে খরার তীব্রতায়।.
হাসনার খুসবো শুকে না নিশাচর।.
শাপলা ফুটে না ক্ষোভে, বাজেনা রাখালের বাশি।.
কেনো, কেনো, কেনো, তোমার দেখেনি বলে হাসি।.
কী ছিল অপরাধ, কী ছিলো ক্রটি।.
কেনো মরছে মন, ইচ্ছা হয়না মুখে পুরতে রুটি।.
কেনো সুরমার নব্যতা হয় ম্লান, বর্ষায় নাই জল।.
তোমার নিক্ষিপ্ত পাথর ছুড়ায় নৌকা রসাতল।.
বেদনার নীল রংয়ে সাঁতারে মাঝি নিরুপায়।.
আজ প্রাণ যায়, প্রাণ যায় তোমার বিনে-.
আমারই ক্রয়ে বিষের পেয়ালা আমায় ধংশন করে।.
আমার মালায় করব বরণ যদি এসো ফিরে।.
.
( পর্ব ২০).
মানিব্যাগের ভাঁজে আজ তোমার দেখা পেলাম।.
অনেকদিন হলো কতো যতনে রেখেছি তোমায়।.
তুমি দাড়িয়েছো আজ সন্ধ্যাবেলায়।.
দুটি ঠোট চেপে চোখে চোখে কিছু বলছো যেন।.
অপলক চাহনী আর বাকহীন দাড়ানো-.
আমাকে রাগিয়ে তোলে, বুকের ভিতর হাতুড়ি পেটায়।.
এযেন শেষ দেখার মত দেখা, হয়তো আর না।.
জ্বালিয়ে ছাই করে দেব ছবিটি নয়তো মুখ খোলো।.
কলম থেমে যাবে, ভোরে আর যাব না টমেটোর বাগানে।.
আর যাব না দু-পাই পকেটে সঞ্চয় করার মঞ্চে।.
আমার ডেচকী ভর্তি ভাতের কিংবা ফেঁনের নেই প্রয়োজন।.
গলা ঠিপে শ্বাস বন্ধ করে ক্লান্ত হবো তুমি ঘুরে দাঁড়ালে।.
হটাৎ তুমি এক হাত বাড়িয়ে আমাকে তরবারী নিতে বলো।.
বলো আমাকে হত্যা কর নয়তো তোমাকে করো শেষ।.
আমি তোমাকে জনমভর কান্না দিলাম উপহার।.
তুমি প্রস্থান করো নবজীবনে, আমাকে মুক্ত করো।.
আবার ঘুমন্তগিরির উৎপাত বেড়ে গেলো।.
কাঁপছে আকাশ পাতাল, প্রচন্ড গরম হলো অক্সিজেন।.
মস্তিস্কে রক্তকরণ দেখে তুমি দানবের মতো হাসলে।.
মুখে ভেংচি কেটে ফিরলে।.
আমি হাসপাতালে চেতনা পেলাম নার্সের নরম ছোঁয়ায়।.
.
( পর্ব ২১).
কতদিন কেটেছে সেবিকার সেবায় মুখে দাওয়াই গিলে।.
কতটি সূর্য্যাস্থ গেছে তুমিহীন একা গুনে রাখিনি।.
যেন ভুলে গেছি অতীতের সব কথা সব গল্প।.
আজ মনে নেই, শুধু কি যেনো হারিয়েছে, হারিয়ে গেছে।.
ডাইরীর পাতা উল্টালেই দেখি কি যেন লিখা আছে।.
পুরনো মোবাইল ইনবক্স আজ শুন্য, যেন লাগামহীন আকাশ।.
বিকট বজ্রপাতে আজ ঘুমজাগা হয়না।.
আমার কেউ নেই বলে, তবে কে ছিল আমার।.
সূর্য্যদয় হলেই ভীড়ভীড় করে মুখ থেকে বের হয় কথা।.
বড় ভাগনীটি বলে মামা কার কথা বলো? নাজমীন কে?.
কোনো উত্তর নেই আমার, বলি জানি না মা।.
ওকে মা বলি ওকে ডাকি পরশমনি মাহবুবা।.
নুরুল, পলাশ, নিপু আমার ধার ঘেষে না-.
আমি আজ বনবাসে, ইন্দ্রজালের ওপ্রান্তে।.
এজীবনের শেষপ্রান্তে আরেকটি জীবনের কাছাকাছি।.
জানাই হাত নেড়ে গুডবাই খিড়কী বন্ধ করে।.
যদি আবার জন্ম হয় তুমি দয়া করো প্রভু।.
আমাকে করো মাপ যত করছি পাপ।.
ফিরিয়ে দিও এই মমতা ফিরিয়ে দিও এ সিংহাসন।.
দয়াময় হয়ে দিও গো তোমার পাশে বসার আসন।।. .
ডে-নাইট-নিউজ / মোহাম্মদ সায়েস্তা মিয়া
আপনার মতামত লিখুন: